শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে মানুষ পরিবেশ সচেতন: আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশের মানুষ এখন পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন। তিনি বলেন, গত দেড়-দুই দশকের প্রচারণাও এক্ষেত্রে কাজ দিয়েছে। মানুষ এখন পরিবেশ খুব ভালোভাবেই বুঝে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ ও বন সচিব ড. কামালউদ্দিনের সভাপতিত্বে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বন ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য অনেকাংশে বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছেন। সারাবিশ্বে এ ফান্ডের কর্মকাণ্ড প্রশংসিত হয়েছে। ওজোন সম্পর্কে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, এটি অনেক কঠিন জিনিস। এরপরও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ওজোন স্তরের জন্য ক্ষতিকর জিনিসগুলো দমনে তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, একমাত্র সচেতনতাই পারে ওজোন স্তরকে রক্ষা করতে। এক্ষেত্রে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতন করতে হবে।
পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, মন্ট্রিয়েল প্রটোকল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। এ সংক্রান্ত প্রকল্পে সহায়তা করার জন্য তিনি ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ভবিষ্যতেও ইউএনডিপি এ ধরনের কাজে তাদের সম্পৃক্ততা রাখবে।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট টিপু সুলতান এমপি বলেন, আমরা না বুঝে অনেক সময় পরিবেশ দূষণ করি। বিশেষ করে গাড়ির হর্ন বাজানোর সময় আমাদের আরো সতর্ক থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ আমাদের সকলের। এই দেশকে বাঁচিয়ে রাখাও আমাদের দায়িত্ব।
ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে হলে ওজোন স্তরকে রক্ষা করতে হবে। ক্ষতিকর কেমিক্যাল নিঃসরণ বন্ধের মাধ্যমে ওজোন স্তর সুরক্ষা করা যায়। তিনি বলেন, মন্ট্রিয়েল প্রটোকল মেনে চলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে। বেসরকারি খাতও এক্ষেত্রে সহায়তা করছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপির ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর নিক বেরেসফোর্ড বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে পেরে ইউএনডিপি আনন্দিত। পরিবেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাজগুলো বিশ্বব্যাপী প্রশংসা পাচ্ছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ওশান কনফারেন্সে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ উল্লেখ করার মতো। ওজোন স্তর সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। এতে ওজোন স্তরের ওপর চাপ বাড়ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে এই যে, ওজোন স্তর রক্ষায় মন্ট্রিয়েল প্রটোকল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রইছউল আলম মণ্ডল বলেন, ওজোন স্তর সুরক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু চিত্রাংকন এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এবারের বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। রানার্স আপ হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
ইত্তেফাক/এএন