মাইটোকন্ড্রিয়া। মানবদেহের কোষে কোষে অক্সিজেন ব্যবহার করে খাবার থেকে শক্তি উৎপাদন করে। একে তাই কোষের ‘শক্তিঘর’ও বলা হয়। কিন্তু সেই মাইটোকনড্রিয়াই পারে মানুষের বুড়ো হতে থাকা কোষকে পুনরুজ্জীবিত করতে। টেক্সাসের এক গবেষক দল এমনই এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে পেরেছে।
এই আবিষ্কারকে জীববিজ্ঞানের এক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার বলেই মনে করা হচ্ছে। কেননা কোষকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারলে মানুষের মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডের জন্য ‘ভিলেন’ যে বয়সজনিত অসুখগুলি আছে তাদের ‘বিষদাঁত’ ভাঙা সম্ভব হবে। কীভাবে এমনটা করতে পারলেন বিজ্ঞানীরা? তারা উদ্ভাবন করেছেন ‘ন্যানোফ্লাওয়ার’। নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এদের আকৃতি ফুলের মতো। তবে এরা একেবারেই আণুবীক্ষণিক কণা। এই কণাগুলি কোষে ক্ষতিকারক অক্সিজেন অণু কমাতে সাহায্য করে। মানব স্টেম কোষে নতুন মাইটোকন্ড্রিয়া উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে এমন জিনগুলিকে সক্রিয় করে তোলে।
আর এই উদ্দীপিত স্টেম কোষগুলি সুস্থ মাইটোকন্ড্রিয়াগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলিতে স্থানান্তরিত করতে পারে। ফলে তারা ফের কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে। তবে একে ‘রিচার্জে’র চেয়ে ‘ব্যাটারি প্রতিস্থাপন’-এর সঙ্গেই তুলনা করা সঠিক হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অন্যতম গবেষক বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অখিলেশ গাহারওয়ার বলছেন, ”আমরা সুস্থ কোষকে এমন প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, যার ফলে তারা তাদের অতিরিক্ত ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত তথা দুর্বল কোষে স্থানান্তরিত করতে পারে। আর এর ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত তথা বুড়িয়ে যাওয়া কোষগুলিকে ফের নতুন করে কর্মক্ষম করে তুলতে পারব। আর সেটা পারব কোনও জিনগত পরিবর্তন না ঘটিয়ে কিংবা মাদক ব্যবহার না করে।”
বিজ্ঞানীদের আশা, হৃদরোগের চিকিৎসা কিংবা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উদ্ভাবন হিসেবে গণ্য হতে পারে এই নতুন আবিষ্কার।