ক্রিপ্টোমুদ্রা উৎপাদক কোম্পানি ও বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে প্রতিযোগিতা হলে সেটা ভালো হবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। ছবি: রয়টার্স

ক্রিপ্টোমুদ্রা উৎপাদক কোম্পানি ও বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে প্রতিযোগিতা হলে সেটা ভালো হবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। ছবি: রয়টার্স

ডিজিটাল মুদ্রার জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওয়ালমার্ট ও অ্যামাজন তাদের নিজস্ব ক্রিপ্টোকয়েন তৈরির দিকে নজর দিচ্ছে– এমনটাই বলেছেন এ পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত দুটি কোম্পানির কিছু সূত্র।

মার্কিন বাণিজ্য দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদনে লিখেছে, ওয়ালমার্ট ও অ্যামাজনে প্রতিদিন অনেক গ্রাহক নগদ বা কার্ড দিয়ে পণ্য কেনেন। এসব লেনদেনের সময় বিভিন্ন ব্যাংক বা পেমেন্ট কোম্পানি, যেমন ভিসা বা মাস্টারকার্ড ফি নেয়। কোম্পানির জন্য অনেক বড় খরচ হয়ে দাঁড়ায় এসব ফি, যা বছরে শত কোটি ডলারও হতে পারে।

এক্ষেত্রে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আশা করছেন, নিজেদের ডিজিটাল মুদ্রা চালু করলে এসব ফি কমানো যাবে। পাশাপাশি এসব কয়েন সরাসরি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে থাকায় গ্রাহকের অর্থ খুচরা বিক্রেতার কাছে দেরি বা বাড়তি খরচ ছাড়াই সরাসরি পৌঁছে যাবে।

‘স্টেবলকয়েন’ শ্রেণির ক্রিপ্টোকয়েন তৈরি করছে অ্যামাজন ও ওয়ালমার্ট। স্টেবলকয়েন এক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা, যেটি সাধারণত নগদ অর্থ জমা রাখার জন্য বা অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনার কাজে ব্যবহৃত হয়। এসব কয়েনের পেছনে সরকারি বন্ড, যেমন– ইউএস ট্রেজারি দিয়ে মূল্য নিশ্চিত করা থাকে। মানে হচ্ছে, প্রতি ১টি স্টেবলকয়েনের পেছনে ১ ডলার বা সমপরিমাণ সরকারি মুদ্রা রাখা থাকে। ফলে এর মান সবসময় ১ ডলারের মতোই স্থির থাকে।

তবে এ ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা বা স্টেবলকয়েন দিয়ে পেমেন্ট পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য আগে ‘জিনিয়াস অ্যাক্ট’ নামের এক আইন পাস করতে হবে আইন প্রণেতাদের। আইনটি মূলত স্টেবলকয়েনের জন্য এক নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবে। আইনটি পাসের জন্য কংগ্রেস ও সিনেট উভয়ের অনুমোদন লাগবে।

ইন্ডিপেনডেন্ট লিখেছে, আইনটি পাসের জন্য কংগ্রেসের সদস্যদের কাছে লবিয়িং করছে ‘মার্চেন্টস পেমেন্টস কোয়ালিশন’ নামের অর্থ লেনদেন ব্যবসায়ীদের একটি সংগঠন। তারা বলেছে, এ আইন পাস হলে ব্যবসায়ীরা বিকল্প পেমেন্ট পদ্ধতি হিসেবে স্টেবলকয়েন ব্যবহার করতে পারবে। এতে খরচ অনেক কমে যাবে তাদের।

অ্যামাজন ও ওয়ালমার্টের স্টেবলকয়েন আনার খবরে শুক্রবার ভিসা ও মাস্টারকার্ডের শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ছয় শতাংশ। বিশেষ করে দুপুরের দিকে ‘ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ’ ও ‘এসএন্ডপি ৫০০’-এ ভিসা কার্ড কোম্পানির শেয়ারমূল্য কমেছে সবচেয়ে বেশি।

তবে ক্রিপ্টোমুদ্রা কোম্পানি ও বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে প্রতিযোগিতা হলে সেটা ভালো হবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। ওয়ালমার্ট চাইছে, আইনটির সঙ্গে এমন এক পরিমার্জন যোগ করা হোক, যাতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবসায় আরও প্রতিযোগিতা আসে।

সূত্রগুলো বলেছে, কেবল ওয়ালমার্ট বা অ্যামাজন নয়, নতুন এ পেমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়নের জন্য এয়ারলাইন ও ‘এক্সপিডিয়া গ্রুপ-’এর মতো কিছু কোম্পানিও কাজ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় দুই খুচরা বিক্রেতা কোম্পানির স্টেবলকয়েন চালুর পদক্ষেপে দেশটির বড় বড় বিভিন্ন ব্যাংক কীভাবে সাড়া দেবে তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।

প্রতিনিয়ত জনপ্রিয়তা বাড়ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রার। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার প্রায় ছয় শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো ডিজিটাল মুদ্রার মালিক।

অ্যামাজনের এ পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র বলছে, এখনও সব কিছু শুরুর পর্যায়ে রয়েছে। তবে আলোচনা হচ্ছে, নিজস্ব স্টেবলকয়েন না বানিয়ে বাইরের কোনো স্টেবলকয়েনও ব্যবহার করতে পারে তারা।

এ সপ্তাহে ‘টিডি কোয়েন’ কোম্পানির বিশ্লেষক জ্যারেট সাইবার্গ বলেছেন, “প্রযুক্তি যেভাবে এগোচ্ছে তাতে দ্রুত অর্থ লেনদেনের ব্যবস্থা আসবেই”। এতে ভিসা ও মাস্টারকার্ডের মতো কোম্পানির ব্যবসা কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews