নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন, ধর্মঘট, মিছিল, সমাবেশ- কতকিছুই না হল। ছাত্রদের আন্দোলন থেকে শুরু করে নানা কাণ্ড ঘটে গেল দেশে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিরাপদ সড়কের জন্য ছাত্র আন্দোলন।

জনমনে আজও প্রশ্ন, আদৌ কি নিরাপদ সড়ক আমরা পেয়েছি? থেমেছে কি সড়কে মৃত্যুর মিছিল? গত ২৩ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় স্বামী-স্ত্রীসহ চারজন নিহত হওয়ার ঘটনা যে কারও হৃদয় নাড়িয়ে দিতে পারে।

এর চেয়েও বড় ঘটনা ২০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জে ভাইবোনসহ ১২ জনের নিহত হওয়া। আবার ১৮ ডিসেম্বর সারা দেশে ১১ জন নিহত হয় সড়ক দুর্ঘটনায়। তাহলে সড়কে মৃত্যুর মিছিল থেমেছে কই? একটি দৈনিকের হিসাবে ৬৮৮ দিনে ৫ হাজার ৯৭৬ জন সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। গড়ে দৈনিক ৮ জনের বেশি প্রাণ হারাচ্ছে আমাদের দেশে।

সড়কে প্রাণহানি কমিয়ে আনার কি কোনো উপায় নেই? নিরাপদ সড়কের দাবিতে আমাদের দেশে সংগঠনেরও অভাব নেই। কিন্তু কেউ কাজের কাজ করছে বলে মনে হয় না।

সবাই লোক দেখানো কাজে মেতে ওঠে। প্রতিদিন সড়কে ঝরছে প্রাণ। কেউ মা, কেউ বাবা, আবার কেউ হারাচ্ছেন সন্তান। কেউ কেউ পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। শত শত পরিবার হয়ে যাচ্ছে অসহায়। নতুন সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই নিরাপদ সড়কের কথা। সরকার যদি এ বিষয়টির দিকে সুনজর না

দেয়, তাহলে সড়কে মৃত্যুর মিছিল কখনই থামবে না।

আমাদের আগে পরীক্ষা করে দেখতে হবে কোন কোন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হয় এবং কেন হয়। আমরা যদি সমস্যাটা বের করতে পারি, তবে সমাধান কেন বের করতে পারব না?

গত নয় মাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যত দুর্ঘটনা হয়েছে, তা মোট সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় ১৭ ভাগ। সুতরাং সড়কের কোথায় কী সমস্যা আছে এবং কোথায় কী করতে হবে সেটা এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে।

বাংলাদেশের মানুষ সড়কে আর মৃত্যু দেখতে চায় না। বর্তমান সরকারের সাফল্য ও উন্নয়ন অস্বীকার করা যাবে না। তবে সড়ক ও পরিবহন সেক্টরের উন্নয়নটা এখনও দৃশ্যমান হয়নি দেশের মানুষের কাছে।

এ সেক্টরের উন্নয়ন হলে মানুষের হৃদয়ে আরও অনেকখানি জায়গা পাবে সরকার।

আসলে এ সেক্টরে অনেক দুর্নীতি, যা হয়তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টির বাইরে। এ সেক্টরের প্রধান বাণিজ্য লাইসেন্সের। যত বেশি টাকা, তত আগে লাইসেন্স, কেউ গাড়ি চালাতে জানুক আর না জানুক। টাকা ঢাললে নাকি লাইসেন্স ২ মিনিটের বিষয়।

এমন যদি হয়, তবে সড়কের মৃত্যু অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই প্রধানমন্ত্রীর উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সেক্টরের প্রতি নজর দিয়ে দেশের মানুষকে রক্ষা করা। সড়কে মৃত্যু প্রতিরোধ করার জন্য সরকারের বেতনভুক্ত অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন, যাদের এ বিষয়ে কাজ করার কথা।

অথচ তারা সরকার থেকে জনগণের সেবা করার জন্য পরিশ্রমিক নিয়ে জনগণকে বুড়ো আঙ্গুল দেখান। আইন থাকলেও তা কার্যকর করা হয় না। যারা পরিবহন সেক্টরে অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। স

রকারের প্রতি অনুরোধ, আগে দেশের মানুষ বাঁচান, তারপর দেশ সাজান। এটাই হোক ২০১৯ সালের কর্মসূচি। আমার বিশ্বাস বর্তমান সরকার এ সেক্টরকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারবে। সেই সুন্দরের অপেক্ষায় রইলাম।

আজহার মাহমুদ : প্রাবন্ধিক

[email protected]



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews