অস্ট্রেলীয় ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্কের ‘বজ্রপাত’ এখন ক্রিকেট-দুনিয়ার আলোচনার কেন্দ্রে। দুর্দান্ত এক বলে যেভাবে ইংলিশ ব্যাটসম্যান জেমস ভিন্সকে বোল্ড করলেন, তার সঙ্গে বজ্রপাতেরই তুলনা করা যেতে পারে। মাইকেল ভন তো স্টার্কের এই বলকে বলেছেন ‘একবিংশ শতাব্দীর সেরা’। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা প্রায় ১৪৪ কিলোমিটার বেগের বলটি বাতাসে ভেতরে ঢুকে উইকেটে পিচ করে কিছুটা বাঁক খেয়ে ভেঙে দেয় ভিন্সের অফস্টাম্প।

স্টার্কের এই অসাধারণ ডেলিভারিটি শেন ওয়ার্নকে নিয়ে গিয়েছিল আজ থেকে ২৪ বছর আগে। ১৯৯৩ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে তাঁর যে বলটি লেগ স্টাম্পে পিচ করে ইংলিশ ব্যাটসম্যান মাইক গ্যাটিংয়ের মিডল স্টাম্প ভেঙে দিয়েছিল, সেটিকে যে ‘বিশ শতকের সেরা’ বল হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে।
ওয়ার্ন আর স্টার্কের মতোই আরও কয়েক তারকার উইকেট নেওয়ার বল ক্রিকেট ইতিহাসে অন্য উচ্চতায় উঠেছে। সে বলগুলোর কারণে ওই তারকারাও চিরদিনের জন্য জায়গা পেয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে।

বিশ্বকাপ জেতানো সেই স্পেলে ওয়াসিম। ফাইল ছবি
ওয়াসিম আকরামের সেই দুই বল, ১৯৯২
প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে তুলেছিল ২৪৯ রান। ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ড বেশ ধীরে-সুস্থেই এগিয়ে যাচ্ছিল লক্ষ্য পূরণের দিকে। কিন্তু ইনিংসের ৩৫তম ওভারে বোলিংয়ে এসে দৃশ্যপট পাল্টে দেন ওয়াসিম আকরাম। পরপর দুই বলে ফেরান দুই ব্যাটসম্যান অ্যালান ল্যাম্ব ও ক্রিস লুইসকে। দুটি বলই ছিল স্বপ্নের মতো। প্রথমে মিডল স্টাম্পে পিচ করা এক বলে ল্যাম্বের অফস্টাম্প তুলে নেন আকরাম। এর পরের বলেই লুইসকে ইনসুইঙ্গারে বোকা বানান তাঁর অফস্টাম্পের বেল ফেলে দিয়ে। এই দুটি ডেলিভারিতেই বিরানব্বইয়ের বিশ্বকাপ যে পাকিস্তান পাচ্ছে, সেটি প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়।

স্ট্রাউসকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া সে বলের পর। ফাইল ছবি
ওয়ার্নের ‘এজবাস্টন-ওয়ান্ডার’, ২০০৫
১৯৯৩ সালে শতাব্দীর সেরা বলের মালিক শেন ওয়ার্ন ২০০৫ সালের অ্যাশেজে আরও একটি জাদুকরি ডেলিভারির জন্ম দিয়েছিলেন। অ্যাশেজের এজবাস্টন টেস্টে অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসকে বোল্ড করেছিলেন অফস্টাম্পের অনেক বাইরে বল পিচ করিয়ে। স্ট্রাউস সেদিন বুঝতেই পারেননি, অফস্টাম্পের অনেক বাইরে পিচ করা বলটি কীভাবে তাঁর লেগ স্টাম্প ভেঙে দিল!
দেখে নিন সে বল 

অবিশ্বাস্য এক স্পেলে প্রায় হেরে বসা এক ম্যাচ জিতিয়েছেন ওয়াকার। ফাইল ছবি
ওয়াকারের ‘অকল্যান্ড-ইয়র্কার’, ১৯৯৪
১৯৯৪ সালে নিউজিল্যান্ড সফর করছিল পাকিস্তান। ওয়ানডে সিরিজে অকল্যান্ডের একটি ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় সেলিম মালিকের দলের ইনিংস শেষ হয় ১৬১ রানেই। কিন্তু সে ম্যাচটিই পাকিস্তান জিতেছিল ওয়াকারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে। ৩০ রানে নিউজিল্যান্ডের ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। ব্রায়ান ইয়ংকে তিনি বোল্ড করেছিলেন ভয়াবহ এক ইয়র্কারে। ওয়াকারের সে বলটি এখনো স্মৃতিকাতর করে তোলে অনেক ক্রিকেট রোমান্টিককেই।

দেখে নিন সেই স্পেল



অ্যান্ডারসনের সেই উইকেট উদ্‌যাপন। ফাইল ছবি
ট্রেন্টব্রিজে ‘আশ্চর্য’ অ্যান্ডারসন, ২০০৮
ট্রেন্টব্রিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ৪৩ রানে ৭ উইকেট পেয়েছিলেন ইংলিশ ফাস্ট বোলার জেমস অ্যান্ডারসন। সে ম্যাচে কিউই ব্যাটসম্যান রেডমন্ড অ্যারনকে দুর্দান্ত এক বলে বোল্ড করেছিলেন অ্যান্ডারসন। বলটি মিডল স্টাম্পে পিচ করে অ্যারনের অফস্টাম্প ভেঙে দিয়েছিল অবলীলায়। অ্যান্ডারসন তো মনে রাখবেনই, ক্রিকেট ইতিহাসেই অ্যান্ডারসনের এই বল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

২০১০ সিরিজে সাকিবকে ঘিরেই যা কিছু উদ্‌যাপন হয়েছিল। ফাইল ছবি
শতাব্দীর সেরা বল—‘সাকিব সংস্করণ’, ম্যানচেস্টার ২০১০
শেন ওয়ার্ন সাকিব আল হাসানের এই ডেলিভারি দেখেছিলেন কি না, তা জানা যায়নি। দেখে থাকলে নিশ্চয়ই এটিকে ‘অন্যতম সেরা’ ডেলিভারির দলেই রাখবেন। সাকিব নিজে দাবি করতেই পারেন, মিচেল স্টার্কের আগেই তো একুশ শতকের অন্যতম সেরা বলটি করেছিলেন তিনি। ২০১০ সালে বাংলাদেশের ইংল্যান্ড সফরে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে অদ্ভুত এক বলে বোল্ড করেছিলেন ইয়ান বেলকে। লেগ স্টাম্পে পিচ করে সাকিবের বল বেলের অফস্টাম্প ভেঙে দিয়েছিল।
সে বলটি দেখুন



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews