ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে অনশনে বসা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুইজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

তারা হলেন- সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৬ ব্যাচের জাহিদ হাসান জয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহিদুল ইসলাম মাহিদ।

রোববার (১৭ আগস্ট) রাত পৌনে ১২টার দিকে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। সহপাঠীরা তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করছেন। চিকিৎসক এনে তাদের স্যালাইন দেয়া হয়েছে।

এদিকে রাত ১২টায় শিক্ষার্থীদের দেখতে আসেন ভিসি শওকাত আলীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ সময় ছাত্র উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীরা অনশনে বসায় ভিসিও এখন পর্যন্ত কিছু খাননি। এ কারণে তার প্রেসার লো হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের রেখে তিনি বাসায় যেতে চাইছেন না। সেজন্য শিক্ষার্থীদের কাছে এসেছেন। এ সময় তারা অনশন ভাঙ্গার আহ্বান জানান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এ সময় ভিসি এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকেই রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদযুক্ত করে নির্বাচনের রোড ম্যাপ দেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন চালিয়ে আসছি আমরা। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন এবং সরকার তাতে কর্ণপাত করেন। ১৭ দিন আগে একটি কমিটি দেয়া হলেও কমিটি মিটিংই করতে পারেনি। সুমন বলেন, সকাল থেকে আমরণ অনশনে থাকা আমার দুই ভাই গুরুতর অসুস্থ হয়েছে। তাদের জন্য চিকিৎসকের ব্যবস্থা করতেও ৪০ মিনিট দেরি করেছে প্রশাসন। আমাদের ভাইয়ের কিছু হলে এই রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই নতুন বিপ্লব শুরু হবে।

অন্যদিকে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী খোকন ইসলাম বলেন, ‘রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ আইনই নাই। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৭০ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এর থেকে আর কোন প্রতারণা হতে পারে না।’

ছাত্র সংসদ নির্বাচনে রোডম্যাপ ঘোষণা না করা পর্যন্ত আবরণ অনশন চলবে বলে জানিয়েছেন এই শিক্ষার্থী।

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিক বলেন, গেল এক বছরে তামাশা করেছে প্রশাসন এবং সরকার। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি ছিল ৯ দফায়ও। কিন্তু লেজুরভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি দিয়ে রেখে কায়দায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার অসৎ উদ্দেশ্যেই সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিচ্ছে না। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমরা আমরণ অনশনে গেলাম। আমরা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করব। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

এ সময়ে অসুস্থ হওয়া দুই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর উদ্যোগ নিলে তারও প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। পরে ৪০ মিনিট পর চিকিৎসক এনে অসুস্থ দুই শিক্ষার্থীকে স্যালাইন লাগানো হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, এই অসুস্থ হওয়া কোনো শিক্ষার্থী বাইরে চিকিৎসা নিবে না।

শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভাইস চ্যান্সেরর ড. শওকত আলী বলেন, "আজকে সারাদিন শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে বসায় আমিও লাঞ্চ করিনি। এখন পর্যন্ত বাসায় যায়নি। শিক্ষার্থীদের রেখে আমি কিভাবে বাসায় গিয়ে ঘুমাবো।

তিনি বলেন, আমি ঢাকায় কথা বলেছি। সাতজন কমিটিতে আছেন। আমাকে বলা হয়েছে ১০ দিনের মধ্যে নির্ভুলভাবে আইটি সঠিক করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে আমিও একমত। আমি নিজেই সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সংযুক্ত করার জন্য কমিটি করে চিঠি দিয়েছি। সেটি আমলে নিয়ে লিগালভেটিংয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারি হলেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করব।

বেশি বলেন, সংসদ না থাকলেও কিভাবে খাতিদের কাছ থেকে ফি আদায় করা হয়েছে সেটি এসি বাদী আমলের প্রশাসন উত্তর দিতে পারবেন। আমি ভিসি হওয়ার পর যে টাকা আদায় করা হয়েছে এটি আমি আলাদা একাউন্টে রেখে দিয়েছি।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews