আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাড়ি দিয়েছেন নয়টা বছর। একসময়ের সম্ভাবনা থেকে আজ দলের অধিনায়ক। মেহেদী মিরাজ এই সময়টায় দেখেছেন নানা বাঁক বদল, সাক্ষী হয়েছেন অনেক কিছুর, অভিজ্ঞতার ঝুলিও বেশ ভারী।
বাংলাদেশ দলের সোনালী সময়টায় ছিলেন তিনি। পেয়েছেন বাংলার ক্রিকেটের পঞ্চপাণ্ডবকে, খেলেছেন তাদের নেতৃত্বেও। শুরুটা ২০১৬-তে মুশফিকের অধীনে। ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টিতে আসেন মাশরাফীর হাত ধরে।
এরপর নানা সময়ে খেলেছেন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অধীনে। এবার মিরাজের নিজের কাঁধে উঠেছে নেতৃত্বের ভার। পূর্ণ মেয়াদে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পেয়েছেন তিনি।
নতুন অধিনায়ক নেতৃত্বের অনুপ্রেরণা খুঁজছেন সেই সাকিব-মাশরাফীদের থেকেই। শুক্রবার প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই কৃতজ্ঞতা জানালেন ‘বড় ভাইদের।’ জানালেন তাদের থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতার কথা।
মিরাজ বলেন, ‘ওয়ানডে দলে আমার অভিষেক হয় মাশরাফী ভাইয়ের অধীনে। আমি অনেক অধিনায়ক পেয়েছি। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। যা আমি আমার অধিনায়কত্বের সময়ে কাজে লাগাতে পারব।’
সব সংস্করণ মিলিয়ে মিরাজ সবচেয়ে বেশি ৪১ ম্যাচ খেলেছেন সাকিব আল হাসানের অধীনে। মাশরাফীর অধীনে ৩৮, আর তামিমের নেতৃত্বে খেলেছেন ৩৫ ম্যাচ। তাছাড়া খেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্তের অধীনেও।
তাদের থেকে মিরাজ শিখেছেন। তিনি বলেন, ‘তারা যেভাবে সিদ্ধান্ত নিতেন, সে জিনিসগুলো অনুসরণ করেছি। শিখেছি কঠিন পরিস্থিতিতে কিভাবে শক্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তবে তা অনেক সময় পক্ষে আসবে, অনেক সময় আসবে না। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত কিভাবে নিচ্ছি, সেটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ।’
অধিনায়ক হিসেবে মিরাজ যখন দায়িত্ব নিলেন, ততদিনে ওয়ানডেতে খেলে ফেলেছেন ১০৫টি ম্যাচ। অভিজ্ঞতার ঝুলি বেশ সমৃদ্ধ। তবে নিজের নেতৃত্বে কিভাবে দলের বাইকে আগলে রাখবেন সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
এখানেও অবশ্য পুরোনো অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর কথা বলেছেন মিরাজ, ‘আমরা যখন প্রথমে ঢুকেছিলাম, বড় ভাইয়েরা আমাদেরকে যেভাবে সাহায্য করেছে, চেষ্টা করব ওভাবে সাহায্য করার জন্য। ড্রেসিংরুম ওভাবে রাখার জন্য। যেন যেই ড্রেসিংরুমে থাকে না কেন সে যেন অনুভব না করে আমি একা, আমার সাথে সবাই আছে। আর যারা জুনিয়র আছে, তাদেরকে অবশ্যই পারফর্ম করতে হবে ওই পরামর্শগুলো দেবো।’
এদিকে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন ছিল সাকিব আল হাসানকে নিয়েও। পঞ্চপাণ্ডবদের মাঝে কেবল তিনিই এখনো ওয়ানডে থেকে অবসর নেননি। রাজনৈতিক কারণে অবশ্য খেলায়ও ফেরা হচ্ছে না তার। আছেন দেশের বাইরে।
তবে সম্প্রতি এই মেহেদী মিরাজের সাথেই একসাথে একই দলে খেলেছেন পাকিস্তান সুপার লিগে। তখন দেখা হয়েছে তাদের, কথাও হয়েছে অনেক। সংবাদ সম্মেলনে এসেও যা অপকটে স্বীকার করলেন মিরাজ। বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। মন থেকে চান দেশের ক্রিকেট এগিয়ে যাক। যারা নতুন, উঠতি খেলোয়াড়, তারা যেন ভালো ক্রিকেট খেলে। বলেছেন, অবশ্যই দল হিসেবে একসাথে খেলতে হবে। কারণ যখন সবাই পারফর্ম করে, তখন ফল পাওয়া শুরু হয়।’