বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে ২০০৪ সালের ২১ অগাস্টের এই হামলায় প্রাণ হারান আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভী রহমানসহ ২৪ জন। আহত হয়েছিলেন কয়েকশ মানুষ, যাদের অনেককে এখনও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে ওই হামলার ক্ষত।

ভয়াবহ এই হামলায় সম্পৃক্ততার দায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।

ওই হামলার ১৫ বছর পূর্তিতে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “প্রকৃত সত্য, প্রকৃত ঘটনা সবাই জানেন। এটা (২১ অগাস্টের ঘটনা) গভীর নীল নকশার অংশ, যে নীল নকশার সাথে ক্ষমতাসীনরা জড়িত কি না এটা আজকে সন্দেহ দেখা দিয়েছে, জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

“এটা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের নীল নকশার মাস্টার প্ল্যানকারী হচ্ছে তারাই যারা ক্ষমতাসীন- এটাই মানুষ মনে করে।”

এই মামলার ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ’ তদন্ত হয়নি দাবি করে রিজভী বলেন, “সামগ্রিক তদন্ত হওয়া এবং নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া- সেগুলোকে বাধা দিয়ে এবং একটার পর একটা যে ঘটনা আমরা অনেকবার তুলে ধরেছি যে, সম্পূরক চার্জশিট নিয়ে এসে তারেক রহমান সাহেবের নাম দেওয়া হয়েছে। তার আগে যে চার্জশিট দিয়েছিল তাদেরই আন্দোলনের ফসল সেখানে তারেক রহমান সাহেবের নাম ছিল না। জোর করে, পিটিয়ে, হাতের নখ তুলে যাদের দিয়ে (স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি) নাম দিয়েছেন তারা ক্ষমতায় এসে।”

রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলে তো ‘পাহাড়ের উপর দিয়ে নৌকা বইয়ে’ নিয়ে যাওয়া যায় মন্তব্য করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “তারা তো তাই করেছে। যদি সুশাসন থাকত, ন্যায়বিচার থাকত, আইনের শাসন থাকত তাহলে প্রকৃত অপরাধী যারা তাদেরই বিচার হত। পরিকল্পিত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং সেখানে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান সাহেবের নাম জড়ানো হয়েছে।”

আওয়ামী লীগের সমাবেশে ওই হামলায় ‘হতভম্ব’ হয়ে গিয়েছিলেন বলে জানান রুহুল কবির রিজভী।

হামলায় তাদের দল ও সরকারের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে তার পক্ষে যুক্তি দিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, “যে কোনো সরকারের আমলেই নানা কুচক্রী, নানা ধরনের ষড়যন্ত্রকারীরা ঘটনা ঘটাতে পারে। এই আওয়ামী লীগের আমলে পিলখানা হত্যাকাণ্ড হয়েছে না? তাহলে পিলখানা ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী, ২১ অগাস্টের ঘটনার জন্য যদি বিএনপি দায়ী হয়ে থাকে। আপনার নাইন ইলেভেন ঘটনা ঘটেছে আমেরিকাতে, টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে গেছে। কোথায় যারা সরকারে ছিল বিরোধী দল তো অভিযোগ করেনি যে, তাদের কারণে হয়েছে।

“এটা বিশ্বব্যাপী যে ধরনের হানাহানি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে- কখন কোথা থেকে কী হয়েছে- সেটা কে বলতে পারবে?”

আওয়ামী লীগই বিভাজন-বিভেদ ও সন্ত্রাসের রাজনীতি করেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, “এখন তো মনে হয় এই ঘটনা (২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা) তাদেরই পরিকল্পিত ছিল কি না সেটা আজকে জনমনে প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে।”

ওই হামলার সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ারও সম্পৃক্ততা ছিল বলে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “দেখুন এই যে বললাম, সমস্ত ক্ষমতা তাদের হাতের মুঠোয়। তারা তো যা-ইচ্ছা তাই করতে পারেন। প্রকৃত সত্য, প্রকৃত ঘটনা সবাই জানেন।

“এটা গভীর নীল নকশার অংশ, যে এই নীল নকশার সাথে তারাই (আওয়ামী লীগ) জড়িত কি না ক্ষমতাসীনরা-এটা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে, জনগণের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।”

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নজমুল হক নান্নু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মুনির হোসেন, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আবদুল খালেক, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews