সম্পাদনা- আহমেদ তৌফিক
সময়ের কণ্ঠস্বর:
আমার জেলা, আমার জন্মস্থান, আমার অহংকার, আমার পরিচিতি । প্রতিটি জেলার মানুষের কাছে তাদের নিজ নিজ জেলাশহর বাদেও অন্য সব জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য, জানা- অজানা কথা, গল্প , সংস্কৃতি কে বিস্তর পরিচিতি দিতেই বাংলাদেশের ৬৪ জেলা নিয়ে আমাদের এই আয়োজন। এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পারেন আপনি নিজেও , আমাদের ফিচারে প্রকাশিত তথ্যের বাইরে আপনার জানা যেকোন নির্ভরযোগ্য তথ্য জানান আমাদের, আমরা সেই তথ্য সংরক্ষন করতে চাই আমাদের লিখায়। জেলাভিত্তিক এই লিখায় ভালো দিকগুলোর পাশাপাশি বিতর্কিত কোন দিক থাকলে সেটাও প্রকাশ করতে চেষ্টা থাকবে আমাদের ।
৬৪ পর্বের ধারাবাহিক লিখার প্রথম পর্বে আজ থাকছে বাংলাদেশের ম্যাপের সবচেয়ে উপরে অবস্থিত হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত উত্তরের শান্ত জনপদ ঠাকুরগাঁও পরিচিতি ।
চলুন তাহলে এনে নেয়া যাক কেমন দেখতে ছোট্ট শহর ঠাকুরগাঁও ?
ঠাকুরগাঁও, নামটি শুনলেই প্রথমেই মনে হতে পারে এটি একটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা কিংবা অসংখ্য ঠাকুর দেবতার সমন্বয় ও আধিপত্যে ভরা এই শহর । হাজার বছরের ইতিহাসে ঠাকুরগাঁও জেলার পুরোনো সব ঐতিহ্যের কাছে হার মানতে বাধ্য দেশের অনেক জেলা শহর।
হিমালয়ের কোল ঘেঁষে অবস্থিত দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। জনশ্রুতি আছে, জেলার টাঙ্গন নদীর তীরবর্তী একটি গ্রাম রাজা গোবিন্দ নারায়ন ঠাকুর তার প্রথম আস্তানা গড়ে তোলেন । ধর্ম চর্চার জন্য তিনি এখানে তৈরি করেন মন্দির ও বিভিন্ন ধর্মশালা। আর এ কারণেই পুরোহিত, সন্ন্যাসী, ও ঠাকুরদের পদভারে পূর্ণ হয়ে উঠে এ গ্রামটি। ক্রমেই এ গ্রামটি পরিচিতি লাভ করে ঠাকূরগ্রাম হিসাবে।
এছাড়া অন্য আরেক ইতিহাস থেকে জানা যায়, জেলাশহর থেকে আট কিলোমিটার দুরে অবস্থিত আচকা ইউনিয়ন । এ ইউনিয়নের একটি গ্রামে বাস করতেন নারায়ন ও সতিশ চক্রবর্তী নামের দুই জমিদার । তাদের বসতবাড়ী ঠাকুরবাড়ী নামে পরিচিত ছিল। ধারনা করা হয় ঠাকুরগ্রাম ও ঠাকুরবাড়ী এ দুটি নাম থেকেই ঠাকুরগাঁও নামের উৎপত্তি।
১৮ হাজার ৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ জেলার উত্তরে পঞ্চগড়, পূর্বে পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলা, দনি ও পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত ।
প্রাচীন কালে এ জেলা ছিল পুন্ড্রবর্ধন জনপদের অংশ।
এ জেলাতেই জোরদার ভাবে সংগঠিত হয়েছিল তেভাগা আন্দোলন। আন্দোলন নস্যাৎ করতে জেলা সদরের একটি বিশাল মিছিলে বৃটিশ সরকারে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ৩৫ জন আন্দোলনকারী। মুক্তিযুদ্ধে এ জেলার ভুল্লি, গরেয়া ও সালন্দরে পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়।
ঠাকুরগাঁয়ের ঐতিহ্য ও প্রাচীন নিদর্শনের মধ্যে অন্যতম রাজা টংকনাথের বাস ভবন, জামালপুরের মসজিদ, গেবিন্দ জিউ মন্দির, হরিনমারির শিবমন্দির, নেকমরদ মাজার ও মসজিদ ।
শহর থেকে ছয় মাইল দূরে অবস্থিত শিবগঞ্জ হাট। এ হাট থেকেই দু’মাইল পশ্চিমে জামালপুর জমিদার বাড়ী জামে মসজিদ। প্রায় দের’শ বছরের পুরানো এ মসজিদটি বাংলাদেশের একটি ব্যতিক্রমী মসজিদ। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদ মুঘল আমলের স্থাপত্য রীতির চিহ্ন বহন করছে। মসজিদের দেয়াল গুলো চার ফুট চওরা। তিরিশটি ছোট ছোট মিনার যেন মসজিদটিকে দিয়েছে নজরকারা সৌন্দর্য্য। এ মসজিদের নির্মান কাজ শেষ হয় আঠার’শ সাতষট্টি সালে ।
টাঙ্গন নদীর তীরে অবস্থিত গোবিন্দজিউ মন্দির । রাজা গোবিন্দ নারায়ন ঠাকুর আনুমানিক ১৭০৭ সালে এ মন্দির নির্মান করেন । এখানে রয়েছে রাধা কৃষ্ণের স্বর্ন মুর্তি ।
ঠাকূরগাঁও এর প্রাচীন নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম রাজা টংকনাথের বাসভবন। এটি রাণীশংকৈল জমিদার বাড়ী নামেও পরিচিত । বৃটিশ সরকারে কাছ থেকে রাজা উপাধী পান জমিদার টংকনাথ। তারপর থেকে এটি রাজবাড়ী নামে পরিচিত। রাণীশংকৈল থানার পূর্বপাশে কুলিক নদীর তীরে মালদুয়ারে রাজা টংকনাথের রাজবাড়ী। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে নির্মিত হয় এ রাজবাড়ী । রাজবাড়ী নির্মানের কাজ শুরু করেন জমিদার বুদ্ধিনাথ চৌধুরি । আর শেষ করেন রাজা টংকনাথ চৌধুরি । বর্তমানে ধ্বংশের শেষপ্রান্তে কালের সাী হয়ে দাড়িয়ে আছে এ রাজবাড়ীটি। তিনতলা এ রাজবাড়ী এখন পুরোপুরি ঝুকিপূর্ণ। রনাবেন করার কেউ নেই । পশ্চিমে সিংহদরজা । দরজার চুড়ায় দিক নির্দেশক হিসাবে লোহার রডে এস.এন.ই.ডাঝ.ঘ.ঊ.ড চিহ্ন অঙ্কিত আছে । রাজ বাড়ীর উত্তর-পূর্ব কোনে কাছারীবাড়ী অবস্থিত । এখানে বসেই রাজা টংক নাথ তার রাজ কার্য পরিচালনা করতেন । পূর্বদিকে রয়েছে দুটি পুকুর ।
ঠাকুরগাঁও জেলার রয়েছে দেশের সব চাইতে বড় আম গাছ । বালিয়াডাঙ্গী থানার মন্ডমালা গ্রাম আম গাছটি অবস্থিত । গাছটির নাম সূর্যপুরী আমগাছ । অসংখ্য শাখাপ্রশাখা নিয়ে গঠিত আম গাছটি দুর থেকে দেখলে মনে হয় একটি আম বাগান । তিন একর জমি জুড়ে রয়েছে এ প্রকান্ড আমগাছটি। গাছটির বেড় ২০ বান । মন্ডুমালা গ্রামের সাইদুর রহমান গাছটির মালিক। গাছটিতে এখনো আমের প্রচুর ফলন হয় ।
ঠাকুরগাঁয়ের সুফি সাধকদের মধ্যে সৈয়দ নাসির উদ্দিন শাহ অন্যতম । বার শতকের শেষে অথবা তের শতকের শুরুতে তিনি এ অঞ্চলে আগমন করেন । বিভিন্ন স্থানে ইসলাম প্রচার করার পর তিনি স্থায়ী ভাবে খানকাহ স্থাপন ভবানন্দপুর গ্রামে । আর এখান থেকেই তিনি এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করেন । তার সদ্বস^ভাব চারিত্রিক মাধুর্য এবং ধর্মপরায়নতায় মুগ্ধ মুরিদরা তাকে “নেকবাবা” বা ”নেকমরদ” বলে ডাকতেন । এরপর তারপ্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এলাকার নাম করন করা হয় নেকমরদ। এখন এলাকাটি নেকমরদ নামেই পরিচিত। আর এখানেই রয়েছে পীর নেকমরদের মাজার শরিফ । পীর নেকমরদের প্রতিষ্ঠিত খানকাহতে প্রতিবছর উরস ও মেলা অনুষ্ঠিত হয় । আগে এ মেলা ১লা বৈশাখে শুরু হয়ে এক মাস ব্যাপি চলত । এখন তা শুরু রাসপূর্ণিমার দিন ।
বালিয়াডাঙ্গী থানা থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে প্রায় চারশ বছরের পুরানো শিব মন্দির । তিরিশ ফুট উচু মন্দিরটি মাটির নীচে বেশ খানিকটা বশে গেছে। দনি দিকে আছে দরজা । আর দরজার লতাপাতার নকশার সাথে ছিল বিভিন্ন দেবদেবির প্রতিকৃতি।
জেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত ঠাকুরগাঁও সুগার মিল। ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ মিলটি এ জেলার একমাত্র ভাড়ি শিল্প হিসেবে পরিচিত।
নামের উৎস সন্ধান : নিশ্চিন্তপুর থেকে ঠাকুরগাঁও
‘নিশ্চিন্তপুর’-নামটিউচ্চারিত হলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে নিশ্চিন্তে বসবাসের উপযোগী কোনো গ্রামবা জনপদের ছবি। কিংবা মনে পড়ে যায় বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী উপন্যাসের‘নিশ্চিন্দিপুর’ গ্রামের কথা। কিন্তু কখনো মনে পড়েনা উত্তরের জনপদঠাকুরগাঁওয়ের কথা। কেননা অনেকদিন আগেই চাপা পড়ে গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের এইনিশ্চিন্তপুর নামটি। কয়েকজন বিত্তশালী মানুষের খোয়ালী ইচ্ছাকে পূরণ করতেসাধারণের প্রিয় জনপদ নিশ্চিন্তপুরকে পাল্টে করা হয় ঠাকুরগাঁও। আর এ ইতিহাসঅজানা রয়েছে বলে নিশ্চিন্তপুর শব্দটি উচ্চারিত হলে কখনো ঠাকুরগাঁওয়ের কথামনে হয় না। তবে ইতিহাস সচেতন মানুষ আজো আবেগ শিহরিত হৃদয়ে ঠাকুরগাঁওয়েরসঙ্গে নিশ্চিন্তপুরের কথা মনে করেন।
ঠাকুরগাঁওয়েরনাম যে নিশ্চিন্তপুর ছিল তার তেমন কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ এতদিন আমাদেরহাতের কাছে ছিল না। জনশ্রুতি ও মৌজার নাম নিশ্চিন্তপুর হওয়ায় অনুমান করাহতো ঠাকুরগাঁও সম্ভবত এক সময়ে নিশ্চিন্তপুর নামে পরিচিত ছিল। কিন্তুসম্প্রতি একটি মানচিত্র আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় এটা সন্দেহাতীতভাবেপ্রমানিত হয়েছে যে ঠাকুরগাঁওয়ের আদি নাম ছিল ‘নিশ্চিন্তপুর’। ১৭ শ শতাব্দীরকোচবিহারের মানচিত্রে সংলগ্ন এলাকার যে অবস্থান দেখানো হয়েছে তাতেঠাকুরগাঁও ও নিশ্চিন্তপুর নামে দু’টি আলাদা জায়গা চিহ্নিত রয়েছে। টাঙ্গননদীর পূর্ব প্রান্তে দেখানো হয়েছে নিশ্চিন্তপুর এবং এরই কিছুটাউত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গন নদীর পশ্চিম প্রান্তে দেখানো হয়েছে ঠাকুরগাঁও। ৪ এ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে টাঙ্গন নদীর পূর্ব প্রান্তের নিশ্চিন্তপুরকেইপরবর্তীতে ঠাকুরগাঁও নাম দিয়ে সদরের নামকরণ করা হয়। আর এর মাধ্যমেইনিশ্চিন্তপুর রূপান্তরিত হয় ঠাকুরগাঁওয়ে। প্রথমে সমগ্র মহকুমা পরিচিত হয়ঠাকুরগাঁও নামে এবং পরে এরই ধারাবাহিকতায় জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের পরিচিতি।
ঠাকুরগাঁওয়েরনামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে আর যা পাওয়া গেছে তাহলো, বর্তমানে যেটি জেলা সদরঅর্থাৎ যেখানে জেলার অফিস-আদালত অবস্থিত সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরেআকচা ইউনিয়নের একটি মৌজায় নারায়ণ চক্রবর্তী ও সতীশ চক্রবর্তী নামে দুই ভাইবসবাস করতেন। সম্পদ ও প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে তারা সেই এলাকায় খুব পরিচিতছিলেন। সেখানকার লোকজন সেই চক্রবর্তী বাড়িকে ঠাকুরবাড়ি বলতেন। পরে স্থানীয়লোকজন এই জায়গাকে ঠাকুরবাড়ি থেকে ঠাকুরগাঁও বলতে শুরু করে। চক্রবর্তীবাবুরা এখানে একটি থানা স্থাপনের প্রয়োজন অনুভব করেন। তাদের অনুরোধেজলপাইগুড়ির জমিদার সেখানে একটি থানা স্থাপনের জন্য বৃটিশ সরকারকে রাজিকরান। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে এখানে একটি থানা স্থাপিত হয়। আর তারনাম দেওয়া হয় ঠাকুরগাঁও থানা। পরবর্তীতে নানা কারণে টাঙ্গন নদীর পূর্বতীরেনিশ্চিন্তপুরে ঠাকুরগাঁও থানা স্থানান্তরিত হয়। আর এই থানাকে কেন্দ্র করে১০টি থানা নিয়ে ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে ঠাকুরগাঁও মহকুমা গঠিত হয়। বর্তমানপঞ্চগড় জেলার ৫টি থানাই তখন ঠাকুরগাঁও মহকুমার অন্তর্গত ছিল। ১৯৮৪খ্রিস্টাব্দের ১লা ফেব্রুয়ারি ৫টি থানা নিয়ে এই ঠাকুরগাঁওয়ের নামবাংলাদেশের মানচিত্রে চিহ্নিত হয় জেলারূপে। জেলারূপে নতুন হলেও জনপদ হিসেবেঠাকুরগাঁওয়ের রয়েছে এক সুপ্রাচীন ইতিহাস।
প্রাগৈতিহাসিক কালে সমুদ্রগর্ভে ছিল বাংলাদেশ নামের এই বদ্বীপটি। বিপুল জলরাশিতে নিমজ্জিত এই ভূখন্ডটি কালপ্রবাহে জেগে ওঠে। তবে এর যে এলাকাটি সমুদ্রের তলদেশ থেকে সবার আগে উঠে আসে তাহলো, হিমালয়ের পাদদেশ ও তার সংশ্লিষ্ট অঞ্চল। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল বিশেষকরে বৃহত্তর দিনাজপুরের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা সমুদ্র গর্ভের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসে তাই অনেক আগে। আর এজন্যই এই এলাকার মানুষ সভ্যতার পথে হাঁটতে শুরু করেছে অপেক্ষাকৃত আগে থেকেই। তাই প্রাচীন সভ্যতার কোনো নিদর্শন যদি খুঁজে পেতে চাই তাহলে তার সন্ধান করতে হবে প্রাচীন জনপদ ঠাকুরগাঁও ও সংলগ্ন এলাকাতেই। বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের কাছাকাছি নেপালের রাজদরবার থেকে। নিশ্চয়ই নেপালীরা চর্যাপদের পদ রচনা করেন নি, রচনা করেছেন বাংলা ভাষাভাষী মানুষ এবং তা অবশ্যই সংলগ্ন এলাকার কোনো মানুষ। কেননা সে সময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ছিলনা বলে দূরের কোনো কিছু পাওয়া বা সংগ্রহ করা দুস্কর ছিল। তাই চর্যাপদ যে নেপালেরই কাছাকাছি কোনো বাংলা ভাষাভাষী এলাকার সম্পদ তাতে বোধহয় সন্দেহ থাকার কথা নয়। আবার দেখা যায় যে, ঠাকুরগাঁও ও সংলগ্ন এলাকার মানুষের মুখের ভাষার সঙ্গে চর্যাপদের ভাষার যথেষ্ট মিল রয়েছে। চর্যাপদে বর্ণিত সমাজচিত্র থেকে এবং এলাকার বর্ণনা থেকে অনেক কিছুই পাওয়া যায় যার কারণে একে ঠাকুরগাঁও ও আশে-পাশের অঞ্চলের পদকারদের সৃষ্টি বলে ধরে নিতে খুব একটা অসুবিধা হয়না। এছাড়া গোরক্ষনাথ বলে চর্যাপদের যে পদকর্তা রয়েছেন তাঁর সঙ্গে ঠাকুরগাঁওয়ের সংশ্লিষ্টতা অনেকেই সমর্থন করেছেন। তথ্য প্রমাণের স্বল্পতার কারণে চর্যাপদের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও ও সংলগ্ন এলাকার সম্পর্কটি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ব্যাপক গবেষণা ও অনুসন্ধান করা সম্ভব হলে অনেক তথ্য প্রমাণ সংগৃহীত হবে এবং তখনই এ ব্যাপারে যে সংশয় রয়েছে তা দূর হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।ঠাকুরগাঁও ও সন্নিহিত এলাকাকে চর্যাপদ রচনার এলাকা বলে রাষ্ট্রীয়ভাবেও উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ঠাকুরগাঁও সম্প্রচার কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণে তদানীন্তন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমাদের মাতৃভাষার সাহিত্যরূপের প্রথম প্রকাশও ঘটে ঠাকুরগাঁও এবং এর সন্নিহিত অঞ্চলে। এই ভূমিতেই রচিত হয়েছিল চর্যাপদের কয়েকটি পদ’’। কাজেই ঠাকুরগাঁও যে সুপ্রাচীন ইতিহাসে সমৃদ্ধ একটি জনপদ তা বলতে বোধহয় কোনো দ্বিধাই নেই।
ইতিহাস সমৃদ্ধ এই জনপদটিতে ছড়িয়ে আছে প্রাচীন সভ্যতার বহু মূল্যবান সম্পদ। হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম সভ্যতার অসংখ্য প্রাচীন নিদর্শনে পরিপূর্ণ ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন অঞ্চল। এখানে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে আছে অজস্র প্রত্নসম্পদ। মাটি খুঁড়লেই এখানে এখনো পাওয়া যায় প্রাচীন অট্টালিকার ধবংসাবশেষ সহ বহু মূল্যবান পুরাকীর্তি। কিন্তু পরিকল্পিত সংরক্ষণ, অধ্যয়ণ ও গবেষণা কাজের অভাবে বাংলার প্রাচীনতম জনপদ পুন্ড্র-বরেন্দ্রর কেন্দ্রস্থল ঠাকুরগাঁওয়ের ইতিহাস আজো অনাবিষ্কৃত আছে। আর্য আগমনের বহু আগে থেকেই এই ঠাকুরগাঁও অঞ্চলসহ সমগ্র বৃহত্তর দিনাজপুর জেলায় ছিল সভ্য মানুষের বসবাস। আর এই অনুমান যে অযৌক্তিক নয় তার প্রমাণ হলো, অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার বাণগড়ে বা কোটিবর্ষে (বর্তমানে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের গঙ্গারামপুরে) প্রস্তর যুগের বহু নিদর্শন প্রাপ্তি। এছাড়া অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার অংশ এবং ঠাকুরগাঁওয়ের কাছাকাছি অবস্থিত কোটিবর্ষের সঙ্গে ভূমিগত দিক থেকে এ এলাকার কোনো তফাৎ নেই। সেখানে যদি প্রস্তর যুগের নিদর্শন পাওয়া যেতে পারে তবে স্বাভাবিকভাবেই ঠাকুরগাঁওয়েও এ ধরণের প্রত্নবস্ত্ত পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এখনো ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে পুকুর-দিঘি খননের সময় অসংখ্য প্রাচীন মূর্তি পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে পাথরের বুদ্ধ মূর্তি ও বিষ্ণু মূর্তির সংখ্যাই বেশি। ১৯৮৪ সালে ঠাকুরগাঁও সদর থানার রাজাগাঁও গ্রাম থেকে কিছু প্রাচীন মুদ্রা পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে ২১টি প্রাচীন মুদ্রা স্থানীয় ট্রেজারিতে জমা করা হয়। মুদ্রাগুলোতে যে লিপি খোদিত আছে তার পাঠোদ্ধার করা সম্ভব না হলেও অনেকে অনুমান করছেন, মুদ্রাগুলো বৌদ্ধ কিংবা সুলতান আমলের। কিন্তু দু:খের বিষয় এই যে, মূল্যবান এই প্রাচীন মুদ্রাগুলো সম্পর্কে পরবর্তীতে আর কিছু জানা যায়নি। উদ্ধার করার চেষ্টা করা হয়নি এর গর্ভে লুকিয়ে থাকা ইতিহাসকে। তাই বলা যেতে পারে যে ছড়িয়ে থাকা ও লুকিয়ে থাকা প্রত্ন সম্পদের উদ্ধার কাজের অভাবে এবং প্রত্নকীর্তির সংরক্ষণ, অধ্যয়ন ও গবেষণা কাজের অভাবে ঠাকুরগাঁওয়ের সাংস্কৃতিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদের সঠিক তথ্য আজো পুরোপুরি উদঘাটিত হয়নি। ফলে ঠাকুরগাঁওয়ের ইতিহাস আজো রয়েছে অন্ধকারের গহবরে। তবুও ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় বিক্ষিপ্তভাবে ইতিহাস অনুসন্ধানের কাজ কিছু হয়েছে বলেই ঠাকুরগাঁওয়ের নিকট অতীতের বিক্ষিপ্ত ইতিহাসকথা শোনা যায় মানুষের মুখে মুখে। তবে তার সবটাই অসম্পূর্ণ, বিচ্ছিন্ন ও জনশ্রুতি নির্ভর।
আনুমানিক চার হাজার বছর আগে এই উপমহাদেশে আর্যদের আগমন ঘটে। তবে বাংলাদেশে আর্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় মাত্র ২২০০ বছর আগে। আর তা ঘটেছিলো সম্রাট অশোকের মাধ্যমে। সম্রাট অশোকের আগে কোনো আর্যশক্তি বাংলাদেশ অধিকারে সক্ষম হয়নি। কিন্তু যদি অশোককে আর্য বলে না ধরা হয় তবে বাংলার মাটিতে আর্য অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাস খ্রিস্টিয় চতুর্থ শতকে গুপ্ত আমলের। সম্রাট অশোক যে পুন্ড্ররাজ্য অধিকার করেছিলেন মহাস্থানগড়ে প্রাপ্ত ব্রাহ্মিক্ষিলিপিতে খোদিত শিলাখন্ডলিপি, ছাঁচে ঢালা ও ছাপযুক্ত মুদ্রা (Punch marked and cast coin) এবং এন.বি.পি পাত্রে তা প্রমাণ পাওয়া যায়। ঠাকুরগাঁওসহ বৃহত্তর দিনাজপুর জেলায় অশোকের আমলের কোনো প্রত্নকীর্তির চিহ্ন আজো পাওয়া যায়নি। তবে ঠাকুরগাঁও যে তদানীন্তন পুন্ড্ররাজ্যের অংশ ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অশোকের পরে বেশ কয়েকশ’ বছরের ইতিহাসের হদিস পাওয়া যায়না।
গুপ্তদের ইতিহাস সুস্পষ্ট। খ্রিস্টিয় চতুর্থ শতকে পুন্ড্ররাজ্য তথা বাংলাদেশ গুপ্তদের অধিকারে আসে। সে সময়ে দিনাজপুরের কোটিবর্ষ ছিল পুন্ড্ররাজ্য তথা বাংলাদেশের একটি বিষয়ে সদর দপ্তর। আর একটি বিষয়ে কেন্দ্রস্থল ছিল পঞ্চনগরী। এই পঞ্চনগরীর অবস্থান বর্তমান দিনাজপুর জেলার চরকাই, বিরামপুর, চন্ডীপুর ও গড় পিঙ্গলাই এলাকায় বলে ঐতিহাসিকেরা অনুমান করেন। গুপ্ত আমলের বেশ কিছু তাম্রলিপি আবিষ্কৃত হয়েছে বর্তমান দিনাজপুর জেলা থেকে। ফুলবাড়ি থানার দামোদরপুরে পাঁচখানা এবং হিলির বৈগ্রামে একখানা তাম্রলিপি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বৈগ্রামের তাম্রলিপিটি বেশ প্রাচীন। এটি সম্রাট কুমার গুপ্তের সময়ের (৪৪৭-৪৮ খ্রি:)। ঐতিহাসিক আ.কা.মো যাকারিয়া দিনাজপুর জেলায় গুপ্ত আমলের প্রাচীন কীর্তির নিদর্শন সমৃদ্ধ এলাকার নাম উল্লেখ করতে গিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল থানার নেকমরদের নামও উল্লেখ করেছেন। এ থেকে অনুমান করা অসঙ্গত হবে না যে, বর্তমান ঠাকুরগাঁও জেলায় গুপ্ত আমলের ইতিহাস ছড়িয়ে আছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব
| সুবেদার আহমেদ হোসেন | পটিয়া, চট্টগ্রাম |
১৯২৬ জন্ম
২০০৯ মৃত্যু |
মুক্তিযুদ্ধ | |
| ০২ | মুহম্মদ দবিরুল ইসলাম | বালিয়াডাঙ্গী উপজেলাধীন বামুনিয়া গ্রামে জন্ম লাভ করেন |
১৯২২ জন্ম
১৯৬১ মৃত্যু |
রাজনৈতিক |
| ০৩ | মির্জা রুহুল আমিন | আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে |
১৯২১ জন্ম
১৯৯৭ মৃত্যু |
রাজনৈতিক |
| ০৪ | মোঃ রেজওয়ানুল হক (ইদু) চৌধুরী | ঠাকুরগাঁও উপজেলার ছোট বালিয়া নামক গ্রামে | – | রাজনৈতিক |
| ০৫ | আলহাজ নূরুল হক চৌধুরী |
১৯০২ জন্ম
১৯৮৭ মৃত্যু |
রাজনৈতিক | |
| ০৬ | আবু মোজাফ্ফর ইবনে জাহিদ মোহাম্মদ ইউসুফ | রাণীশংকৈল উপজেলার বনগাঁও গ্রামে | ১৯৭৭ মৃত্যু | রাজনৈতিক |
| ০৭ | হাজী কমরুল হুদা চৌধুরী | সদর উপজেলার সালন্দর গ্রামে |
১৯০৮ জন্ম
১৯৯১ মৃত্যু |
সমাজ সেবক |
| ০৮ | খোরশেদ আলী আহমদ | পীরগঞ্জ উপজেলার ভোমরাদহ গ্রামে |
১৯০৬ জন্ম
২০০১ মৃত্যু |
সমাজ সেবক |
| ০৯ | আব্দুর রশিদ মিঞা | বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পারুয়া গ্রামে |
১৯২৮ জন্ম
২০০৫ মৃত্যু |
রাজনৈতিক |
| ১০ | মো: ফজলুল করিম | ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের কানিকশালগাঁও গ্রামে | ১৯২৭ জন্ম | রাজনৈতিক |
| ১১ | সৈয়দা জাহানারা | সমাজ সেবক | ||
| ১২ | ইঞ্জিনিয়ার ইজাব উদ্দিন আহমেদ | বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহিষমারী গ্রামে | ১৯১৯ জন্ম | সমাজ সেবক |
| ১৩ | মাওলানা হাফিজ উদ্দীন আহমদ | ঠাকুরগাঁও উপজেলার সৈয়দপুর দানারহাট গ্রামে | ১৯৮৪ মৃত্যু | রাজনৈতিক |
উপজেলাসমূহঃ
উপজেলার সংখ্যা- ৫ টি; উপজেলাসমূহ- ঠাকুরগাঁও সদর, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী, ও হরিপুর। পৌরসভার সংখ্যা- ৩ টি; পৌরসভা সমূহ- ঠাকুরগাঁও সদর, রাণীশংকৈল ও পীরগঞ্জ।
ইউনিয়সমূহঃ
সদর উপজেলা- রম্নহিয়া, আখানগর, আকচা, বড়গাঁও, বালিয়া, আউলিয়াপুর, চিলারং, রহিমানপুর, রায়পুর, জামালপুর, মোহম্মাদপুর, সালন্দর, গড়েয়া, রাজাগাঁও, দেবীপুর, নারগুন, জগন্নাথপুর, শুখানপুকুরী ও বেগুন বাড়ী, ঢোলার হাট, রুহিয়া পশ্চিম।
পীরগঞ্জ উপজেলা- সৈয়দপুর, ভোমরাদহ কোষারাণীগঞ্জ, খনগাঁও, পীরগঞ্জ, হাজীপুর, দৌলতপুর, সেনগাঁও, জাবর হাট ও বৈরচনা।
বালিয়য়াডাঙ্গী উপজেলা- পাড়িয়া, চাড়োল, ধনতলা, বড়পলাশ বাড়ী, দুওসুও, ভানোর, আমজানখোর ও বড়বাড়ি।
রাণীশংকৈল উপজেলা- ধর্মগড়, নেকমরদ, হোসেনগাঁও, লেহেম্বা, বাচোর, কাশিপুর, রাতোর ও নন্দুয়ার।
হরিপুর উপজেলা- গেদুড়া, আমগাঁও, বকুয়া, ডাঙ্গীপাড়া, হরিপুর ও ভাতুরিয়া।
| নাম | কিভাবে যাওয়া যায় | অবস্থান |
|---|---|---|
| ফানসিটি বিনোদন ও শিশু পার্ক, | পীরগঞ্জ উপজেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্র পৌর অফিসের বিপরীতে পীরগঞ্জ__বীরগঞ্জ রাস্তার উত্তর পার্শ্বে (পুরাতন আরডিআরএস মোড়) বিনোদন পার্ক ফানসিটি অবস্থিত ।ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, বীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল থেকে সরাসরি সড়ক পথে ফানসিটি যাওয়া যায় । | পীরগঞ্জ শহরের প্রাণ কেন্দ্র পৌর অফিসের বিপরীতে পীরগঞ্জ — বীরগঞ্জ সড়কের উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত। |
| জগদল বিরেন্দ্র নাথ চৌধুরীর পরিত্যাক্ত রাজবাড়ি | উপজেলা সদর হতে নেকমরদ জাতীয় মহাসড়ক ৯ কিঃ মিঃ, নেকমরদ হতে কাদিহাট বটতলী পাকা রাম্তা ৫ কিঃ মিঃ এবং বটতলী হতে কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে জগদল রাজবাড়ি কাঁচা রাস্তা ৬ কি: মি: | ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় নাগর ও তীরনই নদীর মিলনস্থলে এবং জগদল বি.ও.পি ক্যাম্প সংলগ্ন বীরেন্দ্র নাথ চৌধুরীর পরিত্যাক্ত রাজবাড়িটি অবস্থিত। |
| রামরাই (রাণীসাগর) | ঢাকা থেকে বাস যোগে ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় আসতে হবে। তারপরে বাস,ট্রাক,মোটর সাইকেল, বাইসাইকেল,ভ্যান ও রিক্সা যোগে আসা যায়। ভ্যান ও রিক্সা ভারা (১৫-২০)টাকা। | উপজেলা সদর থেকে ৪ কিঃ মিঃ দূরত্ব উত্তরগাঁও গ্রামের নিকটেই বরেন্দ্র অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তর জলাশয় রামরাই দিঘী। |
| খুনিয়া দিঘী স্মৃতি সৌধ | ঢাকা থেকে বাস যোগে ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় আসতে হাবে। তারপরে বাস,মাইক্রোবাস,মটরসাইকেল,ভ্যান-রিক্সা ইত্যাদিযোগে যাওয়া যায়। | উপজেলা সদর থেকে মাএ সিকি মাইল দক্ষিণে পাকা রাস্তার সংলগ্ন খুনিয়া দিঘী।হোসেনগাও ইউনিয়ন পরিষদ পুরাতন অফিস সলগ্ন |
| রাণীশংকৈল (রাজা টংকনাথের) জমিদার বাড়ী | রাণীশংকৈল উপজেলা সদর থেকে ১ কি:মি: দূরে অবস্থিত | |
| হরিপুর জমিদার বাড়ী | হরিপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত | |
| রাণী সাগর | রাণীশংকৈল উপজেলা সদর থেকে ৪ কি:মি: দূরে অবস্থিত | |
| গোরক্ষনাথ মন্দির | রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নে অবস্থিত | |
| রাজভিটা | পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের হাটপাড়া নামক স্থানে অবস্থিত | |
| রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি | রানীশংকৈল উপজেলার পূর্বপ্রান্তে কুলিক নদীর তীরে অবস্থিত | |
| হরিপুর রাজবাড়ি | হরিপুর উপজেলার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত | |
| জগদল রাজবাড়ি | রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিমে জগদল নামক স্থানে অবস্থিত | |
| মহালবাড়ি মসজিদ | ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলা হতে উত্তরে মীরডাঙ্গী থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে মহেশপুর গ্রামে অবস্থিত | |
| জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ | ঠাকুরগাঁও শহর থেকে পীরগঞ্জ যাওয়ার পথে বিমান বন্দর পেরিয়ে শিবগঞ্জ হাটের তিন কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত | |
| শালবাড়ি মসজিদ ও ইমামবাড়া | ঠাকুরগাঁও উপজেলার পশ্চিমে ভাউলারহাটের নিকটে শালবনে অবস্থিত | |
| সনগাঁ শাহী মসজিদ | বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কালমেঘ হাট থেকে দু কিলোমিটার উত্তরে সনগাঁ নামক গ্রামে অবস্থিত | |
| মেদিনীসাগর জামে মসজিদ | হরিপুর উপজেলার উত্তরে মেদিনীসাগর গ্রামে মেদিনীসাগর জামে মসজিদটি অবস্থিত | |
| গেদুড়া মসজিদ | হরিপুর উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়নে অবস্থিত | |
| গোরক্ষনাথ মন্দির কূপ ও শিলালিপি | রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিমে গোরকুই নামের একটি গ্রামে অবস্থিত | |
| হরিণমারী শিব মন্দির | বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে দশ কিলোমিটার দূরে উত্তর পশ্চিমদিকে হরিণমারী হাটের উপর শিবমন্দিরটি অবস্থিত | |
| হরিপুর রাজবাড়ি শিব মন্দির | হরিপুর উপজেলার কেন্দ্রস্থলে ছোট তরফের রাজবাড়ির সামনে অবস্থিত | |
| গোবিন্দনগর মন্দির | ঠাকুরগাঁও শহরে টাঙ্গন নদীর পশ্চিম তীরে কলেজপাড়ায় গোবিন্দনগর মন্দিরটি অবস্থিত | |
| ঢোলরহাট মন্দির | ঠাকুরগাঁও শহর থেকে নয় কিলোমিটার দূরে রুহিয়া যাওয়ার পথে ঢোলরহাট নামক স্থানে অবস্থিত | |
| ভেমটিয়া শিবমন্দির | পীরগঞ্জ পৌরসভা থেকে দেড় কিলোমিটার পূর্বে ভেমটিয়া নামক স্থানে শিব মন্দিরটি অবস্থিত | |
| মালদুয়ার দুর্গ | রানীশংকৈল উপজেলা হতে এক কিলোমিটার দক্ষিণে প্রাচীন দুর্গটি অবস্থিত | |
| গড়গ্রাম দুর্গ | রানীশংকৈল উপজেলার প্রায় তের মাইল উত্তরে নেকমরদ হাট ও মাজার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার উত্তরে গড়গ্রামে দুর্গের ধ্বংসাবশেষটি অবস্থিত | |
| বাংলা গড় | রানীশংকৈল উপজেলা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার উত্তরে এবং নেকমরদ থেকে প্রায় পাঁচকিলোমিটার পূর্বদিকে কাতিহার-পীরগঞ্জ যাওয়ার পথে এটি অবস্থিত | |
| গড় ভবানীপুর | হরিপুর উপজেলা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে ভারতীয় সীমান্তের সন্নিকটে ভাতুরিয়া নামক গ্রামে অবস্থিত | |
| গড়খাঁড়ি দুর্গ | বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বেলতলা গ্রামে গড়খাঁড়ি দুর্গটি অবস্থিত | |
| কোরমখান গড় | ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় এগার কিলোমিটার উত্তরে টাঙ্গন ব্যারেজ থেকে দু’কিলোমিটার পূর্বে কোরমখান গড় অবস্থিত | |
| সাপটি বুরুজ | ঠাকুরগাঁও উপজেলার ভুল্লীহাট থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে সাপটি বুরুজ অবস্থিত | |
| বাসনাহার আদর্শ গ্রাম পুকুর | উপজেলা থেকে বাসে অথবা ভ্যানে | বাসনাহার আদর্শ গ্রাম ,ওয়ার্ড নং ০৩,লেহেম্বা ইইপ, রানীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও। |
| পীর নাছিরউদ্দীন শাহ্ এর মাজার শরীফ। | ১)রাণীশংকৈল উপজেলা হইতে উত্তরে হাইওয়ে রাস্তা ১০কি:মি: পরে নেকমরদ । রাণীশংকৈল হতে বাস, অটোরিক্সা যোগে নেকমরদ যাওয়া যায়। নেকমরদ চৌরাস্তার পূর্বে মাজার শরীফটির অবস্থান। | নেকমরদ চৌরাস্তার পূর্ব পার্শে মাজার শরীফটির অবস্থান। |
| বাংলাগড় | ঠাকুরগাও জেলা হতে পশ্চিমে ৪০কি:মি: পাকা রাস্তা রাণীশংকৈল উপজেলা, আবার রাণীশংকৈল উপজেলা হতে উত্তরে নেকমরদ ১০কি:মি:, নেকমরদ হতে বাংলাগড় ৭কি:মি: পুবে। | গ্রাম:বাংলাগড়, ডাক:বাংলাগড়, উপজেলা:রাণীশংকৈল, জেলা:ঠাকুরগাঁও |
| গোরকই মন্দির । | ২)রাণীশংকৈল উপজেলা হইতে উত্তরে হাইওয়ে রাস্তা ৮কি:মি: কুমোড়গঞ্জ মোড়। কুমোড়গঞ্জ মোড় হতে পশ্চিমে কাঁচা রাস্তায় ৪কি:মি: দূরে গোরকই মন্দিরের অবস্থান। | ২) নেকমরদ ইউপির ৯নং ওয়ার্ডে গোরকই গ্রামে মন্দিরটির অবস্থান। |
| ছোট রাণীদিঘী | রাণীশংকৈল থেকে ভ্যান , সাইকেল, পায়ে হেটে যাওয়া যায়। | রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের শিয়াল ডাঙ্গীতে অবস্থিত |
| রাজভিটা | জাবরহাট বাজার হতে বাসে অথবা ভেনে অথবা যে কোন যানবাহানে অতি সহজে রাজভিটা যাওয়া যায় । অবস্থান হাটপাড়া ইউনিয়ন জাবরহাট । | অবস্থান হাটপাড়া ইউনিয়ন জাবরহাট । |
| শ্রী শ্রী গঙ্গা স্নান মন্দির: | জাবরহাট বাজার হতে পায়ে হাটে অথবা ভেনে অথবা গাড়িতে করে যাওয়া যায় । | জাবরহাট গ্রামের খাড়িপাড়া সংল্গন্ন |
| রনশিয়া চন্দ্রা ও দানাজপুর বর্ডার | বিশ্ব রোডের পার্শ্বেই সুতরাং যে কোন পরিবহনে যাওয়া যায় ।জাবরহা ইউ.পি. ভবন হতে ৭ কি,মি পশ্চিমে রনশিয়া চন্দ্রা দানাজপুর বর্ডার অবস্থিত ।এই স্থানটি রনশিয়া গ্রামেই অবস্থিত । | বিশ্ব রোডের পার্শ্বেই সুতরাং যে কোন পরিবহনে যাওয়া যায় ।জাবরহা ইউ.পি. ভবন হতে ৭ কি,মি পশ্চিমে রনশিয়া চন্দ্রা দানাজপুর বর্ডার অবস্থিত ।এই স্থানটি রনশিয়া গ্রামেই অবস্থিত । |
| বলাকা উদ্যান বা কুমিল্লা হাড়ি বিনোদন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট | বলাকা উদ্যান বা কুমিল্লা হাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের দক্ষিন-পূর্বে প্রায় ৬.০০ কি.মি. দূরে জগন্নাথপুর ইউনিয়নে অবস্থিত । সত্যপীর ব্রীজ বা বাস টার্মিনাল হতে এখানে বাস যোগে বা ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সাযোগে বড় খোচা বাড়ী থেকে ০.৫ কিলো পর গৌরীপূর নামক স্থান থেকে দক্ষিন দিকে ০.৫ কিলো দুরত্ব গেলেই বলাকা উদ্যান বা কুমিল্লা হাড়ি যাওয়া যায় । | ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের দক্ষিন-পূর্বে প্রায় ৬.০০ কি.মি. দূরে জগন্নাথপুর ইউনিয়নে অবস্থিত |
এক নজরে ঠাকুরগাঁও
আয়তনঃ ১,৭৮১.৭৪ বর্গ কিলোমিটার অথবা ৬৮৭.৯৩ বর্গ মাইল।
জনসংখ্যাঃ জনসংখ্যা- ১৩,৮০,০০০ জন, পুরম্নষ- ৬,৯৭,০০০ জন, মহিলা- ৬,৮৩,০০০ জন, আদিবাসি জনসংখ্যা- ১২,২২৯ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব- প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৭৬২ জন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার- ১.৪৮%। জনগোষ্ঠী- মুসলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান। নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী- মুণ্ডা, বোর্ডো, সাঁওতাল, ওড়াঁও, কোচ, পলিয়া, রাজবংশী, হো, মাহতোমালো, কুমার, হাড়ি, ভুঁইয়া, গাংঘু প্রভৃতি।
জলবায়ুঃ জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৩.৫০ সে. ও সর্বনিমণণ ১০.০৫০ সে.। গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২,৫৩৬ মি:মি:।
প্রাশাসনিক কাঠামোঃ উপজেলার সংখ্যা- ৫ টি ও থানা-৬ টি; উপজেলাসমূহ- ঠাকুরগাঁও সদর, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী, ও হরিপুর,থানা-রুহিয়া। পৌরসভার সংখ্যা- ৩ টি; পৌরসভা সমূহ- ঠাকুরগাঁও সদর, রাণীশংকৈল ও পীরগঞ্জ। ইউনিয়নের সংখ্যা- ৫৩ টি, মৌজার সংখ্যা- ৬৪৭ টি, গ্রামের সংখ্যা- ১,০১৬ টি।
ইউনিয়সমূহঃ সদর উপজেলা- রুহিয়া, আখানগর, আকচা, বড়গাঁও, বালিয়া, আউলিয়াপুর, চিলারং, রহিমানপুর, রায়পুর, জামালপুর, মোহম্মাদপুর, সালন্দর, গড়েয়া, রাজাগাঁও, দেবীপুর, নারগুন, জগন্নাথপুর, শুখানপুকুরী, বেগুন বাড়ী, রুহিয়া পশ্চিম ও ঢোলার হাট। বালিয়য়াডাঙ্গী উপজেলা- পাড়িয়া, চাড়োল, ধনতলা, বড়পলাশ বাড়ী, দুওসুও, ভানোর, আমজানখোর ও বড়বাড়ি। হরিপুর উপজেলা- গেদুড়া, আমগাঁও, বকুয়া, ডাঙ্গীপাড়া, হরিপুর ও ভাতুরিয়া। রাণীশংকৈল উপজেলা- ধর্মগড়, নেকমরদ, হোসেনগাঁও, লেহেম্বা, বাচোর, কাশিপুর, রাতোর ও নন্দুয়ার। পীরগঞ্জ উপজেলা- সৈয়দপুর, ভোমরাদহ কোষারাণীগঞ্জ, খনগাঁও, পীরগঞ্জ, হাজীপুর, দৌলতপুর, সেনগাঁও, জাবর হাট ও বৈরচনা।
হাট-বাজার ও মেলাঃ প্রধান প্রধান হাট-বাজার সমূহ- শিবগঞ্জ বাজার, খোচাবাড়ী হাট, রম্নহিয়া রামনাথ হাট, গড়েয়া হাট, কালমেঘ হাট, যাদুরানী হাট, ফাড়াবাড়ী হাট, বেগুনবাড়ী হাট, লাহিড়ী হাট। মেলাসমূহ- কালিমেলা, রম্নহিয়া আজাদ মেলা, নেকমরদ মেলা।
দর্শনীয় স্থান ও পুরাকীর্তিঃ রাণীশংকৈল জমিদারবাড়ি, হরিপুর জমিদারবাড়ি, রামরাই দিঘী, খুনিয়া দিঘী, নাথ মন্দির, জামাল পুর জামে মসজিদ, প্রচীন রাজভিটা, জগদল রাজবাড়ি, প্রাচীন জনপদ নেকমরদ, মহালবাড়ী মসজিদ, শালবাড়ী মসজিদ ও ইমামবাড়া, সনগাঁও শাহী মসজিদ, ফতেহপুর মসজিদ, মেদিনী সাগর জামে মসজিদ, গেদুড়া মসজিদ, গোরক্ষনাথ মন্দির ও তৎসংলগ্ন কুপ ও শিলালিপি, হরিণমারী শিবমন্দির, গোবিন্দ নগর মন্দির, খোলা হাট মন্দির, কোরম খানের গড়, বলাকা উদ্যান, টাঙ্গন ব্যারেজ, শাপলা পেয়ালা দীঘি, খুরম্নম খুয়া দীঘি, রাজা টঙ্কনাথের রাজ বাড়ী, বালিয়াডাঙ্গীর ঐতিহ্যবাহী সূর্যপুরী আমগাছ, মালদুয়ার জমিদারবাড়ি, বাংলাগড়।
ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধঃ সেক্টর নম্বর- ৭, তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা- ১,৭৩০ জন, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা- ৩৭৩, প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা- মোহাম্মদ আলী, বদ্ধভূমি/গণকবর- ১৮ টি, শত্রম্নমুক্ত হয়- ৩রা ডিসেম্বর।
উলেস্নখযোগ্য সৌধ, স্তম্ভ, মিনারঃ জেলা প্রশাসন, ঠাকুরগাঁও এর উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ ‘অপরাজেয়৭১’ এবং সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের ম্যূরাল ‘সূর্যসন্তান’ নির্মিত হয়। এ ছাড়া রয়েছে ঠাকুরগাঁও সরকারী কলেজস্থ শহীদ মিনার, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসত্মম্ভ।
শিক্ষা: সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়- ৪১৯ টি, রেজি: বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়- ৪৪৬ টি, কেজি স্কুল- ৬৫ টি, উচ্চ বিদ্যালয়- ৪১৯ টি, মাদ্রাসা- ১৫৯ টি, মহাবিদ্যালয়- ৪৫ টি, পিটিআই-১ টি, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট- ১ টি, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র- ১ টি, কমিউনিটি বিদ্যালয়- ৪১ টি। শিক্ষার হার- ৪৯.৪৩%, স্বাক্ষরতার হার- ৫২%।
স্বাস্থ্যঃ সদর হাসপাতাল- ১ টি, বক্ষব্যাধি ক্লিনিক- ১ টি, নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার- ১ টি, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র- ১৩ টি, কমিনিউটি ক্লিনিক- ১৩৭ টি, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র- ১টি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র- ৪৬ টি, বেসরকারী ক্লিনিক- ১৭ টি।
খাদ্যঃ চাহিদা- ২,২০,৯৪৩ মে:টন, উৎপাদন- ৫,১৩,৩২৮ মে:টন, খাদ্য উদ্বৃত্ত- ২,৯২,৩৮৫ মে:টন। এলএসডি- ১২ টি, ধারণক্ষমতা- ২,৮০,০০০ মে:টন।
শিল্প প্রতিষ্ঠান: ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান- ১ টি (ঠাকুরগাঁও সুগার মিল, উৎপাদন ÿমতা- ১৫,২৪০ মে:টন, মিলের জমির পরিমাণ- ২,৮৮৭.০২ একর)। মাঝারী শিল্প- ১৪ টি (কোল্ড ষ্টোরেজ- ১০ টি), হালকা শিল্প- ২,৬৩৮ টি, কুটির শিল্প- ৯,১৬৫ টি, বিসিক শিল্প নগরী- ১ টি।
কৃষিঃ কৃষি বস্নকের সংখ্যা- ৯৫ টি, কৃষি পরিবারের সংখ্যা- ১,৬২,৩৬৫ টি। মোট আবাদী জমি- ১,৫৩,১০২ হে:, বসতবাড়ী, প্রতিষ্ঠান ও বাজার-১,৫৪৩ হে:, বনভূমি- ২,১১৭ হে:, জলাভূমি- ৩,৩৫৭ হে:, ফলবাগান- ৬,০০০ হে:। ফসলের ঘনত্ব- ২৩০%, এক ফসলী- ৯,৬০৩ হে:, দো ফসলী- ৯৬,১৮৬ হে:, তে ফসলী- ৪৬,৬১৩ হে:। উচুঁ জমি- ৯১,২১০ হে: (৫৩%), মাঝারী উঁচু- ৫৫,৬৬০ হে: (৩৭%), মাঝারী নিচু- ১৫,৭৭২ হে: (১০%), নিচু- ৪৬০ হে:। নার্সারী- সরকারী ৫ টি ও বেসরকারী ১৬০ টি। গভীর নলকূপ- ১,১৪২ টি, অগভীর নলকূপ- ৩৮,৯৩১ টি, এলএলপি- ৯ টি, সেচের আওতাভুক্ত জমি- ১,২২,৪৮০ হে:, সেচ বহির্ভূত জমি- ৩০,৬২২ হে:, ভূগর্ভস্থ সেচ নালা- ১,০৭৯ টি। কৃষি গবেষণা কেন্দ্র- ১ টি। ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র- ১ টি।
মৎস্য সম্পদঃ পুকুরের সংখ্যা- ১৩,১২৮ টি, আয়তন- ৫,২২৫ হে:, সরকারী পুকুর- ৬৫৩ টি ও বেসরকারী পুকুর- ১২,৪৭৫ টি। মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার- সরকারী ১ টি ও বেসরকারী ২ টি। পোনার চাহিদা- ৪.৭১ কোটি, পোনা উৎপাদন- ২.১৫ কোটি। বিল- ৪০ টি, আয়তন- ১,৫২৪ একর। নদী ও অন্যান্য- ১৯ টি, আয়তন- ২,৭৮১ একর। মাছ উৎপাদন- ১৬,৫৭৩.৪৪ মে:টন। মাছের ঘাটতি- ৫,৫৮৯ মে:টন। মৎস্য চাষী- ১২,২০৫ জন। মৎস্যজীবী ৩,০২১ জন, পোনা ব্যাবসায়ী- ৬৯০ জন। মৎস্য আড়তের সংখ্যা- ১১ টি।
বনঃ থুমনিয়া শালবাগান, আয়তন- ৫০৩.৬২ একর। শাগুনী শালবাগান, আয়তন -১৫২.৩২ একর।
তথ্য ও প্রযুক্তিঃ ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র- ৫৩ টি, উপজেলা ই-কমিউনিটি সেন্টার- ৩ টি, জেলা ই-সেবা কেন্দ্র- ১ টি, কম্পিউটার ল্যাবরেটরী বিশিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- ৩৯ টি, জেলা ওয়েব পোর্টাল ঠিকানা- www.thakurgaon.gov.bd ।
পশু সম্পদঃ প্রাণী হাসপাতাল- ১ টি, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র- ১ টি, কৃত্রিম প্রজনন উপকেন্দ্র- ৪ টি, কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট- ১০ টি, কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট (স্বেচ্ছাসেবী)- ৩৩ টি, সরকারী হাস-মুরগী খামার- ১ টি, প্রাণী সম্পদ কল্যাণ কেন্দ্র- ১১ টি, বেসরকারী দুগ্ধ খামার- ৪৭৪ টি, বেসরকারী গরম্ন মোটাতাজা করণ খামার- ২০৭ টি, রেজিষ্ট্রিকৃত মুরগি খামারের সংখ্যা- ২৭৫ টি, গবাদি প্রাণী খামারের সংখ্যা- ৪৭৮ টি।
ভূমি ব্যবস্থাপনাঃ উপজেলা ভূমি অফিস- ৫ টি, ইউনিয়ন ভূমি অফিস- ৪১টি। কৃষি জমি- ১,৮১,১৮৬,.০৯ একর, অকৃষি জমি- ২,৫০,৭১১.৮৫ একর। কর আদায়যোগ্য জমি- ৪,১০,৬৫৮.২৮ একর, কর অনাদায়যোগ্য জমি-২১,২৩৯.৬৬ একর। মোট অর্পিত সম্পত্তি- ৫,২৬৬.৩৯ একর, মোট পরিত্যক্ত সম্পত্তি- ৮৭.৭৮ একর। বন্দোবসত্মযোগ্য খাস জমি- ৫,৭০৩.১৭ একর, খাস জমি বন্দোবস্ত গ্রহণকারী উপকৃত পরিবার- ৭,৩৮৮ টি। আশ্রয়ন প্রকল্প- ৩ টি, পুনর্বাসিত পরিবার- ১৪৪ টি। আবাসন প্রকল্প- ০৬ টি, পুনর্বাসিত পরিবার- ৪০০ টি। বাসত্মবায়নাধীন আদর্শগ্রাম-১০টি, পুনর্বাসিত পরিবার- ৩৮২টি।
সামাজিক সংগঠনঃ ক্লাব- ১৭২ টি, নারী সংগঠন- ১৯৮ টি। সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংস্থাসমূহ- সমাজ সেবা অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, বালক ও বালিকা এতিমখানা।
প্রধান প্রধান এনজিওঃ ইএসডিও, আশা, কারিতাস, মানব কল্যাণ সংস্থা, সমাজ কল্যাণ সংস্থা, আরডিআরএস, চেতনা, রোজেস, স্বাস্থ্য সেবা ক্লিনিক, লেপ্রসি মিশন, কেয়ার বাংলাদেশ, ব্র্যাক, প্রভৃতি।
ক্রীড়াঙ্গনঃ ক্লাবসমূহ- আগমনী স্পোর্টিং ক্লাব, সাম্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠি, সরকারপাড়া আজাদ ক্লাব, টাউন ক্লাব, আশ্রমপাড়া তরম্নণ সংঘ, বাবু স্মৃতি সংসদ, আর্ট গ্যালারী একাদশ, রম্নশ স্মৃতি সংসদ, ইত্যাদি।
লোক সংস্কৃতিঃ ধামের গান, ভাওয়াইয়া, পালাগান, পলস্নীগীতি, কবিগান, বিচার গান, কোয়ালী গান, বিষহরি গান, সত্যপীরের গান, কীর্তন, বিয়ের গান ও আদিবাসীদের গান।
সাহিত্য ও সংস্কৃতিঃ প্রকাশনা- সেনুয়া (ত্রৈমাসিক), ডাইজেস্ট, চালচিত্র। গ্রন্থাগার- সাধারণ পাঠাগার, সরকারী গণগ্রন্থাগার। সাংস্কৃতিক ক্লাব- নিক্কন সংগীত বিদ্যালয়, আলপনা সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ, সুরসপ্তক শিল্পগোষ্ঠী, শাপলা নাট্য গোষ্ঠী, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী। থিয়েটার গ্রম্নপ- ১৩ টি। শিল্পকলা একাডেমী- ১ টি, বেতার কেন্দ্র- ১ টি, টেলিভিশন রিলে স্টেশন- ১ টি।
অবসরে ঘুরে আসুন ঠাকুরগাঁও থেকে
| পরিচালনাকারী/মালিকের নাম | হোটেল/মোটেল/রেস্তোরাঁ/রেস্ট হাউজ/গেস্ট হাউজ/ডাকবাংলো ইত্যাদির ঠিকানা | মোবাইল নং | |
|---|---|---|---|
| ঠাকুরগাঁও সার্কিট হাউস | জেলা প্রশাসন, ঠাকুরগাঁও | সার্কিট হাউস, ঠাকুরগাঁও। | ০৫৬১-৫৩৪০০ |
| যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র | যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র | ঠাকুরগাঁও | (০৫৬১)৫২১৩৬ |
| পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি | পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি | পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি,ঠাকুরগাঁও | (০৫৬১)৫৩৫৭১ |
| সড়ক জনপথ বিভাগ | সড়ক জনপথ বিভাগ | সড়ক জনপথ বিভাগ, ঠাকুরগাঁও । | (০৫৬১)৫২০৭৯ |
| গণপূর্ত বিভাগ | গণপূর্ত বিভাগ ,ঠাকুরগাঁও । | গণপূর্ত বিভাগ ,ঠাকুরগাঁও । | (০৫৬১)৫২০৯৪ |
| জেলা পরিষদ(নতুন) | জেলা পরিষদ(নতুন) | জেলা পরিষদ(নতুন),ঠাকুরগাঁও । | (০৫৬১)৫২০৯৪ |
| পানি উন্নয়ন বোর্ড | পানি উন্নয়ন বোর্ড | পানি উন্নয়ন বোর্ড,ঠাকুরগাঁও । | (০৫৬১)৫২০০১ |
| এল জি ই ডি | এল জি ই ডি | এল জি ই ডি,ঠাকুরগাঁও । | (০৫৬১)৫২০৪২ |
| সুগার মিল | সুগার মিল ,ঠাকুরগাঁও । | সুগার মিল ,ঠাকুরগাঁও। | (০৫৬১)৫২০৭৬ |
| পরিচালনাকারী/মালিকের নাম | হোটেল/মোটেল/রেস্তোরাঁ/রেস্ট হাউজ/গেস্ট হাউজ/ডাকবাংলো ইত্যাদির ঠিকানা | মোবাইল নং | |
|---|---|---|---|
| হোটেল সালাম ইন্টার ন্যাশনাল | আলহাজ্ব আব্দুস সালাম হাওলাদার | নর্থ সার্কুলার রোড, ঠাকুরগাঁও | ০৫৬১-৫২২৪৬ |
| হোটেল প্রাইম ইন্টারন্যাশনাল | মো. আনোয়ার হোসেন | নর্থ সার্কুলার রোড, ঠাকুরগাঁও | ০৫৬১-৫৩৫০৫ |
| হোটেল শাহ্ জালাল | মাহবুবুল হক চৌধুরী | নর্থ সার্কুলার রোড, ঠাকুরগাঁও | ০৫৬১-৫৩৬৬৯ |
| হোটেল সাদেক | মিসেস ফেরদৌসী বেগম | বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও | ০৫৬১-৫২১৯৭ |
| হোটেল/আবাসিক | খন্দকার আব্দুল হাই | বন্দর বাজার, রাণীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও | ০১৭১৭২১৯৮৪৩ |
| মানব কল্যাণ পরিষদ | মানব কল্যাণ পরিষদ,ঠাকুরগাঁও । | মানব কল্যাণ পরিষদ,ঠাকুরগাঁও | (০৫৬১)৫২২২২ |
| পরিচালনাকারী/মালিকের নাম | হোটেল/মোটেল/রেস্তোরাঁ/রেস্ট হাউজ/গেস্ট হাউজ/ডাকবাংলো ইত্যাদির ঠিকানা | মোবাইল নং | |
|---|---|---|---|
| আর,ডি,আর,এস | আর,ডি,আর,এস | আর,ডি,আর,এস ঠাকুরগাঁও । | (০৫৬১)৫৩৬৭০ |
| ই এস ডি ও | ই এস ডি ও | ই এস ডি ও ,ঠাকুরগাঁও । | (০৫৬১)৫২১৪৯ |
তথ্যসুত্র- ঠাকুরগাঁও নিয়ে লিখা বিভিন্ন বই, প্রকাশিত সংবাদ ও ইন্টারনেট থেকে ।
সর্বাধিক সুত্র ও কৃতজ্ঞতা- ঠাকুরগাঁও জেলাপ্রশাসন ওয়েবসাইট