ভাষা নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য দুই বাংলার ভাষার মধ্যে বিভাজনের রেখা টেনে বলেছেন, বাংলাদেশের বই আর পশ্চিমবঙ্গের পাঠ্যবই পড়লেই নাকি বুঝতে পারা যাবে, কোন বই সুবোধ সরকার লিখেছেন; আর কোন বই বাংলাদেশের শফিকুল ইসলাম লিখেছেন।
অথচ এটা কি সত্য নয় যে ভারতীয় বাঙালি ও বাংলাদেশের বাঙালি—উভয়ের মাতৃভাষা বাংলা। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী সব সংবিধান স্বীকৃত ভারতীয় ভাষা ভারতের রাষ্ট্রভাষা—হিন্দি রাষ্ট্রভাষা নয়। তাহলে বাংলাভাষীদের এত বিড়ম্বনা কেন সেখানে?
ভারতবর্ষে আরএসএস–বিজেপি মিলিতভাবে ভাষা নিয়ে যে নতুন রাজনৈতিক পরিমণ্ডল তৈরির চেষ্টা করছে, তার উদ্দেশ্য হচ্ছে হিন্দুধর্মের (হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্তানি) সঙ্গে হিন্দি ভাষার তথাকথিত অনিবার্যতা দেখিয়ে উত্তর ভারতীয় ফ্যাসিবাদী ক্ষমতাকাঠামোকে শক্তিশালী করা।
এ প্রকল্প দক্ষিণ ভারতে তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হলেও পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদের দুর্বলতায় এখানে বাংলার বিরুদ্ধে বাংলাকেই দাঁড় করানো হচ্ছে। এ কাজে বাংলা ভাষার বিবিধ আঞ্চলিক বাচনভঙ্গির (লিখিত ও কথ্য উভয়ই) ফাঁদে ফেলে ‘বাংলাদেশ’ ও ‘বিদেশি’ ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতীয় সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের একাধিক পুশ ইনের ঘটনা দেখেছি আমরা। অনেক ভারতীয় বাংলাভাষীকে জোরপূর্বক বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুশ ইন করতে ভাষাকে অন্যতম হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে।