৭৪তম কান: উদ্বোধনী ছবি ড্রাইভার-মারিয়নের ‘অ্যানেট’

কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৪তম আসরের পর্দা উঠবে আগামী ৬ জুলাই। দক্ষিণ ফ্রান্সের সাগরপাড়ের শহরে পালে দে ফেস্টিভালের গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে ফরাসি নির্মাতা লিও ক্যারাক্সের ‘অ্যানেট’ প্রদর্শনের মাধ্যমে এই আয়োজনের উদ্বোধন হবে। একইদিন এটি মুক্তি পাবে ফ্রান্সের প্রেক্ষাগৃহে।

সমকালীন লস অ্যাঞ্জেলসের পটভূমিতে নির্মিত ছবিটির গল্প অঁরি ও অ্যান দম্পতিকে ঘিরে। অঁরি রসিক স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান আর অ্যান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গায়িকা। আপাতদৃষ্টিতে তারা পরিপূর্ণ, সুখী ও আকর্ষণীয় যুগল। প্রথম সন্তান অ্যানেট রহসম্যয় ও ব্যতিক্রম নিয়তি নিয়ে জন্মের পরই অঁরি ও অ্যানের জীবন বদলে যায়।

কান উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে থাকবে ‘অ্যানেট’। এটি তার ষষ্ঠ ও ইংরেজি ভাষায় প্রথম ছবি। এতে অঁরি ও অ্যান চরিত্রে অভিনয় করেছেন অ্যাডাম ড্রাইভার ও মারিয়ন কটিয়ার্ড। এর অন্যতম প্রযোজক অভিনেতা অ্যাডাম ড্রাইভার। ছবিটিতে ব্যবহার হয়েছে রন ও রাসেল মায়েল ভ্রাতৃদ্বয়ের ব্যান্ড স্পার্কসের গান।

লিও ক্যারাক্সের সবশেষ ছবি ‘হলি মোটরস’ ৯ বছর পর আগে কান উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেয়েছিল। জাদুবাস্তবতা ও দৈনন্দিন জীবনকে ফ্যান্টাসিতে রূপান্তর করা স্বাদ রয়েছে এতে।

দূরদর্শী ও ব্যতিক্রম এই নির্মাতা ৩৫ বছর ধরে ফরাসি সিনেমাকে অনেক দৃষ্টিনন্দন মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন লিও ক্যারাক্স। কল্পনার সাগরে ভেসে সেলুলয়েডে কবিতা বুনেছেন তিনি।

মাত্র ২৪ বছর বয়সে জাদুময় প্যারিসের শহুরে ও রাত্রিকালীন সৌন্দর্য তুলে ধরতে একটি ট্রিলজি নির্মাণে হাত দেন লিও ক্যারাক্স। এর মধ্যে সাদাকালো ছবি ‘বয় মিটস গার্ল’ (১৯৮৪) ছিল জ্যঁ ক্যঁকতো ও গদারের সিনেমা এবং নির্বাক যুগের চলচ্চিত্রের প্রতি তার সম্মান।

১৯৮৬ সালে হৃদয়ছোঁয়া ছন্দ ও ভালোবাসার কাব্য ‘ব্যাড ব্লাড’ ছবির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান লিও ক্যারাক্স। এতে অভিনয় করেছেন জুলিয়েট বিনোশ, মিশেল পিকোলি ও দেনি লাভ্যেঁ।

লিও ক্যারাক্সের সবচেয়ে ব্যয়বহুল কাজ ‘দ্য লাভারস অন দ্য ব্রিজ’ ১৯৯১ সালের কান উৎসবে প্রতিযোগিতার বিভাগের বাইরে প্রিমিয়ার হয়। তিন বছর ধরে এর চিত্রায়ন হয়েছিল। ছবিটি ফরাসি সিনেমায় অন্যরকম এক সংযোজন। এর গল্প দুই ভবঘুরে অ্যালেক্স ও মিশেলের প্রেমকে ঘিরে। স্ট্রিট পারফরমার অ্যালেক্স মদ ও ঘুমের ওষুধে আসক্ত। চিত্রশিল্পী মিশেল এমন একটি রোগে আক্রান্ত যা তাকে ধীরে ধীরে দৃষ্টিহীন করে দিচ্ছে। এ দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুলিয়েট বিনোশ ও দেনি লাভ্যেঁ।

এরপর আট বছরের নীরবতা ভেঙে ১৯৯৯ সালে ‘পলা এক্স’ ছবির মাধ্যমে কানের প্রতিযোগিতা বিভাগে ফেরেন লিও ক্যারাক্স। ১৮৫২ সালে প্রকাশিত আমেরিকান ঔপন্যাসিক হারমান মেলভিলের ‘পিয়ের; অর, দ্য অ্যাম্বিগুয়েটিস’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এটি। এতে অভিনয় করেন ক্যাথেরিন দেন্যুভ, ইয়েকাতেরিনা গোলুবেভা ও গিয়ম দ্যুপার্দিউ।

২০০৮ সালে আঁ সাঁর্তা রিগার বিভাগে স্থান পাওয়া সংকলিত ছবি ‘টোকিও!’র তিন নির্মাতার একজন ছিলেন লিও ক্যারাক্স। অন্য দু’জন হলেন মিশেল গন্ড্রি ও বং জুন-হো। তিনজনই জাপানের বাইরের পরিচালক।

কানের সভাপতি পিয়েরে লেসকিউর বলেন, “লিও ক্যারাক্সের প্রতিটি সিনেমা একেকটি ইভেন্ট। এবারেরটিও ব্যতিক্রম নয়। ‘অ্যানেট’ সিনেমা, সংগীত ও সংস্কৃতিপ্রেমীদের জন্য সেই উপহার যা গত একবছর ধরে আমরা সবাই আশা করছি।”

উৎসবের জেনারেল ডেলিগেট থিয়েরি ফ্রেমো বলেন, ‘পালে দে ফেস্টিভালে সিনেমা ও রুপালি পর্দার পুনর্মিলন এর চেয়ে সুন্দর ভাবা যায় না! ক্যারাক্সের সিনেমার আবহ যেন তৈরি করে সিনেমার আধুনিকতা ও চিরন্তন নিগুঢ় অভিব্যক্তি।

কানের ৭৪তম আসরের অফিসিয়াল সিলেকশন ঘোষণা করা হবে আগামী মাসের শেষ সপ্তাহে। এবারের আয়োজনে বিচারকদের নেতৃত্ব দেবেন মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ পরিচালক স্পাইক লি। ১৭ জুলাই উৎসবের সমাপনীতে তিনিই স্বর্ণপাম জয়ী ছবির নির্মাতার নাম ঘোষণা করবেন।

কান উৎসব সাধারণত মে মাসের মাঝামাঝি হয়ে থাকে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে আয়োজকরা দুই মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এই আয়োজন।

ইত্তেফাক/জেএইচ



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews