প্রকাশ: ১৪ জুন, ২০২৫ ১২:৪১ : পূর্বাহ্ণ
কেউ বলছেন সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় শাহজাহান চৌধুরীর ব্যাপারে দলের হাইকমান্ড নাখোশ হয়। আর এই কারণেই তাকে অকালে পদ হারাতে হয়েছে। সম্প্রতিনগরীর জামাল খান সড়কে বাম ছাত্র সংগঠনের জামায়াত বিরোধী মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। সেখান জামায়াত কর্মী আকাশের এক নারী কর্মীকে লাথি মারার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই জামায়াত কর্মী শাহজাহান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক কোন ব্যবস্থা নেননি স্থানীয় জামায়াত। পরে কেন্দ্রীয় নির্দেশে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তার আগে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দ্বিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া আহম্মদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা এবং আহলে সুন্নাত জামাতের অনুসারীদের নিয়ে অপতথ্য দিয়ে বক্তৃতা করে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাকে।
পরে অবশ্য এক ভিডিও বার্তায় তিনি তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এছাড়া বির্জা খালের সংস্কার নিয়েও সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সাথে ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটে। দলের কারো কারো ধারণা এসব কারণে শাহজাহান চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।কেউ বলেছেন জনপ্রিয় হওয়ার কারণে দলের কেন্দ্রীয় এক নেতার অপছন্দ শাহজাহান চৌধুরী। চট্টগ্রামের বাসিন্দা ওই কেন্দ্রীয় নেতার সাথে শাহজাহান চৌধুরীর দূরত্ব সবার জানা। এই কারণে দীর্ঘ দিন দলে কোণঠাসা ছিলেন শাহজাহান চৌধুরী। দীর্ঘ কারাভোগের পর তাকে নগর জামায়াতের আমির পদে আনা হয়। কিন্তু মেয়াদের আগেই সরে যেতে হলো তাকে।
তবে তাকে মহানগর আমিরের পদ থেকে সরানো স্বাভাবিক ঘটনা উল্লেখ করে নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, তাকে বড় কোন দায়িত্ব দেওয়ার জন্যই মহানগর আমিরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
সাতকানীয়া লোহাগাড়া থেকে দুই বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর জন্ম ১৯৫৬ সালের ৬ এপ্রিল সাতকানিয়ার ছমদরপাড়ায় একটি ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। মরহুম ওবায়দুর রহমান চৌধুরী ও মরহুমা ছমুদা বেগম দম্পতির জ্যেষ্ঠ সন্তান তিনি। ৬ ভাই-বোনের মধ্যে শাহজাহান চৌধুরী সবার বড়। তার সহধর্মিণী জোহরা বেগম গৃহিণী। তিনি তিন মেয়ের জনক এবং সবাই বিবাহিতা। ২০২৪ সালের ১৭ জানুয়ারি কারাগার থেকে মুক্ত হন। ১৫ দিন পর বিগত ২ ফেব্রুয়ারি মহানগরীর আমির নির্বাচিত হয়ে শপথ নিয়েছিলেন।
শাহজাহান চৌধুরী ৩৫ বছর বয়সেই প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন ১৯৯১ সালে। পরবর্তীকালে আবারো এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০০১ সালে। তিনি জামায়াত সংসদীয় দলের হুইপ ছিলেন ১৯৯১-১৯৯৬ সংসদে। ২০০১-২০০৬ সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।