আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসরের শিরোপা জিতে ২৭ বছরের অপেক্ষার ইতি টানে দক্ষিণ আফ্রিকা। গতকাল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারায় প্রোটিয়ারা। ফলে ১৯৯৮ সালের পর আইসিসির কোন ইভেন্টের শিরোপা জয়ের স্বাদ পায় তারা।
দীর্ঘ ২৭ বছর আইসিসির কোন শিরোপা জিততে না পারায়, দক্ষিণ আফ্রিকার নামের সাথে ‘চোকার্স’ শব্দটা ট্যাগ হয়ে গিয়েছিল। তাই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের চতুর্থ দিন (শিরোপা জয়ের দিন) সকালে ‘চোকার্স’ বলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্লেজিং করেছিল অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। এমনটা জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা।
তিনি বলেন, ‘চতুর্থ দিন সকালে আমাদের ‘চোকার্স’ বলা হয়েছে। তাদের একজন বলেছিল, আমরা ৬০ রানের মধ্যে শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যেতে পারি। আমি এমন কথা স্পষ্ট শুনেছি।’
দক্ষিণ আফ্রিকার ফাইনালে উঠা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। কারণ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মত দলের বিপক্ষে খেলতে হয়নি প্রোটিয়াদের। দেশের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা তিন সিরিজ খেলেছে ভারত-পাকিস্তান ও শ্রীলংকার বিপক্ষে। এছাড়া দেশের বাইরে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছে প্রোটিয়ারা। মোট ১২টি ম্যাচ খেলে ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখানে ১৯ ম্যাচ খেলতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। ভারতও ১৯ ম্যাচ খেলেছে। সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড।
সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বাভুমা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা একটা দল হিসেবেই ফাইনালে উঠেছি। আমরা যেভাবে ফাইনালে এসেছি এটি নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে, আমরা কম ম্যাচ খেলেছি এবং দুর্বল দলগুলোর বিপক্ষে খেলেছি। কিন্তু ফাইনালে পারফরমেন্সের পর আশা করছি সবার ধারণা পাল্টে যাবে। বহু বছর পর আমরা ফাইনাল জিতেছি। এটা আমাদের জন্য বিশেষ অর্জন।’
ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ছুঁড়ে দেওয়া ২৮২ রানের টার্গেট, ওপেনার আইডেন মার্করামের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে স্পর্শ করে ঐতিহাসিক জয়ের স্বাদ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসে শূন্য হাতে ফিরলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৬ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন মার্করাম। তার ব্যাটিং নৈপুন্যে ‘চোকার্স’ তকমাটা মুছতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই ভবিষ্যতে আর ‘চোকার্স’ শব্দটা শুনতে চান না মার্করাম।
তিনি বলেন, ‘অতীতে আমাদের নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এখন আমরা সমালোচনার জবাব দিয়েছি। ‘চোকার্স’ কথাটা আর না শুনলেই ভালো হবে। এই তকমা ঝেড়ে ফেলা এই দলের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।’