গত শুক্রবার মার্কিন গোয়েন্দারা সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যে আমরা যা জানতাম, তার বেশির ভাগের সত্যতাই প্রতিবেদনটি নিশ্চিত করেছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে তাঁকে হত্যা করা হয়। খাসোগিকে আটক অথবা হত্যার এ অপারেশন সৌদি যুবরাজ ও রাজ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুমোদনেই হয়েছিল। কট্টর এক সমালোচকের হাত থেকে মুক্তি পেতে আর তাঁর হবু সমালোচকদের ভয় দেখাতেই খাসোগির মৃত্যু চেয়েছিলেন এমবিএস—এ নামেই বেশি পরিচিত সালমান।
অকাট্য প্রমাণ দেওয়া হয়তো অসম্ভব, তবে খাসোগি হত্যায় সর্বত্রই এমবিএসের ছাপ আছে। অপারেশনটা যে যুবরাজের খুব কাছের লোকেরাই করেছেন, তার যথেষ্ট প্রমাণ আছে। তার চেয়ে সরল সত্য হচ্ছে এমবিএসের অনুমোদন ছাড়া সৌদি আরবে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বড় কিছু ঘটেই না।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ব্যাপারটা থেকে তখন চোখ সরিয়ে রেখেছিল। তা ছাড়া এমবিএসের সঙ্গে যেকোনো ধরনের বিরোধ ট্রাম্প এড়িয়ে চলতে চেয়েছেন। কারণ, এমবিএসের ইরানবিরোধী নীতি সমাদৃত হয়েছে। মার্কিন অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে যুদ্ধ উপকরণ কেনার ব্যাপারে সৌদি সরকারের সদিচ্ছার পেছনেও তাঁকে নিয়ামক হিসেবে দেখা হয়।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন অবশ্য অন্য রকম ভাবে। এর মধ্যেই তারা ইয়েমেনে সৌদি সামরিক অভিযান থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছে। তাদের বিশ্বনীতিতেও মানবাধিকার একটা প্রধান জায়গা করে নিচ্ছে। সরাসরি এমবিএসের সঙ্গে যোগাযোগ না করে বাইডেন যে অসুস্থ রাজা সালমানের সঙ্গে কথা বলেছেন, এ তথ্যও যুবরাজের সঙ্গে সম্পর্ক আর রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্ক—এ দুটিকে যে তিনি ফারাক করতে চাইছেন, তার দিকে ইঙ্গিত করে।