ফাইল ফটো
জনসম্পৃক্ততায় কল্যাণমুখী বাজেট চাই- প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে অংশীদারিত্ব এবং বাজেট ভাবনা বিষয়ক এক আলোচনায় আলোচকবৃন্দ এ দাবি তুলেন ধরেন।
এএলআরডি-র আয়োজনে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বরিশাল ও খুলনা বিভাগের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এতে স্পিড ট্রাস্টের মিশন চীফ শামসুল ইসলাম দীপুর সভাপতিত্বে এএলআরডি’র পক্ষ থেকে একটি উপস্থাপনা দেন কর্মসূচি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
এএলআরডি-র উপনির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি-র সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম, বরিশাল বিএম কলেজের সাবেক অধ্যাপক জনাব গাজী জাহিদ, কৃষক মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক লাইলি বেগম, বিএফএফ-এর নির্বাহী প্রধান আ.ন.ম ফজলুল হাদী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গীতা রানী কুণ্ডু, সামস-এর নির্বাহী প্রধান কৃ্ষ্ণপদ মুণ্ডা এবং বরিশাল কারিতাসের এম মং মিয়া।
প্রবন্ধ উপস্থাপক এ সময় তার উপস্থাপনায় ক্ষুদ্র পারিবারিক কৃষক, গ্রামীণ নারী কৃষক, প্রান্তিক ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জন্য খাত ও উপখাত অনুযায়ি বাজেট বরাদ্দের জন্য জোর দেন। এ সময় তিনি খাত অনুযায়ি বিশটির অধিক সুপারিশমালা তুলে ধরেন।
অধ্যাপক গাজী জাহিদ বলেন, দিন দিন বাজেট অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। সে জন্য বাজেট ক্যাটাগরিক্যালী হতে হবে। তাহলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী তাদের জন্য বরাদ্দ জানতে পারবেন এবং সুবিধা পাবেন। তাই জনগণের অংশগ্রহণে বাজেট করা হলে ভালো হতো। এই বাজেটকে কল্যাণমুখী বাজেট বলা যায় না। তিনি কৃষকদের জন্য আলাদাভাবে বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে এবং আগামী বাজেটে জন অংশগ্রহণ থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, সোশাল সেফটিনেট প্রোগ্রোমের ভলিউম বাড়ানোর দাবি জানান। এর মধ্যে কাজের বিনিময়ে খাদ্য, হিউমেনেটিরিয়ান রিলিফ- ধর্মীয় রিলিফ, মহান মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা , পেনশনের টাকাও এই কার্যক্রমের আওতায়। তিনি মনে করেন এইগুলো আলাদা করা হলে কমপ্লেক্ষিটি কমে যায়। বাজেটে সুরক্ষার পরিমান বাড়াতে হলে পেনশনের টাকাও আলাদা করতে হবে ।
এম মং মিয়া বলেন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য বাজেট বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়। সমতলে আদিবাসীদের আমাদের পৃথক আদিবাসী ভূমি কমিশন । আদিবাসী নারীদের প্রনোদনা প্যাকেজ দেয়া । আদিবাসী সংস্কৃতির গবেষণা হওয়া দরকার। তার বাজেট বরাদ্দ থাকা দরকার। বাজেটে আমাদের বাজেটের সংখ্যা জানতে চাই ।
তিনি আশা করেন, আদিবাসীদের জন্য যৌক্তিক বাজেট রবাদ্দ থাকবে আগামী বাজেটে।
লাইলী বেগম বলেন, বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে নারীকে পিছিয়ে রাখা হয়। আমরা কৃষি কাজ করি কিন্তু আমরা কৃষক নিই। ফলে আমরা কোন প্রশিক্ষণ বা অন্যান্য সেবা পাইনা। ফসলের মূল্য পাই না। কৃষি ও নারী কুষকের জন্য সরবারের আলাদা কাজেট থাকতে হবে।
কৃষ্ণপদ মুন্ডা বলেন, প্রতিবছরই কোনো কোনো দুর্যোগের কবলে পড়তে হয়। ফলে অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাই এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখতে হবে। নদীভাঙ্গা ও লবণ পানির এলাকায় সুপেয় পানীর ব্যবস্থা বাজেটে রাখতে হবে। অঞ্চলভিত্তিক অবস্থা বিবেচনা করে চাহিদা নিরুপনের মাধ্যমে বাজেট বরাদ্দ দেয়া।
আ.ন.ম.ফজলুল হাদি সাব্বির কৃষিপণ্যের মূল্য কম থাকায় বাণিজ্যিকভাবে জমি বিক্রয় হয়ে যাচ্ছে। যারা বর্গাচাষী সমস্য তৈরী হচ্ছে । কৃষকদের জন্য প্রনোদনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন । প্রান্তিক কৃষকদের টার্গেট করে বাজেট করতে হবে।
সভাপতি শামসুল ইসলাম দিপু, বলেন, বাজেটের ভলিউম বড় হয়েছে কিন্তু দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা বেড়েছে। জবাবদিহিতার অভাব দেখা যাচ্ছে। বাজেটকে জনবান্ধব করতে হবে। দেশে কর্মসংস্থান কমেছে; বেকারত্ব বেড়েছে। রেমিটেন্স যোদ্ধারা দেশে ফিরে বেকার হয়ে পড়েছে। বাজেট কিভাবে এই জায়গাগুলোতে সুরক্ষা দেবে তা ভাবতে হবে। বাজেটকে জনবান্ধব ও গণবান্ধব করতে পারিনি। কৃষিপণ্য উৎপন্ন হচ্ছে। আমাদের কর্মসংস্থান কমেছে। বেকারত্ব বেড়েছে। এছাড়া মুক্ত আলোচনায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকসহ কেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।