রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বিএনপির বক্তব্য নির্ভুল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শনিবার রাতে শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিউত্তরে এ কথা বলেন।

এসময় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে তার (খালেদা জিয়া) দেওয়া বক্তব্যের কোনটি ‘ভুল’ বা ‘মিথ্যা’ তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান খালেদা জিয়া।

খালেদা বলেন, সেদিন রামপাল নিয়ে আমি বক্তব্য দিয়েছিলাম, উনাদের খুব গায়ে লেগেছে। গায়ে বেশি জ্বালা ধরেছে বলে আজকে (শনিবার) বক্তব্য দিয়েছে। কিন্তু উনি আগে বলুন, আমি যে বক্তব্য দিয়েছি তার কোনটা ভুল, আর কোনটা মিথ্যা।

খালেদা জিয়া বলেন, যিনি বা যে দল এটা করছে, এরা হলো রাষ্ট্রবিরোধী, তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তার জবাব হয়তো আজকে ক্ষমতায় থেকে দিতে হচ্ছে না। কিন্তু ক্ষমতার বাইরে গেলে ওদেরকে এর জবাব দিতে হবে।

গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া নিজের তথ্য-উপাত্তকে সমর্থন করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যদি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়, তাহলে সবচেয়ে বড় ক্ষতি দেশের। আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। সেখানে হিন্দু বলেন, আর মুসলমান বলেন, কেউ বসবাস করার অবস্থায় থাকবে না। সুন্দরবন জাতীয় সম্পদ, এটা বিএনপিরও, আওয়ামী লীগেরও না।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা তো বলি নাই যে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাই না। আমরা বলেছি, এখানে বন্ধ করতে হবে। আরও অনেক জায়গা আছে করার মতো। আমরা বারবার বলেছি, এই যে ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি, ভারতের বিভিন্ন জায়গায় তারা কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে চেয়েছে, কিন্তু প্রত্যেক জায়গায় বাধা পেয়েছে। জনগণ সেখানে প্রতিবাদ করেছে, পরিবেশ এবং মানুষের ক্ষতি হবে বলে। সেখানকার (ভারত) গণতান্ত্রিক সরকার মানুষের কথা চিন্তা করে সে প্রতিবাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। আর সেই জিনিস বাংলাদেশে করা হচ্ছে। এর প্রভাবে দক্ষিণের সব জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

খালেদা জিয়া বলেন আওয়ামী লীগ নিজের সব অপকর্মকে ঢাকার জন্য এখন শুরু হয়েছে জঙ্গি জঙ্গি। এই যে গুলশানের হলি আর্টিজানের কিন্তু তদন্ত-টদন্ত সেকরকম কিছু হয়নি। জনগণের কাছে এটা পরিষ্কার করেনি, কারা এর সঙ্গে জড়িত। এটা যেতে না যেতেই দেখা গেল কল্যাণপুর। সেটার ছবিও আপনারা দেখেছেন। সাত-আটটা গুলি করা হলো পেছন থেকে। সবাই মারা গেলে। এরা অল্পবয়সী শিক্ষিত ছেলে। বোঝাই যায়, যে এটা সাজানো ঘটনা।

এসময় নারায়ণগঞ্জসহ সম্প্রতি পুলিশি অভিযানে ‘জঙ্গি’ নিহতের ঘটনাকে ‘সাজানো নাটক’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। জঙ্গি ধরে ধরে হত্যা করে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

নারায়ণগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত জঙ্গিদের জীবিত ধরা হলো না কেন এমন প্রশ্ন তুলে খালেদা বলেন, ‘জঙ্গিবাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে ও তথ্য উদঘাটনের জন্য তাদের জীবিত ধরা প্রয়োজন ছিল, কেন তাদের হত্যা করা হলো?’

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আমাদের সময় শায়খ আবদুর রহমানকে ধরতে অনেক সময় ও কষ্ট হয়েছিল। এরপরও আমরা তাকে ধরেছিলাম এবং বিচারের মাধ্যমে তাদের শাস্তি কার্যকর করা হয়েছিল। কিন্তু এ সরকার কাউকে ধরছে না, তারা হত্যা করছে।’

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, রামকৃষ্ণ মিশনের মৃদুল মহারাজ, গুলশান পূজামণ্ডপের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু দাস, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাংবাদিক সঞ্জীব চৌধুরী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু প্রমুখ।

এমএম/এআরএস



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews