উভয় দেশে এসব মৃত্যুর জন্য যাঁরা দায়ী, সেসব শাসক, জেনারেল, মিডিয়া মালিক কেউ সীমান্তে যুদ্ধ করতে যাবেন না, অতীতেও যাননি। উভয় দেশের সীমান্তে এবং সীমান্তের ভেতরে যাঁরা মরবেন, আহত হবেন, সব সমাজের দরিদ্র মানুষ—কেউ উর্দি পরা থাকবেন, কেউবা উর্দিহীন। দুর্ভাগা এসব মানুষকে নিয়ে ইউটিউবজুড়ে প্রচুর আবেগ ছড়ানো হবে, আর এই ফাঁকে উভয় দেশের সামরিক বাজেট আরেক দফা বাড়বে, সামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব অতীতের চেয়ে দৃঢ় হবে এবং সমাজজুড়ে ধর্মীয় ও জাতিগত উন্মাদনা নতুন উচ্চতায় উঠবে। পাশাপাশি যুদ্ধে সরাসরি কোনো স্বার্থ না থাকার পরও সাধারণ হিন্দু, মুসলমান, শিখরা আবার পরস্পরকে নতুন করে সন্দেহ-অবিশ্বাসের চোখে দেখতে শুরু করবে।
পাকিস্তান ইতিমধ্যে পাঞ্জাব ও আজাদ-কাশ্মীরের বহু এলাকায় স্কুল-কলেজ, হাটবাজার বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতের ভেতরও বহু জায়গায় এ রকমটি করতে হবে শিগগির। তাৎক্ষণিকভাবে বললে, এই যুদ্ধ পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় সমাজজীবনে দক্ষিণপন্থার প্রভাব আরও বাড়বে এবং এই যুদ্ধ দরিদ্রদের স্বার্থের জন্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ক্ষতিকর হবে।
আমেরিকা ও ইউরোপজুড়ে রাজনীতিতে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের যে জোয়ার চলছে, তারা এই যুদ্ধে নিজেদের দক্ষিণ এশীয় মিত্রদের উত্থান দেখতে পাবে। ওই সব দেশের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির ব্যবসাও এ কারণে চাঙা হবে। ট্রাম্প ও ইসরায়েল প্রশাসন গাজায় তাদের নির্মমতা থেকে বিশ্ববাসীর মনোযোগ বেশ ভালোভাবেই দক্ষিণ এশিয়ায় স্থানান্তর করতে পারল মোদি প্রশাসনের সহায়তায়। মুখে ট্রাম্প যা–ই বলুন, তাঁদের জন্য ৬ মের ‘অপারেশন সিঁদুর’ আনন্দদায়ক হয়েছে।