'আমার ছেলেটা মেধাবী ছিল। ক্লাসে সে প্রথম হতো।



বুকফাটা আর্তনাদ করে কথাগুলো বলছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এএফএম ইউসুফ। তার মা শামীমা শাম্মীও ওই প্রতিষ্ঠানের রসায়নের শিক্ষক।

তাদের ছেলে সায়ান ইউসুফ বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল সায়ান। মঙ্গলবার ভোর রাতের দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। তারা উত্তরা ১০ নাম্বার সেক্টরে ভাড়া থাকতেন বলে জানা গেছে।

তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের পাল বাড়ি।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুর পৌনে ১টার দিকে সায়ানের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এর কিছুক্ষণ পরেই তার বাবা-মা অন্য আরেকটি গাড়িতে করে বাড়ি এসে পৌঁছান৷ তখন এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। গাড়ি থেকে নামতেই বন্ধু ও স্বজনদের জড়িয়ে কাতর হয়ে ওঠেন সায়ানের বাবা ইউসুফ।

সকাল থেকেই সায়ানদের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন এবং প্রতিবেশী এসে ভিড় করে। শোক নেমে আসে পুরো এলাকায়। বিকেল ৩টার দিকে সায়ানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।  

এদিকে নাতিকে হারিয়ে শোকে আর্তনাদ করছেন তার দাদি কামরুন নাহার।  

সায়ানের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের আওয়াজ শুনেই কাঁদতে কাঁদতে ছুটে আসছিলেন তিনি। এসময় কয়েকজন তাকে ধরে রাখেন। এরপরও তিনি সায়ানের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের কাছে ছুটে যেতে যান। সবাই তাকে বুঝিয়ে বাড়ির ভেতর দিকে নিয়ে গেলেও কান্না থামেনি তার।

তিনি আহাজারি করে বলেন, 'ও বাবু, আমার সোনামনি কই, আমার সোনামনি কই’।

সায়ানের চাচা মিজানুর রহমান বলেন, ভিডিওতে দেখেছি- ঝলসানো শরীর ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে সায়ান দুর্ঘটনাস্থল থেকে নিজেই বের হয়ে আসে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। বিকেল ৩টার দিকে নামাজে জানাজা শেষে তার দাদা ডা. মাকসুদুর রহমানের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়েছে।

সায়ানের বাবার বন্ধু মো. দিদার জানান, সায়ান অত্যন্ত মেধাবী ছিল। তার বাবার স্বপ্ন ছিল তাকে আমেরিকায় পড়ালেখা করাবে। কিন্তু বিমান দুর্ঘটনায় তার ছেলেটি মারা গেছে। জনবহুল এলাকায় কেন বিমান প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যেখানে মানুষজন থাকে না, সেখানে এসব প্রশিক্ষণ হবে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সায়ানরা দুই ভাই-বোন। তার বোন ফারিশা মাইলস্টোন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। গেল ঈদুল আজহার ছুটিতে তারা সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। এরপর আর আসা হয়নি। এখন লাশ হয়ে তাকে ফিরতে হলো।  

আরএ



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews