চেনা ও অচেনা মাঠে রিয়াদ

ঠিক এক যুগ ধরে এই স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। শুধু আন্তর্জাতিক ম্যাচই খেলেছেন এখানে ১০৮টি। কত দিন এখানে অনুশীলন করেছেন, বিনা কাজে ঘুরে বেড়িয়েছেন কিংবা ড্রেসিংরুমে বসে মজায় মেতেছেন; তার তো কোনো রেকর্ড নেই। নিজেই বলেন, এটা আমার বাড়ি। তারপরও গত শনিবার যখন স্টেডিয়ামে পা রাখলেন, একটু যেন অচেনা এক জগত্ মনে হলো। একগাল হেসে কাল বললেন, ‘মনে হচ্ছিল, চেনা চেনা লাগে তবু অচেনা।’

হ্যাঁ, মিরপুর স্টেডিয়াম খানিকটা অচেনাই হয়ে উঠেছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের কাছে। অবশেষে প্রায় সাড়ে চার মাস পর রিয়াদ এখানে আরো কয়েকজন জাতীয় ক্রিকেটারের মতো একক অনুশীলন শুরু করেছেন। এই সময়টা নিয়ে কথা বলতে বলতে বলছিলেন, বাড়িতে ফিরে আসার অনুভূতি হচ্ছে। তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এক সঙ্গে মেতে ওঠার অপেক্ষায় আছেন তিনি।

আগেও বলেছেন, গতকালও বললেন, ব্যাট-বলহীন এই সাড়ে চারটা মাস তার জীবনের দুঃসহতম সময় ছিল। বলছিলেন, ‘প্রথম প্রথম ভালোই লাগত। পরিবারের সঙ্গে বাড়তি একটু সময় কাটানো, বাসায় একটু বেশি সময় কাটানো। কিন্তু এক সময় অসহ্য হয়ে গেলো। আমার বাড়ি তো মিরপুর স্টেডিয়াম, আরেকটা পরিবার তো ক্রিকেটাররা। এদের ছেড়ে লম্বা সময় থাকাটা কষ্টের।’

অবশেষে সেই কষ্টটা একটু হলেও ঘুচেছে। শুরু হয়েছে একক অনুশীলন। আর প্রথম দিন এই অনুশীলনে আসার অনুভূতি বলতে গিয়ে খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন রিয়াদ, ‘প্রথম দিন এসে আমি একটানা স্টেডিয়ামের দিকে তাকিয়েছিলাম, ঘাস দেখছিলাম। এই বিল্ডিং, ঘাস, ড্রেসিংরুম; সব মিস করছিলাম। মনে হচ্ছিল, বন্দিদশা থেকে আবার বাড়ি ফিরে এসেছি। খুব আবেগী হয়ে পড়েছিলাম। এটা ঠিক যে, ইনডিভিজুয়াল এই প্র্যাকটিসে সম্পূর্ণ মজা পাওয়া যায় না। তারপরও এটুকুই অনেক বড় পাওয়া মনে হচ্ছে। কারণ, বন্দিত্ব থেকে বের হতে পেরেছি।’

এখনো অদম্য রিয়াদরা পুরোনো সেই ক্রিকেট ফিরে পাননি। ‘নতুন স্বাভাবিক’ হিসেবে মেনে নিতে হচ্ছে তাদের বর্তমান ক্রিকেটকে। এখানে এক সঙ্গে আড্ডা দেওয়া যায় না, এক সঙ্গে মাঠে লড়া যায় না। তারপরও রিয়াদ এটা উপভোগ করার চেষ্টা করছেন। বলছিলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করেই কথা বলি। তারপরও অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গে চোখের দেখাটা অন্তত হয়। ঘাসের ওপর দৌড়াই। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, ব্যাট ও বল ধরতে পারছি। এটা যে কী অসাধারণ অনুভূতি, তা বলে বোঝানো যাবে না। খুব ভালো লাগে।’

এই ভালো লাগাটা আরেকটু বেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। প্রার্থনা করছেন, সময়টা যেন ঠিক হয়ে যায়। চাইছেন, পৃথিবী যেন সুস্থ হয়ে ওঠে। আর সেই সঙ্গে মাঠের ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায় আছেন রিয়াদ, ‘এখন প্রার্থনা করি, যত দ্রুত সম্ভব পৃথিবী থেকে এই রোগটা যেন চলে যায়। আমরা সবাই এক সঙ্গে আবার মাঠে খেলব, সেটাই এখন বড় স্বপ্ন। আবার ড্রেসিংরুমে বসে আড্ডা দেব, পাশাপাশি বসে গল্প করব, সেই সময়টা ফিরে আসুক। আমি নিশ্চিত, সব ক্রিকেটারই এটা আশা করছে।’

ইত্তেফাক/এসআই



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews