বিএনপি ভোটে না এলে ১০০ আসন ছেড়ে দেবে আওয়ামী লীগ- এমনই দাবি ছিল জাতীয়

পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের। জাপার ভাগ থেকে কয়েকটি

আসন পাওয়া যাবে- এ আশায় এরশাদের সম্মিলিত জাতীয় জোটে ভিড়েছিল নিবন্ধিত

দুটিসহ ৫৮টি দল। এর মধ্যে চট্টগ্রামভিত্তিক দলও আছে। বিএনপি ভোটে আসায়

এরশাদ ফিরে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে। ফলে জাপা জোটের

শরিকদের মহাজোটের টিকিট পাওয়ার আশা ক্ষীণ। সংসদে প্রবেশের স্বপ্ন ফিকে হয়ে

গেছে তাদের।

চট্টগ্রামভিত্তিক দল ইসলামী ফ্রন্টেরও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। জাপার জোট

আলাদাভাবে ভোট করলে ৭৩ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি ছিল দলটির। চাহিদা

সংক্ষিপ্ত করে পাঁচটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করে ইসলামী ফ্রন্ট। এ

দাবিও পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আওয়ামী লীগ সূত্রের খবর, এরশাদের জোটকে

৩৫টির বেশি আসন ছাড়বে না মহাজোট। সেখান থেকে ইসলামী ফ্রন্ট আসন পাবে, এমন

নিশ্চয়তা নেই। তাই ক্ষুব্ধ দলটি।

তবে এখনই আশা ছাড়ছে না আহলে সুন্নাত ওয়াল জম'আতের পতাকাবাহী রাজনৈতিক দল

ইসলামী ফ্রন্ট। গত বছরের নভেম্বরে এরশাদকে ৭৩টি আসনের তালিকা দিয়েছিল দলটি।

সেখান থেকে কমে পাঁচে নেমেছে সম্প্রতি। চট্টগ্রামে দুটি এবং ফেনী,

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুরে একটি করে মোট পাঁচটি আসন চাইছে। চট্টগ্রাম-২

(ফটিকছড়ি), চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) ও চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ)-

এই তিন আসনের যেকোনো একটিতে নির্বাচন করতে চান দলটির চেয়ারম্যান মাওলানা

এমএ মান্নান কিংবা যুগ্ম মহাসচিব স ম আবদুস সামাদ।

যদি চট্টগ্রাম-২ পাওয়া যায় তাহলে নির্বাচন করবেন মাওলানা এমএ মান্নান আর

চট্টগ্রাম-৮ কিংবা চট্টগ্রাম-১৪ পাওয়া গেলে নির্বাচন করবেন যুগ্ম মহাসচিব স

ম আবদুস সামাদ। অন্যদিকে পছন্দের চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) ও চট্টগ্রাম-১৩

(আনোয়ারা) এ দুটি আসনের কোনো একটি পাওয়া গেলে নির্বাচন করতে চান দলটির

মহাসচিব মাওলানা এমএ মতিন। ইসলামী ফ্রন্টের তালিকায় আরও রয়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১, চাঁদপুর-৫ ও ফেনী-১ আসন।

চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের দুটিতে বর্তমান এমপি জাপার। চট্টগ্রাম-১৬ আসনে

মহাজোটের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক মেয়র জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহমুদুল

ইসলাম চৌধুরী। আসন্ন নির্বাচনে চট্টগ্রামে জাপাকে তিনটির বেশি আসনে ছাড়

দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। বরং আসন কমতে পারে। তাই ইসলামী ফ্রন্ট

চট্টগ্রামে কোনো আসনে মনোনয়ন পাবে, এ আশা ক্রমেই মিলিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী

ফ্রন্ট চট্টগ্রামে যেসব আসন চাইছে সেগুলোতে আওয়ামী লীগ ও জোটের অন্য শরিক

দলগুলোর প্রভাবশালী মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে মহাজোটের মনোনয়ন চান এলাকার বর্তমান সাংসদ ও জাসদের

একাংশের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল। চট্টগ্রাম-২ আসনের এমপি সৈয়দ

নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক তরীকত

ফেডারেশনের সভাপতি।

চট্টগ্রাম-১৩ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ভূমি প্রতিমন্ত্রী

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। চট্টগ্রাম-১২ আসনের এমপি সামশুল হক চৌধুরী।

তাদের মনোনয়ন পাওয়া প্রায় নিশ্চিত। ফলে ইসলামী ফ্রন্টের জন্য কোনো আসন নেই।

দলটির মহাসচিব মাওলানা এমএ মতিন সমকালকে বলেন, জাপার কাছে তারা কমপক্ষে

পাঁচটি আসন চান। সম্মিলিত জাতীয় জোটের অন্যতম শরিক হিসেবে তাদের এ দাবি

অযৌক্তিক নয়। আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা চলছে। আসন না পেলে ইসলামী ফ্রন্টের

নেতাকর্মীরা হতাশ হবেন। তখন পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামী ফ্রন্টের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা

জানিয়েছেন, গত বছর ৭৩টি আসন চেয়ে তালিকা দেওয়া হলেও সম্প্রতি তা পাঁচটিতে

নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু আসন বণ্টন নিয়ে জাপার সঙ্গে আওয়ামী লীগের যে

টানাপড়েন চলছে তাতে আসন পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রামের একটি

আসনও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এতে নেতাকর্মীরা জোটের চেয়ারম্যান এরশাদের ওপর

খুব ক্ষুব্ধ, নাখোশ।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি সোলায়মান

আলম শেঠ সমকালকে বলেন, মহাজোট থেকে কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক আসন না দিয়ে গত

নির্বাচনেও তাদের ঠকানো হয়েছে। অথচ জাপার সমর্থন ও সহযোগিতা নিয়ে আওয়ামী

লীগ সরকার গঠন করেছে। এবার তারা ১০০ আসন চেয়েছেন। কারণ, জাপার নিজস্ব জোটও

রয়েছে। সোলায়মান শেঠ বলেন, '৬০ থেকে ৭০টি আসন না পেলে শরিকদের কি দেব?'



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews