ব্যবসায়ীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সংগঠন বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে ছাত্র-জনতার নামে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১০ দিন ধরে তালা থাকায় সদস্য ভর্তি, নবায়ন, সার্টিফিকেট অব অরিজিন প্রদানসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম খায়রুল বাশারের নাম ভেঙে তার মামা আকবরিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান আলী আলাল এ কাজ করে ছাত্র-জনতার ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন।

চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ব্যবসায়ী সাইরুল ইসলাম জানান, তালা দেওয়ায় পর সব কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে সদর থানায় জিডি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে অবহিত করা হয়েছে। শিগগিরই সমস্যার সমাধানে প্রশাসক নিয়োগ বা আবারও আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হতে পারে। অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা কেএম খায়রুল বাশার, হাসান আলী আলাল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সাকিব খান দাবি করেছেন, তারা এর সঙ্গে জড়িত নন।

বগুড়া চেম্বারের সাধারণ সদস্যরা জানান, আওয়ামী লীগ আমলে প্রতিষ্ঠানটি তৎকালীন সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুর পর তার ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মিলনের হাতে চলে যায়। তিনি বিনা ভোটে চেম্বার সভাপতির চেয়ার দখল করেন। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তিনি আÍগোপন করেন। ১ সেপ্টেম্বর সর্বসম্মতিতে সিনিয়র সদস্য সাইরুল ইসলামকে বগুড়া চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সদস্যরা নির্বাচন চাইলে তিনি ২১ জুন রেজাউল হাসান রানুকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেন।

বগুড়া চেম্বারের সচিব মাসুদ রানা জানান, ২২ জুন বেলা ১টা ২০ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার নামে প্রায় ২০০ ব্যক্তি রাস্তা থেকে চতুর্থ তলায় অফিস পর্যন্ত অবস্থান নেন। এরপর তারা ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে চলে যান। তিনি এ ব্যাপারে সদর থানায় জিডি এবং ২৮ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি দেন। তিনি অবিলম্বে তালা খুলে দিয়ে অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বগুড়া চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইরুল ইসলাম জানান, নির্বাচনের মাধ্যমে দায়িত্ব হস্তান্তরে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছিলেন। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার নামে প্রতিষ্ঠানে তালা দেওয়ায় শুধু নির্বাচন বন্ধ নয়; সব কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আশা করেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে শিগ্গিরই কোনো পদক্ষেপ নেবে।

নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক চেম্বারের কয়েকজন সাধারণ সদস্য বলেন, ১৫ মে দুপুরে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদ-উন-নবী সালাম ও কেএম খায়রুল বাশারের নেতৃত্বে শহরের নবাববাড়ি সড়কে ডায়াবেটিক সমিতি ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালের আহ্বায়কের কক্ষে নামফলক খুলে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। একইভাবে ২২ জুন দুপুরে শহরের ঝাউতলা এলাকায় বগুড়া চেম্বারে তালা দেওয়া হয়। বগুড়ার আকবরিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান ও চেম্বারের সাবেক পরিচালক হাসান আলী আলাল তার মামা জেলা বিএনপি নেতা কেএম খায়রুল বাশারের নাম ভাঙিয়ে এ তালা দেন। তাদের সঙ্গে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের কিছু নেতার ইন্ধন ছিল।

অভিযোগ প্রসঙ্গে হাসান আলী আলাল বলেন, তিনি এসবের কিছুই জানেন না। তিনি বা তার লোকজন চেম্বারে তালা লাগাননি। চেম্বার দখলের ইচ্ছা তার নেই। একটি মহল তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। কেএম খায়রুল বাশার বলেন, হাসান আলী আলাল আমার মামা। তাই অনেকে মনে করতে পারেন, আমি তাকে সহায়তা করেছি। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বগুড়া জেলা শাখার সদস্য সচিব সাকিব খান জানান, বগুড়া চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার সঙ্গে তার সংগঠনের কেউ জড়িত নন। কেউ তাদের নাম ভেঙে এ অপকর্ম করেছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews