ব্যাগ ভর্তি কাঁচা বাজার নিয়ে খুব খুশি মনেই বের হচ্ছিলেন রিয়াজ মাহমুদ মিঠু্। সঙ্গে স্ত্রী আছেন বাজারের সঙ্গী হিসেবে। বাজারে দর কেমন জিজ্ঞেস করতেই একটু আগ বাড়িয়েই মিঠুর স্ত্রী বললেন, ‘সবজির দাম অনেক কমেছে’। দুজনের হাতেই বড় ব্যাগ ভর্তি কাঁচা বাজার। এত বাজার করলেন জিঙ্গেস করতেই জানালেন, আমি, আমার স্ত্রী দুজনই চাকরি করি। বাজার করার সময় পাই না। সবজির দাম কম থাকায় সারা সপ্তাহের বাজার করেন নিলাম।
কারওয়ান বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার বাজার করতে আসা রমিজ মিয়া বড় বড় চারটি ফুলকপি কিনেছেন মাত্র ৫০ টাকা দিয়ে। সপ্তাহ খানেক আগেও যে কপির জোঁড়া ছিল ৬০ টাকা।
সবজির ব্যবসায়ীরা বলছেন, বলতে গেলে পানির দামেই সবজি বিক্রি হচ্ছে। তবে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি থাকায় বাজারে ক্রেতা সমাগম কম ছিল। এ কারণে কম লাভেই সবজি বিক্রি করতে দেখা গেছে কারওয়ান বাজারে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজি সরবরাহ গত সপ্তাহের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়েছে। শীতকালীন নতুন নতুন সবজির পসরা সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা।
বাজারে শীতের নতুন সবজি ওল প্রতি কেজি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ত্রিশ টাকায়। কয়েক সপ্তাহ আগেও যে শিম ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সেই শিম মাত্র প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া প্রতি কেজি আলু ২০ টাকা, নতুন আলু ৮০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, পটল ৩০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, মূলা ৩০ টাকা, লাউ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিচ ২০ টাকা, ঢেঁড়স কেজি ৪০-৫০ টাকা, শসা কেজি ৪০-৫০ টাকা, ঝিঙে ৪০-৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০-৪০ টাকা, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি মাত্র ১৫ টাকায়।
কয়েক সপ্তাহ আগেও প্রতি আঁটি লাল শাক বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা সেই আঁটি গতকাল ৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
সবজির বাজার ক্রেতা সাধারণের নাগালের মধ্যে আসলেও কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম বেশি। এজন্য বেশি দামে আমদানি করায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়, ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চালে এক টাকা বেড়ে ৪৩ টাকা এবং মিনিকেট প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকা। তবে কিছু দিনের মধ্যে নতুন চাল বাজারে উঠলে চালের দাম কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ীরা।
মাছ ও মাসের বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে। মাছের বাজারে লোক সমাগম কম দেখা গেছে। বিক্রেতার বলছেন, অভিভাবকরা তাঁদের সন্তাদের পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে বাজাররে বাজারে আসতে পারছেন না। এ জন্য মাছের বাজার তুলনামূলক মন্দা যাচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ও জাত ভেদে প্রতি কেজি চিংড়ি ৫০০-৬০০ টাকা, প্রতি কেজি রুই ২২০-২৫০ টাকা, কাতলা ২০০-৩০০ টাকা, পাবদা ৩৮০-৪০০ টাকা, টেংড়া ৪০০ টাকা, ও চাষের শিং ৪০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৫০, পাকিস্তানি মুরগি ২৫০০, দেশি মুরগি প্রতিটি আকারভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৪৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএ/জেডএ