উল্টো দিকে কিছু ইতিবাচক দিকও আছে। ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা আসায় আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে আসছে। ফলে ওষুধ, কাঁচামাল ও জ্বালানির সরবরাহে তুলনামূলক স্বস্তি এসেছে। মূল্যস্ফীতির হারও কমেছে, যদিও বাস্তবতা অতটা সরলরৈখিক নয়। সব মিলিয়ে পরিবর্তন যেটুকু হয়েছে তা মূলত ব্যবস্থাপনাগত; সংস্কার বলতে যা বোঝায়, অর্থনীতিতে সেরকম কিছু দেখা যাচ্ছে না।
আধুনিক সামষ্টিক অর্থনীতির পুরোধা হিসেবে পরিচিত জন মেনার্ড কেইনসের তত্ত্ব অনুযায়ী, বিনিয়োগই প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের প্রধান চালিকা শক্তি। যখন ব্যবসায়ীরা আস্থাহীন হয়ে বিনিয়োগ কমিয়ে দেন, তখন তার মাল্টিপ্লায়ার ইফেক্টের মাধ্যমে পুরো অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। কম বিনিয়োগ মানে কম উৎপাদন, কম কর্মসংস্থান ও অবশেষে ভোগব্যয়ের সংকোচন। এর প্রভাব এরই মধ্যে শেয়ারবাজারে দেখা যাচ্ছে, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিকে গত এপ্রিলে বাংলাদেশের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে শ্রমবাজারের করুণ চিত্র তুলে ধরে বিশ্বব্যাংক। সেখানে বলা হয়, দুর্বল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ব্যবসায়িক পরিবেশের অবনতি ও কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাবের কারণে অনেকেই শ্রমবাজার থেকে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হারও কমে গেছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দেশে যত কারখানা বন্ধ হয়েছে, তাতে বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্রথম আলোর সংবাদেই উঠে এসেছে, গাজীপুরে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। তাঁরা এখন সবজি বিক্রি করছেন।