নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির কাউন্সিলে আঞ্চলিকতার দাপটে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা

অনেক চড়াই–উতরাই পেরিয়ে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী ২১ এপ্রিল। নিউইয়র্কের লাগুয়ার্দিয়া প্লাজা হোটেলে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলবে কাউন্সিল ভোট। এ নির্বাচনেও আঞ্চলিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক গণসংযোগ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে চরম উৎকণ্ঠায় ভুগছেন ভোটারসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী।

নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির কাউন্সিল নির্বাচনে ৫ পদের জন্য লড়বেন ১১জন প্রার্থী। এর মধ্যে সভাপতি পদে তিনজন ও বাকি ৪ পদে দু’জন। সভাপতি পদে লড়বেন- মো অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, আনোয়ার হোসেন ও রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক পদে সাইদুর রহমান সাইদ ও মো. মোতাহার হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতিতে শহিদুল ইসলাম শিকদার ও জসিম উদ্দিন ভিপি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মো. আরিফুর রহমান ও হাবিবুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো. রইচ উদ্দিন ও জিয়াউর রহমান মিলন। কাউন্সিল নির্বাচনে মোট ভোটার ৪১ জন।

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গরাজের মতো নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির কাউন্সিল নির্বাচনেও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আনোয়ার হোসেন টেলিফোনে নিজ এলাকা কুমিল্লার প্রার্থীদের পক্ষে গণসংযোগ চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নির্বাচনে হস্তক্ষেপসহ বিভিন্নভাবে তার পছন্দের প্রার্থীদের জিতিয়ে আনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। প্রকাশ্যেই টেলিফোনে নির্বাচনী প্রচারণাও চালাচ্ছেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।

নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করার কথা থাকলেও আনোয়ার হোসেনের নির্দেশেই কাজ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আতিক উল্লাহ প্যানেলের ৫ পদের সবাই আন্তর্জাতিক সম্পাদকের নিজ এলাকা কুমিল্লা অঞ্চলের বলে জানা গেছে। কুমিল্লা অঞ্চলকে নিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে তিনি নিজের অঞ্চলিকতা নিয়ে ডুবে আছেন। অথচ নিউইয়র্কের বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মী নোয়াখালী ও সিলেট অঞ্চলের।

এরই মধ্যে আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে নির্বাচন হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেছেন ৬ প্রার্থী। তবে কোনো কিছুই তোয়াক্কা না করে আন্তর্জাতিক সম্পাদকের নির্দেশে নির্বাচনের কাজ চালাচ্ছে কমিশন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাওছার আহমেদ জানান, নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। তাদের ওপর কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো চাপ বা দিকনির্দেশনা নেই। 

নির্বাচনী আচরণবিধি তৈরি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি।

নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির কাউন্সিল নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপ রয়েছে কিনা, ক্ষুদে বার্তায় এমন প্রশ্ন করা হয় আনোয়ার হোসেনকে। তবে তিনি কোনো জবাব দেননি।  

এদিকে, পদ-পদবি হারানোর ভয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীদের অনেকই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি নন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, আনোয়ার হোসেনের একচেটিয়া কমিটি বাণিজ্য যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে চরম বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রায় ১ বছর আগে তিনি মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নিউইয়র্ক (মহানগর) বিএনপিকে দু’ভাগে বিভক্ত করে উত্তর ও দক্ষিণ নামে দু’টি কমিটি দিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন।

তারা বলেন, কাউন্সিল নির্বাচনের ছয় মাসেও যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া স্টেট বিএনপি কমিটির অনুমোদন দিতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতাকর্মীদের কাছে চরমভাবে বিতর্কিত হয়েছেন। ওই কাউন্সিল নির্বাচনের ফলাফল বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদকের সন্তোষজনক না হওয়ায় দীর্ঘদিনেও মেলেনি কেন্দ্রীয় কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

তারা আরও বলেন, আবারও একইভাবে একচেটিয়া কমিটি বাণিজ্যের অংশ হিসেবে নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির কাউন্সিল নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এ নির্বাচনে প্রকাশ্যেই আঞ্চলিকতাকে প্রাধান্য দেওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন অন্যান্য প্রার্থীসহ ভোটাররা।

জানা যায়, আনোয়ার হোসেন অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং উত্তর-দক্ষিণ আমেরিকা সাংগঠনিক সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে না সরালে তিনি দলকে ধ্বংস করে ফেলবেন বলে শঙ্কা নেতাকর্মীদের।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews