ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগ্রাসী অবস্থান পাকিস্তানকে ঐক্যবদ্ধ করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই নেতা ইমরান খান। বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে বন্দি থাকা এই বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ক্রিকেটার আইনি পরামর্শের সময় আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় একথা বলেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দেওয়া এই বার্তা পরে পিটিআইয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজেও প্রকাশ করা হয়।
ইমরান খান বলেন, “আমরা এই অবৈধ ও ভুয়া সরকারকে প্রত্যাখ্যান করি, কিন্তু মোদির যুদ্ধপ্রবণ ও আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে গোটা পাকিস্তান এখন ঐক্যবদ্ধ।” তিনি আরও বলেন, ভারতের এই মনোভাব শুধু পাকিস্তানের জন্য নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। ইমরান দাবি করেন, মোদির নেতৃত্বে ভারত আজ এক বিপজ্জনক উচ্চাকাঙ্ক্ষার পথে হাঁটছে, যা পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
কাশ্মীর ইস্যু নিয়েও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনার সঠিক তদন্ত না করে ভারত বরাবরের মতো পাকিস্তানকে দায়ী করছে। এমনটা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার সময়ও হয়েছে।” তিনি বলেন, তখনও পাকিস্তান সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু ভারত কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিতে পারেনি। একই ধরনের অভিযোগের পুনরাবৃত্তিই আজ দেখা যাচ্ছে পেহেলগামের ঘটনায়। ইমরান খানের মতে, ভারতের সরকার এখন আরএসএস-এর উগ্র জাতীয়তাবাদী মতাদর্শে চালিত হচ্ছে, যা কাশ্মীরসহ পুরো অঞ্চলকে দমন-পীড়নের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
কারাগার থেকেই ইমরান খান কাশ্মিরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে দৃঢ়ভাবে সমর্থনের কথা জানান। তিনি বলেন, জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মীরিদের অধিকার রক্ষা করা উচিত। একই সঙ্গে পেহেলগাম হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “ভারতের উচিত প্রকৃত তদন্ত করে দায়ীদের খুঁজে বের করা, পাকিস্তানকে দায়ী করা নয়।” ইমরান খানের এই বক্তব্য পাকিস্তানিদের মধ্যে একটি জাতীয়তাবাদী আবেগ জাগিয়ে তুলেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে এই বার্তা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে বলেও মত কূটনীতিকদের। তথ্যসূত্র : দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল