জামিন দেয়া আইনত বাধ্য হওয়া সত্ত্বেও একটি মানহানি মামলাকে কেন্দ্র করে আমাকে দ্বিতীয়বার জেলে পাঠনো হলো। আইনের অপব্যবহার কত ন্যক্কারজনক হতে পারে তা আবার প্রমাণিত হলো। আমার আইনজীবীরা আপ্রাণ চেষ্টা করেও ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেটকে বুঝাতে পারছিলেন না যে, আমি আগাম জামিনে নেই, সময়মতো হাজিরা দিয়ে নিয়মিত জামিনে আছি। আমি ঊর্ধ্বতন সেশন-জজ দেয়া জামিনে রয়েছি। তার পরও ম্যাজিস্ট্রেট নিজের রায় হিসেবে আমার জামিন বাতিল করেন। জামিনযোগ্য বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট ব্যাখ্যাও আমলে নেননি। কী আমলে নিয়ে মানহানির মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব আমার জামিন বাতিল করে আমাকে জেলে পাঠালেন বুঝলাম না।

ভাবছিলাম কালো কোটের যখন সম্মান রক্ষা করা যাচ্ছে না, নিজেও বিচার পাচ্ছি না তখন কালো কোট পরিধান করা ছেড়ে দেবো। আইনজীবী পেশায় থাকব না। আমার জামিন বাতিলের পর আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ আমাকে গর্বিত করেছে। আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের মুখে আমাকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। জাতির মুক্তির জন্যই এই ঐক্য বজায় রাখতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের ঐক্য হতাশাগ্রস্ত জাতীয় জীবনে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। আইনজীবীরাই পারেন ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব দিতে।

আমাদের মূল পরিচয় আমরা আইনজীবী। রাজনৈতিক নেতৃত্ব তো আমাদের প্রাপ্য। আইন ও বিচারের স্বাধীনতার প্রশ্নে কে কোন রাজনৈতিক দলের তা একেবারেই বিবেচ্য বিষয় নয়। আইন ও সুবিচার আইনজীবীদের নিজস্ব সত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
এটা আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, রাজনীতিতে আইনজীবীদের নেতৃত্ব থাকলে দেশে আইনের শাসন থাকত, মানুষ বিচার পেত। দেশে আইনহীন অবস্থায় নৈরাজ্য চলত না। আমি মনেপ্রাণে চাই আইনজীবীদের ঐক্য দেশব্যাপী আরো শক্তি অর্জন করুক। হিংসাবিদ্বেষ কোনো রাজনীতি নয়। জনগণের সম্পদ লুটপাট করে দেশটিকে দেউলিয়া করা হয়েছে ব্যবসায়ী রাজনীতি করতে গিয়ে।

সমষ্টিগতভাবে আমাদের নৈতিক ও চারিত্রিক সাহস অর্জনে ব্যর্থতার জন্যই প্রতিটি ক্ষেত্রে মিথ্যারই জয় হচ্ছে। জনগণকে তুচ্ছ করার সাহস বেড়ে চলেছে। জাতি হিসেবে আমরা প্রমাণ করতে পারছি না যে, আমরা স্বাধীনতার মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার যোগ্যতা রাখি। এ ধরনের অবস্থা প্রতিটি নাগরিকের জন্যই লজ্জার বিষয়।
আমরা যে যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের দাসসুলভ মানসিকতা বর্জন করতে হবে। স্বাধীনতার গান গাইব আর অন্যের পরাধীন হয়ে থাকব- এতটা মর্যাদাহীন আমরা হতে পারি না। আমাদের সৎসাহসের অভাবের জন্যই দেশে ভয়াবহ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সরকার ধসে পড়ছে। বিপদ আসছে আমাদের সবার জন্য।
স্বাধীনতা ভোগের জন্য কী ধরনের সাহস ও একতা দেখাতে হয় তার এক অনন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হংকংবাসীর সাম্প্রতিক শক্তিশালী অথচ সুশৃঙ্খল আন্দোলন। সমগ্র জাতি রাস্তায় নেমে পড়েছে। নিজেদের অধিকার রক্ষায় চীনের মতো মহাশক্তির হুমকি-ধমকিতে তারা পিছপা হননি।

আমাদের শাসনতন্ত্র বিচারব্যবস্থাকে সর্বোত্তম নিরাপত্তা দিয়েছে জনগণের সুবিচার নিশ্চিত করতে। কোর্ট-আদালতে বিচার পাওয়াটা যাতে মল্লযুদ্ধের ব্যাপার না হয়, জজ-বিচারকরা যেন নির্ভয়ে এবং নিরপেক্ষ থেকে বিচার সম্পন্ন করতে পারেন সে ব্যাপারে শাসনতন্ত্র প্রণেতারা সবিশেষ লক্ষ্য রেখেছেন। শাসনতন্ত্রের মাধ্যমে অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো আমাদের জনগণও জজ-বিচারকদের শক্তি ও সাহস জোগাতে কার্পণ্য করেননি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্রেফতার করলেই হলো, জামিন পাওয়ার প্রশ্ন কোনো প্রশ্নই নয়। ধরেই নিতে হবে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে জেলে যেতেই হবে। ব্যতিক্রম তো ব্যতিক্রমই। তাই যত খুশি মামলা দিতে অসুবিধা নেই। আমি অস্বীকার করছি না, এখনও কিছু সাহসী জজ-বিচারকের জন্য দেশে আইনি নৈরাজ্য ভয়াবহ রূপ নিতে পারছে না। এখনো সুপ্রিম কোর্টকে জনগণ শেষ ভরসা হিসেবে দেখতে চায়।

জনগণ কোর্ট-আদালতের প্রতি আস্থা রাখতে ব্যর্থ হওয়ার অর্থ দেশকে সরকারহীন ব্যবস্থার দিকে ঠেলে দেয়া। সবাইকে আইন হাতে নিতে বাধ্য করা। অশিক্ষিত লোকেরা বুঝবেন না কিন্তু জজ-বিচারকেরা তো নিশ্চয়ই বুঝবেন। আইনের শাসনের বড় প্রয়োজনীয়তা হলো এই সত্যের কারণে : ডযবৎব ষধি বহফং ারড়ষবহপব নবমরহং অর্থাৎ আইনের শাসন যেখানে শেষ সেখান থেকেই নৈরাজ্যিক শক্তির বিপজ্জনক উত্থান শুরু।

জজ-বিচারকরা বিচারহীন ব্যবস্থার হাতিয়ার হলে সমাজ যে কোন দিকে যাবে সে কথাই বলছি। বিচারকেরা সমাজের বিবেক এবং তাদের মাধ্যমেই সভ্য সমাজের এবং সুন্দর জীবনের নীতি-মূল্যবোধ প্রসারিত হয়।

রাজনীতিকদের নীতি-আদর্শহীন, ক্ষমতালোভী হতে পৃথিবীর সর্বত্রই কমবেশি দেখা যাচ্ছে- এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। রাজনীতিবিদদের তাই চোর-ডাকাত হতে রাজনীতি কোনো বাধা নয়। রাজনৈতিক নেতাদের হাত-পা বাঁধার জন্যই পযবপশং ধহফ নধষধহপবং এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে- তাদের ক্ষমতার সীমা লংঘন বন্ধ করতে। বিচারব্যবস্থাকে তাই সবচেয়ে ঊর্ধ্বে স্থান দেয়া হয়েছে।

যে রবার্ট মুগাবে জিম্বাবুয়ের স্বাধীনতাযুদ্ধে নিজে গেরিলা যুদ্ধ পর্যন্ত করেছেন এবং জনগণের বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, সেই মুগাবে ক্ষমতায় গিয়ে ক্ষমতায় থাকার নেশায় অমানুষিকভাবে হত্যা ও নির্যাতনের মাধ্যমে দীর্ঘ ৩৭ বছর ক্ষমতসীন থেকে শেষ পর্যন্ত একজন ঘৃন্য স্বৈরশাসক হিসেবে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছেন সামরিক বাহিনীর কর্তাদের হাতে। যদিও সামরিক বাহিনী ক্ষমতাসীন হয়নি। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে একজন নির্মম স্বৈরাচারীর কলঙ্ক নিয়ে ৯৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রীকে প্রেসিডেন্ট বানানোর স্বপ্নও তিনি দেখেছিলেন।

জেলে গেলে যে বিষয়টি আমাকে বেশি ব্যথিত করে তা হলো, শত শত লোক অসহায়ভাবে বিনা বিচারে কেবলমাত্র জামিন প্রত্যাখ্যাত হয়ে বাইরের দুনিয়া থেকে ভুলে যাওয়া মানুষ হিসেবে বছরের পর বছর কয়েদি জীবনযাপন করছে। শিক্ষা-দীক্ষা বা তেমন কোনো আত্মীয়-স্বজন না থাকার ফলে অনেক বন্দীই জানে না যে জেলজীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো পথ আছে কিনা। ছেলেমেয়ে স্ত্রীর নৈকট্য পাওয়া সম্ভব হবে কিনা। তাদের অনেকেরই আইনজীবী রাখার সামর্থ্য নেই। তাদের মধ্যে এমনও অনেকে আছে যারা জানে না যে তারা কী ধরনের অন্যায়-অবিচারের জন্য বন্দী। পুলিশ মামলা দিয়েছে ফলে তারা অস্তিত্বহীন অমানুষ হয়ে কয়েদি হিসেবে অমানবিক পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

নিজেদের কষ্ট ও নিরাশার মধ্যেও তাদের কারও সাথে দেখা হলে যখন জানতে চায় আমি কেমন আছি, তখন সে প্রশ্নের উত্তর দেয়া অসম্ভব মনে হয়। তাদের মানবতাবোধ দেখে চোখে পানি এসে যায়। মামলা করেছে পুলিশ। প্রসিকিউশন তথা সরকারের দায়িত্ব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা। কিন্তু এ ব্যাপারে পুলিশের মধ্যে তেমন কোনো আগ্রহ থাকে না। তারা তো জামিন পাচ্ছে না। নিজেদের বড় অপরাধী মনে হয় এই ভেবে যে, দেশে এত শিক্ষিত সচেতন লোক থাকতে তারা দারুণ অসহায় এবং নির্মমভাবে বন্দী জীবন কাটাচ্ছে।

পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের মামলার সাথে জড়িতদের জঘন্যতম অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য স্বীকার করি। কেন এবং কাদের অবহেলায় আমাদের মূল্যবান ট্রেনিংপ্রাপ্ত বহু লোককে জীবন দিতে হলো তার কোনো বিচার-বিশ্লেষণ হলো না। সন্দেহজনক দোষীদের নিজস্ব ট্রাইব্যুনালে বিচার হয়েছে। দোষীদের কঠিন শাস্তিও দেয়া হয়েছে। শাস্তি দিতে গিয়ে বহু বিডিআর সদস্যের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে। বিদ্রোহের জন্য নিয়মিত ট্রাইব্যুনালে শাস্তি পাওয়ার পর অস্ত্র লুণ্ঠন বা বিস্ফোরক রাখার জন্য সাধারণ কোর্টেও তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়বার মামলা করার জন্য তারা এখনও জেল খাটছে।

অভ্যুত্থানের মামলার পর পুনরায় ভিন্নভাবে অস্ত্র-মামলা ইত্যাদি আইনসিদ্ধ হতে পারে। কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে তাদের দু’দুবার মামলা দিয়ে সাজা দেয়ার বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় বিশ্লেষণ করে দেখার সুযোগ ছিল এবং এখনও আছে। বিডিআর অভ্যুত্থানে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের অবৈধ ব্যবহার হতে বাধ্য। বিভিন্ন মামলার জন্য বিভিন্ন জেলে প্রায় চার শতাধিক প্রাক্তন বিডিআর সদস্য রুটি রোজগারের পথ হারিয়েছে। দু’বার বিচারের সম্মুখীন হয়ে তারা আজ সর্বস্বান্ত। পরিবার-পরিজনও অসহায় অবস্থায় এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে। হাইকোর্টে তাদের মামলা রায়ের অপেক্ষায় আছে বিগত দু’বছর যাবত। চার শতাধিক মামলার রায় দেয়াতো সহজ ব্যাপার নয়। এরপর তাদের আপিল বিভাগের রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

আইনি লড়াই করে জীবনে বেঁচে থেকে মুক্তি পাওয়া অনেকের পক্ষেই আশা করা যায় না। তাই যাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে তারা তাদের এই দুর্ভোগের কথা জানিয়েছে এই আশায় যে, আমি যেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরি যাতে তাদের ব্যাপারে মানবিক দৃষ্টিকোণ নিয়ে কিছু করা যায় কি না তা ভেবে দেখার সুযোগ হয়। মূল অভ্যুত্থানকারীদের যেখানে কঠিন শাস্তি হয়েছে সেখানে আইনের মারপ্যাঁচে দ্বিতীয়বার বিচারের প্রশ্নটি দরদি মন দিয়ে দেখার সুযোগ নিশ্চয়ই আছে। বিচারের মানবিক দিক দেখার দায়িত্ব শাসনতন্ত্রই রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে। তিনি মানবিক বিচারের প্রধান বিচারক। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাখেন।

বিচারে যেখানে কঠিন শাস্তি প্রাপ্য সেখানে কঠিন হতেই হবে। কিন্তু যেখানে মানবিক দৃষ্টিতে দেখলে বিচার বিঘ্নিত হয় না, সেখানে অনুকম্পা দেখাতে হবে। পিলখানা বিডিআর অভ্যুত্থানের ভয়াবহতা কেন, কিভাবে ঘটল তার সদুত্তর এখনও আমাদের জানা নেই। বহু অর্থ খরচ করে গড়া একটি বাহিনীকে ভেঙে নতুন করে গড়তে হয়েছে।
আইনে আছে ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঝে মাঝে জেল পরিদর্শন করবেন। দেখবেন অশিক্ষিত অসহায় লোকদের সাহায্যের জন্য কী করা যায়। যারা বিনা বিচারে অন্যায়ভাবে জেল খাটছে তাদের জামিন বা মুক্তির ব্যবস্থা করবেন। দুঃখের বিষয় জনগণের টাকায় ভালো থাকবেন কিন্তু জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালন না করাটা অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার রক্ষার নামে এনজিওগুলো প্রচুর টাকা পাচ্ছে। তারাইবা জেলবন্দী অসহায় মানুষদের জন্য কী করছেন, তা নিজেরাই বলুন। অথচ এনজিওগুলোর জন্য অনেক টাকা বিদেশ থেকে আসছে। নিজেদের তারা অত্যন্ত বড় মাপের ব্যক্তি মনে করেন। ছোট শুধু দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে।

কী ধরনের আইনি সাহায্য অশিক্ষিত অসহায় বন্দীরা পেতে পারে তাও জেলে থাকা অনেকের জানা নেই। এমন অসংখ্য লোকের খোঁজ পাওয়া যাবে। সবচেয়ে যেটা বেশি বিবেচ্য বিষয় তা হলো, তারা কারও কাছ থেকে পরামর্শ পাচ্ছে না। শাসনতন্ত্রে আইনজীবীর সাহায্য নেয়ার অধিকার আছে। আইনজীবীরা নিজেরা যোগাযোগ করতে না চাইলে বন্দীদের আইনজীবীর সাথে যোগাযোগের সুযোগ নেই।
বন্দী জীবনের অসহায়ত্ব বড়ই করুণ। আমাকে সাহায্যের জন্য থাকা একজন কারাবন্দী হাসিমুখে বলল, আমার সাথে দেখা করার মতো কোনো আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধব নেই। দীর্ঘদিন জেলে থাকায় এখন আর কেউ দেখতেও আসে না। মুখে হাসি থাকলেও তার ভেতরটা মনের কষ্টে নিশ্চয়ই হাহাকার করছে।

আমাদের মানবাধিকার কমিশনও আছে কিন্তু তারা মানবাধিকার নিয়ে কতটা ভাবেন জানি না। কাজকর্মে তাদের কোনো কার্যকর ভূমিকা দেখছি না। মাঝে মধ্যে চেয়ারম্যান সাহেবকে টেলিভিশনে দেখা যায়। ভালো ভালো কথা বলে যাচ্ছেন। কমিশনের চেয়ারম্যান মানবাধিকার বিষয়ে কতটা কি জানেন তা নিয়েই সন্দেহ আছে। ভিআইপির প্রাপ্য সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেই যেন তারা নিশ্চিন্তে আছেন।
বিবেক বলে কিছু না থাকলে তো আমরা মানুষই নই। দেখা যাচ্ছে সমগ্র রাষ্ট্রীয়ব্যবস্থা নিষ্ঠুর ও বিবেকহীন হয়ে পড়েছে। জনগণের প্রতি সুবিচার করার দায়িত্ব যেন কারও নেই। যাদের আছে তারা নিশ্চয়ই মহান। কিন্তু তারা বড়ই একা।

নির্বাচন ডাকাতি আর আপসের রাজনীতি তো অনেক দেখা হয়েছে। আইনজীবীদের বুঝতে হবে ব্যবসায়ী রাজনীতি দিয়ে সুন্দর সমাজ গড়া যাবে না। রাজনীতি যে কাদের হাতে চলে গেছে আইনজীবীরা তা বুঝেও না বোঝার ভান করতে পারেন না। ব্যবসায়ী রাজনীতি দিয়ে দুর্নীতির পাহাড় গড়া যাচ্ছে কিন্তু সুখ-শান্তি ও জীবনের নিরাপত্তা আসছে না। আমরা পুলিশবেষ্টিত এক ভয়ভীতির সমাজে বাস করছি। যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখি পুলিশ। কিছু দিন আগে লন্ডনে গিয়েছিলাম। কোথাও পুলিশ চোখে পড়ল না। তার অর্থ এই নয় যে, লন্ডন শহরে নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই। ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর বাসা ও অফিসে মাত্র একজন পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে। আর আমাদের দেশে?

দুর্নীতির পাহাড় না ভাঙতে পারলে জাতির মুক্তি নেই। আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকার প্রয়োজন ব্যবসায়ী রাজনীতির দুর্নীতির পাহাড় ভাঙার জন্য। তাহলেই দেশে সুস্থ রাজনীতি ও সুশাসন উন্মুক্ত হবে। ভুল রাজনীতির পেছনে ঘুরে আর কতকাল আমরা আহাম্মক হয়ে থাকব।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews