আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির কথা বলে নিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাধ্য করানোর ‘মূল হোতাকে’ গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি-এর টিএইচবি (মানব পাচার প্রতিরোধ) শাখা। গ্রেফতার ওই ব্যক্তির নাম আলমগীর হোছাইন (৪০)।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে বনানী থানার একটি মামলায় শুক্রবার (১৩ জুন) আদালতে সোপর্দ করা হয়।

সিআইডি সদর দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান।

তিনি  জানান, এই চক্রের সদস্যরা রাশিয়ায় মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনে চকলেট ফ্যাক্টরি, ক্লিনার অথবা বাবুর্চির কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ জনকে প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব পাঠায়। সেখানে তাদের ওমরাহ হজ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেয়। সুলতান তাদের দাস হিসেবে রাশিয়ান সোলজারদের কাছে হস্তান্তর করে। সেখানে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাধ্য করে। এতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে ভিকটিমদের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয়। খাবার বন্ধ করে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের মানসিক শক্তি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরবর্তীতে ভিক্টিমরা বাধ্য হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

যুদ্ধে নাটোর সিংড়া থানার হুমায়ুন কবির নামক জনৈক ব্যক্তি নিহত এবং ঢাকা কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামক একজন গুরুতর আহত হয় বলে জানা যায়। উল্লিখিত ১০ জনের মধ্যে একজন ভিক্টিম নরসিংদীর পলাশ থানার বাসিন্দা মো. আকরাম হোসেন (২৪) প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ফিরে এসে তিনি অন্যান্য ভিকটিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। তার নিকট তথ্য পেয়ে যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী (ঝুমু আক্তার) বনানী থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্তকালীন সিআইডি জানতে পারে, একইভাবে ১০ জনের আরেকটি দল সৌদি আরবে অবস্থান করছে। রাশিয়া নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করানো বিষয়ে জানাজানি হওয়ায় তারা রাশিয়া যেতে অস্বীকার করেছে এবং তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই তারা সৌদি আরবে কোনও কাজ করতে পারছে না এবং দেশে ফিরতেও পারছে না।

উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার সময় মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য ফাবিহা জেরিন তামান্নাকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ফাবিহা জেরিন তামান্না ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের অংশীদার।

ভুক্তভোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে সিআইডি। একই সঙ্গে মানব পাচারের এই নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি নিবিড় তদন্ত এবং গ্রেফতার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews