ইরানের কোম শহরের ৩০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ফোর্দো পরমাণু কেন্দ্রে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সোমবার (১৬ জুন) ভোরে এ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে দখলদার ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। এতে করে ইরান-ইসরায়েল বিরোধ নতুন করে আরও বিপজ্জনক মোড় নিতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এটি ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা, যা মাটির গভীরে নির্মিত। ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি ইসরায়েল যে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, এই বিস্ফোরণ তারই অংশ। ইরানের কর্মকর্তারা বিষয়টি তদন্ত করছেন, তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে দায় স্বীকার করেনি কেউ।
ফোর্দো পরমাণু কেন্দ্রটি ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের একটি ঘাঁটির কাছাকাছি অবস্থিত এবং এটি বহু বছর ধরেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি এতটাই গভীরে অবস্থিত যে সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, সহজে এটিকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। ইসরায়েল বহুবার দাবি করেছে, ফোর্দো ইরানের পারমাণবিক বোমা তৈরির কেন্দ্র হতে পারে এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই কেন্দ্র ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়েছিলেন।
এর আগে গত শুক্রবার ইসরায়েল ব্যাপকভাবে ইরানে হামলা চালায়। সেই হামলায় লক্ষ্যবস্তু ছিল আরেকটি গভীরস্থ পরমাণু কেন্দ্র—নাতানজ। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, নাতানজ কেন্দ্রের কিছু বাহ্যিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে পরবর্তীতে ওয়ালস্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক বক্তব্যে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা দাবি করেন, সেই হামলায় নাতানজ কেন্দ্রের ভিতরের দিকেও বিস্ফোরণ (ইমপ্লোশন) ঘটতে পারে। যদিও এর সত্যতা নির্ভর করছে আরও বিশদ পর্যবেক্ষণের ওপর।
এদিকে শুধু ফোর্দো নয়, সোমবার মধ্যরাতেও ইসরায়েল ইরানের রাজধানী তেহরানের দুটি এলাকায়—নার্মাক ও লাভিজান—হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই এলাকায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর না মিললেও ইরানি বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ওই সময় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং ইসরায়েলি হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করে।
ফোর্দো এবং অন্যান্য স্থাপনায় বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো ইরান-ইসরায়েল সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরমাণু কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ এবং এর জবাবে ইরানের প্রতিক্রিয়া আগামী দিনে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল, আল-জাজিরা