যশোর জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের টয়লেটে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক প্রসূতি সন্তান প্রসব করায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় তিনি সন্তানের নাড়ি ছেঁড়া ও পরিষ্কার শুরু করেন। নবজাতকের কান্নায় বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে উদ্ধার করে তাকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখান থেকে প্রসূতি ওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। নবজাতককে শিশু ওয়ার্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

এদিকে অন্তঃসত্ত্বা কেন মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হলেন, আর টয়লেটে কেন সন্তান প্রসব হলো-এমন প্রশ্নে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

চিকিৎসক ও নার্সরা বলছেন, তথ্য গোপন করে পেটে ব্যথার কথা বলে ওই নারী মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বিষয়টি খতিয়ে দেখবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রসূতি ওই নারীর নাম রত্না বিশ্বাস। তিনি বাঘারপাড়া উপজেলার জোহরপুর ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের বাসিন্দা রমেশ বিশ্বাসের স্ত্রী। এই দম্পতির ১০ বছর বয়সি এক মেয়ে এবং আড়াই বছর বয়সি এক ছেলে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় যশোর হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা রত্না রানী। ভর্তি হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে হাসপাতালের টয়লেটে যান। টয়লেটের ভেতরেই ওই নারী কোনো ধরনের চিকিৎসা সহায়তা ছাড়াই সন্তান প্রসব করেন। শুধু বাচ্চা প্রসবই নয়, এরপর নিজের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করেন সদ্য ভূমিষ্ঠ ছেলে শিশুটিকে। এরপর নিজেই টয়লেটের ওয়াশরুমে থাকা বদনার পানি দিয়ে নবজাতকের শরীর পরিষ্কার করছিলেন। নবজাতক ও প্রসূতি এখন শঙ্কামুক্ত।

শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের শিশু বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, অবজারভেশন ওয়ার্ডে শিশুটিকে হাসপাতালের নার্সিং ইনস্টিটিউটের দুই নার্সিং শিক্ষার্থী দেখভাল করছেন। ফুটফুটে নবজাতকটি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছে। স্বাভাবিক বাচ্চাদের মতো পা উঠিয়ে খেলাও করছে।

দায়িত্বে থাকা নার্স রিনা সরকার বলেন, বাচ্চাটির ওজন আড়াই কেজি, যা স্বাভাবিক ও সুস্থ বাচ্চা।

এদিকে তথ্য গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি, টয়লেটে বাচ্চা প্রসব করলেও কাউকে না ডাকা-এসব নিয়ে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালের কেউ কেউ বলছেন, আগে দুটি বাচ্চা থাকার পরও এ বাচ্চাটি নিতে চাইছিল না হতদরিদ্র এই পরিবার। তাই গর্ভবতী থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি হন সাধারণ রোগী হিসাবে। পরে টয়লেটে বাচ্চা প্রসব করে বাচ্চাটিকে পানিতে শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টা করছিলেন বলেও গুঞ্জন ছড়িয়েছে।

হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডের মেঝেতে চিকিৎসা চলছে প্রসূতি রত্না বিশ্বাসের। তিনি বলেন, কীভাবে সন্তান প্রসব হলো বুঝতে পারছি না। তবে গর্ভবতী, সেটা সবাই জানত। তিনি বলেন, নিজের সন্তানকে কেন মারতে চাইব।

রমেশ বিশ্বাস জানান, রত্না দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হুসাইন শাফায়েত বলেন, ঘটনাটি নিয়ে নানা রহস্যের জন্ম দিয়েছে। প্রসূতি মানসিকভাবে অসুস্থ। শনিবার হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বরতদের সঙ্গে বসা হবে। তখন বিষয়টি পরিষ্কার হবে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews