বাছাই পর্ব থেকে আর্জেন্টিনা ফুটবলের রেকর্ড-কীটদের বিমলানন্দ দিয়ে যাচ্ছে। তখন থেকেই রেকর্ড বইয়ের পুরোনো দলিল-দস্তাবেজ ঘাঁটাঘাঁটি চলছে। শেষ কবে আর্জেন্টিনা বাদ পড়েছে... এসব রেকর্ড সামনে আনার পর যদিও বা চূড়ান্ত পর্বে এল দল; এখানেও এখন রেকর্ড বই উল্টে-পাল্টে দেখতে হচ্ছে। ফুটবল বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে আর্জেন্টিনার এমন বাজে শুরু যে আগে কখনো হয়নি। এমনকি ২০০২ বিশ্বকাপেও না। যেবার বাছাই পর্বে দাপটের সঙ্গে খেলেও প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়েছিল তারা, সেবারও এমন লজ্জা অন্তত পেতে হয়নি।
৫০ বছর পর
আজ ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে হেরেছে আর্জেন্টিনা। গ্রুপ পর্বে এত বড় হার! শেষ কবে হেরেছিল তারা? এবারও রেকর্ড বইয়ের খোঁজ। সর্বশেষ সেই ১৯৫৮ সালে গ্রুপ পর্বে চেকোস্লোভাকিয়ার কাছে ৬-১ গোলে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর এটাই গ্রুপ পর্বে তাদের সবচেয়ে বড় পরাজয়। অথচ চেকোস্লোভাকিয়া দেশটিই এখন আর নেই। পৃথিবীর মানচিত্র কতটা বদলে গেছে। এরপর আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়নই হয়েছে দুবার। ফাইনালে উঠেছে আরও দুবার।
টানা চার ম্যাচ জয়শূন্য
আর্জেন্টিনা গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল পেরিয়েছিল টাইব্রেকারে। ফাইনালে গিয়েছিল হেরে। এবার গ্রুপ পর্বে প্রথম দুই ম্যাচে জয় নেই। টানা চার ম্যাচ তারা জিততে ব্যর্থ হলো। বিশ্বকাপের ইতিহাসে টানা চার ম্যাচে জয়শূন্য আগে কখনো থাকেনি আর্জেন্টিনা।
৬৪৭ মিনিট
বিশ্বকাপে ৬৪৭ মিনিট ধরে গোল পাচ্ছেন না মেসি। সর্বশেষ গোল করেছিলেন গত বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন মেসি। নাইজেরিয়া কিন্তু সহজে ছেড়ে দেয়নি। আর্জেন্টিনা জিতেছিল ৩-২ গোলের ন্যূনতম ব্যবধানে। সামনে সেই নাইজেরিয়াকেই পাচ্ছেন মেসি। এরপর গত বিশ্বকাপে চারটি নকআউট পর্বের ম্যাচের পর এবার গ্রুপ পর্বে দুটি ম্যাচ। মেসি সাড়ে ছয় শ মিনিট ধরে বিশ্বকাপে গোলহীন!
১১ বিশ্বকাপ পর
১১ বিশ্বকাপ পর আর্জেন্টিনা এই প্রথম গ্রুপ পর্বের প্রথম দুটি ম্যাচ জিততে ব্যর্থ হলো। ১৯৭৪ সালে সর্বশেষ এমনটা হয়েছিল। পোল্যান্ডের কাছে ৩-২ গোলে হেরে যাওয়ার পর ইতালির সঙ্গে ১-১ ড্র করেছিল তারা।
২০০২-এর পর
আর্জেন্টিনা সর্বশেষ গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল এশিয়ায় অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপে। সেবার বাছাই পর্বে অপরাজিত থেকে খেলতে আসা ফেবারিট আর্জেন্টিনার ভরাডুবি হয়েছিল গ্রুপ পর্বে। আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্বে বিদায় নিয়েছে মাত্র দুবার।
গ্রুপ পর্বের তিন ব্যর্থতা
আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারেনি তাদের ইতিহাসে মাত্র তিনবার। ১৯৫৮, ১৯৬২ আর ২০০২।
প্রথমবার
আর্জেন্টিনা যখন এত এত হতাশার রেকর্ডে নিজের নাম খুঁজে নিচ্ছে, তখন ক্রোয়েশিয়ার জন্য আছে রাশি রাশি গর্ব। ১৯৯৮ সালে ক্রোয়েশিয়া নামে খেলতে এসে চমকে দিয়ে সেমিফাইনালে চলে গিয়েছিল তারা। এরপর আর গ্রুপ পর্বের বাধা পেরোতে পারেনি। অবশেষে আবার দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে ফেলল ক্রোয়েশিয়া। যেটা তাদের এই সোনালি প্রজন্মের জন্য প্রথমের স্বাদ।