সময় যত গড়াচ্ছে, কোভিড পাসপোর্টের গুরুত্ব ততই বেড়ে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের জন্য ক্রমেই অপরিহার্য হয়ে উঠছে এই কাগুজে কিংবা ভার্চুয়াল সনদ।

এই পাসপোর্টগুলো সাধারণত মোবাইল ফোনে একটি অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাক্সেস দেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে এই পাসপোর্টের কাগুজে সংস্করণও রয়েছে।

এরই মধ্যে কয়েকটি দেশ কোভিড পাসপোর্টের নিজস্ব সংস্করণ তৈরি করেছে, যা ইনস্টলেশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাগরিকরা বড় বড় ইভেন্টে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

কিছু দেশ এই পাসপোর্ট ইস্যুর ঘোষণা দিলেও নাগরিকদের ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচিতে পিছিয়ে থাকায় তাদের এই কোভিড পাসপোর্টবিষয়ক কর্মসূচিও বিলম্বিত হতে পারে। শুক্রবার এক প্রতিবেদন তুলে ধরেছে বিবিসি।

যুক্তরাজ্য : এই মুহূর্তে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দেশটির নাগরিকদের নাইট ক্লাবে ঢুকতে হলে ভ্যাকসিনেশনের প্রমাণ দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কর্তৃক সম্প্রতি গৃহীত নতুন পরিকল্পনা অনুসারে নাগরিকদের ভ্যাকসিনেশন প্রমাণের জন্য এনএইচএস কোভিড পাশ অ্যাপের আওতায় আসতে হবে। শুধু নাইট ক্লাবই নয়, বিপুল জনসমাগমের মধ্যে প্রবেশ করতে হলে প্রত্যেককেই এই অ্যাপ দেখাতে হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন : নিজস্ব ভ্যাকসিন পাসপোর্ট চালু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এর আওতাভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকরা ভ্যাকসিনেশন সম্পন্ন করে এর একটি কপি ডাউনলোড করে নিজেই বিনামূল্যে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। এমনকি ইইউর দেশগুলোতে বৈধভাবে বসবাসরত নন-ইইউ নাগরিকরাও এ পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারবেন, যেহেতু তাদেরও বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের অধিকার রয়েছে।

ফ্রান্স : রেস্টুরেন্ট, বারে প্রবেশ কিংবা বিমান বা ট্রেনে ভ্রমণের সময় ‘স্বাস্থ্য পাশ’ বাধ্যতামূলক করেছে ফরাসি সরকার। পাশাপাশি নিয়ম করা হয়েছে, যেসব জায়গায় ৫০-এর বেশি লোক একসঙ্গে থাকেন কিংবা কাজ করেন তাদের সবাইকে কোভিড টেস্ট নেগেটিভ সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে সবার জন্যই ‘স্বাস্থ্য পাশ’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে দেশটিতে।

ইসরাইল : বছরের শুরুতেই ভ্যাকসিন পাশ ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছিল ইসরাইল। এটি থাকলে যে কোনো ইসরাইলি ভ্যাকসিনেটেড কিংবা কোভিড আক্রান্ত হয়ে ভাইরাসটি থেকে মুক্ত হয়েছেন বলে ধরে নেওয়া হবে। এই পাশ চালুর পর থেকে দেশটিতে ভ্যাকসিনেশনের প্রতি যুবপ্রজন্মের আকর্ষণ অনেক বেড়ে গেছে। তবে দেশটিতে সংক্রমণের হার অনেকটা কমে যাওয়ায় এই প্রকল্পটি নিয়ে আর এগোচ্ছে না দেশটি।

চীন : কিউআর কোড সিস্টেমে নাগরিকদের বিভিন্ন রঙে চিহ্নিত করেছে চীন। সবুজ রঙের কোড বলে দেবে লোকটি বিনা বাধায় যে কোনো এলাকায় প্রবেশের অধিকার রাখেন। হলুদ রং জানিয়ে দেয় লোকটিকে কমপক্ষে সাত দিন ঘরে থাকতে হবে। কম্পিউটারে তথ্যউপাত্ত জমা দিয়ে চীনাদের এই কোডগুলো সংগ্রহ করতে হয়। চীনের অনেক পাবলিক প্লেসে প্রবেশের ক্ষেত্রে এই কোডগুলো কাজ শুরু করে দিয়েছে। এর বাইরে গত মার্চ থেকে ডিজিটাল স্বাস্থ্য সনদ চালু করেছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্র : গত এপ্রিলে হোয়াইট হাউজ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য ফেডারেল কোভিড ভ্যাকসিনেশন পাসপোর্ট চালুর ঘোষণা দিয়েছিল। যদিও কোভিড ভ্যাকসিনেশনে জনগণকে উৎসাহিত করতে দেশটির বিভিন্ন রাজ্য পৃথক কর্মসূচি চালু করেছিল। ক্যালিফোর্নিয়ায় স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে টিকা প্রদানের প্রমাণ দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া : বর্তমানে টিকাপ্রাপ্ত অস্ট্রেলিয়ানদের ফোনে ফোনে ডিজিটাল সার্টিফিকেট পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু এই সার্টিফিকেটের আওতা কিংবা বিশেষ কার্যকারিতা নির্দেশ করা হয়নি। তবে দেশটির পর্যটনমন্ত্রী ড্যান তিহান বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার সীমানা অতিক্রম কিংবা লকডাউনে চলাচলের জন্য এই সার্টিফিকেট ভূমিকা রাখবে।

রাশিয়া : ভ্যাকসিন কর্মসূচি বা পাসপোর্ট নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তেমন কোনো উদ্যোগ নেননি। তবে দেশটির কোনো কোনো অঞ্চল এ বিষয়ে বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেমন-ভ্যাকসিন নেননি এমন কোনো লোক আগামী মাস থেকে সোচির জনপ্রিয় গ্রীষ্মকালীন পর্যটনকেন্দ্রে যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews