জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হারটা এখন অতীত। শোক কাটিয়ে শিরোপার অন্যতম দাবিদার হয়ে রাশিয়া আসবে ব্রাজিল। কোচ তিতে পারলে এখনই জানিয়ে দেন প্রথম ম্যাচের সেরা একাদশ! ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলেও আশাবাদী। সবশেষ ২০০২ সালে জেতা শিরোপাটা এবার নেইমাররা ফিরিয়ে আনবেন বলে বিশ্বাস তাঁর। তবে এ জন্য ফিফায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়ার কথা, ‘বিশ্বকাপ জয়ের মতো একটা দল সব সময়ই ছিল ব্রাজিলের। গত কয়েকটা টুর্নামেন্টে আমরা পারিনি আসলে পর্যাপ্ত অনুশীলনের অভাবে। দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড় খেলে বিদেশি লিগে। ওদের অল্প সময়ে পেয়ে একটা দল হিসেবে গড়াটা কঠিন হয়ে পড়ে কোচিং স্টাফদের জন্য। তবে ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি, বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়রা এখন ব্রাজিলেরই। অবশ্যই ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফেভারিট। যদি ওরা প্রস্তুতির সময় পায় তাহলে জিততেই পারে বিশ্বকাপ।’
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানিও হেলাফেলার দল নয়। লিওনেল মেসি নামের জাদুকরের জন্য ফেভারিটের তালিকার বাইরে রাখার উপায় নেই আর্জেন্টিনাকেও। গত বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দল দুটিকে নিয়ে পেলে জানালেন, ‘জার্মানিকে সব সময় সম্মান করতে হবে আপনাকে। এমনকি হিসাবের বাইরে রাখতে পারবেন না রাশিয়াকেও। ওদের শক্তিশালী দল কিন্তু খেলবে নিজেদের দর্শকদের সামনে। লাতিন দলগুলোর কথা বললে আর্জেন্টিনার নাম নিতে হবে। ওরা শেষ পর্যন্ত যাওয়ার মতো এক দল।’
নিজেদের মাটিতে গত বিশ্বকাপে হট ফেভারিট ছিল ব্রাজিল। দলের প্রাণভোমরা নেইমার সেমিফাইনালের আগে চোট পাওয়ায় আর পেরে ওঠেনি পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। সেই নেইমারের হাত ধরে এবার ব্রাজিল শেষ পর্যন্ত যাবে বলে মনে করেন একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জেতা পেলে, ‘ক্লাবে নেইমার খেলে আক্রমণের বাঁ-দিকে। জাতীয় দলে ভূমিকা বদলে ১০ নম্বর জার্সির খেলোয়াড়দের মতো চলে আসে অনেক বেশি মাঝমাঠে। এটা কঠিন কিন্তু দক্ষতার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে নেইমার। বিশ্বফুটবলের দিকে তাকান, মেসি, রোনালদো আর নেইমার ছাড়া মহাতারকা নেই। জাতীয় দলে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে গোছানো একটা দল হয়ে খেলা, কেননা একই পজিশনে তিন বা চারজন সেরা খেলোয়াড় নেই। আমার মতে ব্রাজিলের নেতা হতে তৈরি নেইমার। ব্রাজিলের আসল খেলোয়াড় ও। আমি আরো একটু এগিয়ে বলতে চাই, টেকনিক্যালি ও এখনই বিশ্বের সেরা ফুটবলার। এ নিয়ে সন্দেহ নেই আমার।’
১৯৫৮ বিশ্বকাপে ডিফেন্ডারের মাথার ওপর দিয়ে করা ফ্লিকে অসাধারণ এক গোল করেছিলেন পেলে। ১৯৭০ বিশ্বকাপ ফাইনালেও ইতালির বিপক্ষে করেছিলেন দুর্দান্ত আরেক গোল। এ নিয়ে তাঁর স্মৃতিচারণা, ‘১৯৫৮ বিশ্বকাপের গোলটা পরিকল্পনামতো হয়েছে বলাটা শতভাগ মিথ্যা হবে! বুক দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণের পর দেখি এক ডিফেন্ডার এগিয়ে এসে পা বাড়িয়ে আমার ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ওর মাথার ওপর দিয়ে ফ্লিকটা করি তখনই। এটা ঈশ্বরের পক্ষ থেকে আশীর্বাদ বলতে পারেন। ১৯৭০ বিশ্বকাপের গোলটাকে দলীয় পরিকল্পনা আর বোঝাপড়া বলতে হবে। এ নিয়ে অনুশীলনে কাজ করেছিলাম আমরা। আর হেডটা নিয়ে বলব, ওই শিক্ষাটা পেয়েছি আমার বাবার কাছ থেকে। তিনি বলতেন হেডের সময় চোখ বন্ধ না করে খোলা রাখতে। তাহলে বলটা কোথায় পাঠাতে চাচ্ছি ভালো দেখতে পাব আমি। পরামর্শটা মেনে হেডের সময় আর দশজনের মতো চোখ বন্ধ করতাম না কখনো।’ ফিফা