ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এর সদস্যদেরকে হামাসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনে ইসরাইল। কিন্তু তেল আবিব সরকার আনিত এ অভিযোগের কার্যকরী কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। ফ্রান্সের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতিসংঘের একটি নিরপেক্ষ পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

ইসরাইলের এমন অভিযোগের কারণে ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের দাতা এ সংস্থাটিতে অনেক দেশ তাদের সহায়তা বন্ধ করে দেয়। সংস্থাটির বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়। এছাড়া গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলার বিষয়ে পৃথক তদন্তের জন্য জাতিসংঘের একটি অভ্যন্তরীণ পক্ষ এ বিষয়ে কাজ করে। এ নিরপেক্ষ তদন্তের নেতৃত্বে ছিলেন ফ্রান্সের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিইন কলোন্না। তাকে সহায়তার কাজে যুক্ত ছিলেন নর্ডিকের তিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এই তদন্তে উঠে আসে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে যে হামলা চালিয়ে সেই হামলায় ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র কোনো সদস্য জড়িত ছিল না। যদিও ইসরাইল এই সংস্থার সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ আনে।

ওই তদন্তের মূল ছয় পৃষ্ঠা দেখার সুযোগ হয়েছে আল জাজিরার। এতে দেখা গেছে, ইসরাইলের গোয়েন্দা বাহিনী কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইউএনআরডব্লিউএ’র বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। এতে বলা হয়েছে, অক্টোবরে হামাসের চালানো হামলায় ওই সংস্থার ১২ জন সদস্য সরাসরি অংশ নেয় এবং ১৯০ জন সদস্য গোয়েন্দা এবং লজিস্টিক সহযোগিতা করে। এছাড়া মার্চে ইসরাইলের সেনাবাহিনী অভিযোগ করে তাদের কাছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সাহায্যকারী জাতিসংঘের একক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র আরও চার সদস্য জড়িত জড়িত থাকার তথ্য রয়েছে। কলোন্নার পরিচালিত তদন্তে বলা হয়েছে ইসরাইল ২০১১ সাল থেকে জাতিসংঘের এই সংস্থার কোনো কর্মীর বিরুদ্ধে কখনও অভিযোগ করেনি। কিন্তু ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তারা প্রথম অভিযোগ জানায়।

এদিকে, উত্তর গাজায় হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সেখানে সবচেয়ে ভারী গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। উত্তর গাজার বাসিন্দা এবং হামাস মিডিয়ার জানানো তথ্যমতে, গাজা উপত্যকার উত্তর প্রান্তের বেইত হ্যানউনের পূর্বদিকে ইসরাইলি সেনা ট্যাংকগুলো নতুন করে হামলা শুরু করেছে। তবে সেগুলো এখনও শহরের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। ট্যাংকের ছোড়া কয়েকটি গুলি বিদ্যালয়ে আঘাত হেনেছে। সেখানে গাজার বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা আশ্রয় নিচ্ছিলেন।

ইহুদি হলিডে পাসওভার উপলক্ষে ইসরাইলে সরকারি অফিস এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা ছিল। এর মধ্যে সোমবার শেষরাতে সেখানে রকেট হামলার সতর্কতা জারি করে ইসরাইল। একইসঙ্গে বন্ধ রাখা হয় দক্ষিণ সীমান্ত শহরগুলো। তবে এই হামলায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ইসরাইলের সেরত ও নিরামে হওয়া এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সহযোগী একটি গোষ্ঠী। ইসরাইলি ভূখণ্ডে এই হামলার পরপরই উত্তর গাজায় আক্রমণ জোরদার করেছে ইসরাইল। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ ইসরাইলি সীমান্ত পেরিয়ে উত্তর গাজায় ঘন কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। বেইত হ্যানউন এবং জাবালিয়ার পূর্বদিকে গোলাগুলির তীব্রতা ছিল। মঙ্গলবার সকালে গাজা শহরের অন্যতম পুরনো শহরতলি জেইতুনেও হামলা অব্যাহত ছিল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেখানকার প্রধান সড়ক বরাবর অন্তত ১০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। সূত্র : রয়টার্স, আল জাজিরা।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews