গতকাল মঙ্গলবার থেকে দেশের ৪০ লাখ পোশাক পোশাক শ্রমিককে সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) ভর্তুকি মূল্যের পণ্যসামগ্রী প্রদানের যে কার্যক্রম চালু হয়েছে, সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। টিসিবির আওতায় শ্রমিকরা পাচ্ছেন ভোজ্যতেল, ডাল, চিনি ও চালের মতো নিত্যপণ্য। আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পরে টিসিবির কার্যক্রম কিছুকাল বন্ধ ছিল নানা জটিলতায়। সেটি আবারও চালু হয়েছে। মানুষের ভিড়ও বাড়ছে।

এরই মধ্যে বিপুল সংখ্যক পোশাক শ্রমিককে ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। পোশাক খাত শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি পূরণের অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলেও এটি সাধুবাদযোগ্য। বলাবাহুল্য, এতে দিন এনে দিন খাওয়া সব ধরনের শ্রমিকের প্রত্যাশাও বেড়ে যাবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং মূল্যস্ফীতির সংকটকালে স্বল্প আয়ের মানুষেরই বেশি কষ্ট হচ্ছে। সরকার নিশ্চয়ই সেদিকে আরও নজর দেবে।

রবিবার সচিবালয়ে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে গ্রামীণফোনের চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া শ্রমিকদের আশ^স্ত করে জানান, ঘোষণা অনুযায়ী ৪০ লাখ শ্রমিককে টিসিবির পণ্য দেওয়া হবে। আপাতত শ্রমঘন এলাকায় টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছে সরকার। উল্লেখ্য, দেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য গার্মেন্টস খাতে প্রায় ৪০ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করছেন, যাদের বেশির ভাগ নারী।

তাদের একটি ক্ষুদ্র অংশ টিসিবির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও বেশির ভাগই তালিকার বাইরে রয়ে গেছেন। শ্রমিক ও মালিকপক্ষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল টিসিবির ভর্তুকি মূল্যের পণ্যসামগ্রী যেন শ্রমিকদের দেওয়া হয়। অবশেষে অন্তর্বর্তী সরকার সেই দাবি পূরণ করেছে।
বাজার মূল্যের চেয়ে প্রায় অর্ধেক মূল্যে নিত্য ও ভোগ্যপণ্য কেনার সুযোগ পাওয়া এই চরম দুর্দিনে খুবই বড় বিষয়। ইতোমধ্যে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত শ্রমঘন এলাকায় টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়াও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিকেও শ্রমঘন এলাকায় সম্প্রসারিত করা, শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী রেশন ব্যবস্থার জন্যও ভবিষ্যতে নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করা হতে পারে।

আমরা মনে করি, গরিব মানুষদের স্বস্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও দ্রুততর বাস্তবায়ন সব মহলেরই সাধুবাদ পাবে। মনে রাখতে হবে, হতদরিদ্র তো বটেই, নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও বর্তমানে কঠিন অবস্থার মধ্যে আছেন। বিশেষ করে যারা সহায়তার জন্য অন্যের কাছে হাত বাড়াতে পারেন না লোকলজ্জার ভয়ে। ফলে, ওএমএস বা খোলাবাজারে বিক্রির দোকান ও টিসিবির ট্রাক তাদের ভরসার জায়গা। তাই যত বেশি মানুষকে টিসিবির পণ্যের আওতায় আনা যায়, ততই কল্যাণকর। এ জন্য টিসিবিকে আরও শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews