সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী  চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। নেপালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে আনন্দময় রাত উপহার দিয়েছে। শিরোপা জয়ের মূল কারিগর মোসাম্মত সাগরিকা। একাই করেছেন ৪ গোল! আজ ক্যাম্প হোটেলে সাফ ছাড়াও সামনের এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্ট নিয়ে কথা বলেছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সেই কথার পাশাপাশি উঠে এসেছে ক্যারিয়ারের নানান বিষয়ও। 

সামনে এএফসির বাছাই পর্ব। কতটা প্রস্তুত আপনারা?

সাগরিকা: আসলে আমরা প্রস্তুত আছি। এর থেকে আরও ভালো কিছু করতে হবে আমাদের। যে কয়দিন সময় পাবো, আমাদের আরও ভালোভাবে তৈরি হতে হবে। এর থেকে ভালো পারফরম্যান্স করতে হবে। তাহলে আমরা ভালো কিছু করতে পারবো। 

প্রতিপক্ষ নিয়ে কোনও ধারণা...

সাগরিকা: প্রতিপক্ষ সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। তারা কেমন খেলে তা এখনো দেখিনি। তো আমাদের কোচ যে নির্দেশনা দেন, সেটা মেনে আমাদের খেলতে হবে। ইনশাআল্লাহ আমরা ভালো কিছু করে আসবো। 

ক্যারিয়ারের শুরু নিয়ে.. 

সাগরিকা: ছোটন স্যার আমাকে গড়ে তুলেছেন। এখন লিড দিচ্ছেন বাটলার স্যার। তো দুজনই আমার জন্য ভালো। ছোটন স্যার খুব সাপোর্ট করেছেন আর এখন বাটলার স্যার অনেক সাপোর্ট করছেন। 

হ্যাটট্রিক করার পর (কাল) ‘মারামারি’ করলেন না কেন?

সাগরিকা: আসলে সবসময় তো আর মারামারি করলে হবে না। এটা বুঝতে পেরেছি যে আমাদের স্ট্রাইকারদের সবসময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। যদি মাথা ঠান্ডা রাখি, তাহলে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করতে পারবো। 

লাল কার্ড দেখলেন। তিন ম্যাচ খেলতে পারেননি। কালকে চার গোলই ছিল সুন্দর। তিনটা ম্যাচ খেলতে না পারায় জেদ কাজ করেছিল কিনা? 

সাগরিকা: অবশ্যই। একজন প্লেয়ার যখন তিনটা ম্যাচ খেলতে পারবে না তার মধ্যে এমনিতেই জেদ চলে আসবে। যদি আমি সুযোগ পাই সেটা কাজে লাগাবো। তো আমি একটা ম্যাচ পেয়েছি, এটাই কাজে লাগিয়েছি। আমার দেশকে ভালো কিছু দিতে পেরেছি, আমার টিমমেটদের জেতাতে পেরেছি, এটাই ভালো কথা। 

দুই গোলের জন্য টপ স্কোরার হতে পারেননি..

সাগরিকা: অবশ্যই টার্গেট ছিল। একটা প্লেয়ারের খুব আশা সে সর্বোচ্চ গোল করবে। আর আমাদের ফরোয়ার্ডদের আশা থাকে যে সর্বোচ্চ গোলদাতা হবো, সেরা প্লেয়ার হবো। তো আমারও এটা মাথায় ছিল। এবারও সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং সেরা ফুটবলার হবো। এবার একটা (সর্বোচ্চ গোলদাতা) হতে পারিনি। এটা তো একটু কষ্ট দিচ্ছে। তবে তিনটা ম্যাচ খেলে সেরা প্লেয়ার হতে পেরেছি বলে ভালো লাগছে। 

উদযাপন নিয়ে...

সাগরিকা: কালকে বাংলাদেশে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেটা আপনারা সবাই জানেন। তাদের জন্য আমাদের অনেক মন খারাপ ছিল। খুব কষ্টকর। তার জন্য আমরা বেশি উদযাপন করতে পারিনি। 

কেউ ছবি তুলেছে, কেউ আবার তুলি নাই। এই দুর্ঘটনার জন্য আমরা সবাই চুপচাপ ছিলাম। এরপর হোটেলে চলে এসেছিলাম। 

এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ কোয়ালিফাই নিয়ে বাড়তি চাপ অনুভব করছেন কিনা?

সাগরিকা: আমরা চাই দেশের মানুষ যেভাবে সাপোর্ট করছেন, যেভাবে খেলা দেখছেন, তা ধারাবাহিকভাবে করলে ভবিষ্যতে এর থেকে আমরা ভালো কিছু উপহার দিতে পারবো। এএফসিতে চেষ্টা করবো ভালো করার। 

দলে নিজেদের মধ্যে লড়াইটা কেমন উপভোগ করেন?

সাগরিকা: তিন ম্যাচে আমার জায়গায় তৃষ্ণা খেলেছে। সে ভালো করেছে। আমরা চাই যদি প্রতিটি পজিশনে আমাদের একাধিক প্লেয়ার থাকে, তাহলে আমাদের মধ্যে ভালো করার স্পৃহা বাড়বে, জেদ কাজ করবে। তখন চিন্তা থাকবে যে তার থেকে ভালো করে আমাকে টিমে থাকতে হবে। আমরা টিমমেটরা এক হয়ে লড়াই করতে চাই।

সিনিয়র দলে বেশিরভাগ সময় বেঞ্চে থাকতে হয়। এই টুর্নামেন্টে তিন ম্যাচ খেলে ৮ গোল করার পর কী মনে হয় সিনিয়র দলে শুরুর একাদশে থাকতে পারবেন?

সাগরিকা: আমি কেমন পারফরম্যান্স করছি তা তো নিজে বলতে পারবো না। এটা নির্ভর করছে কোচের ওপর। কোচের যদি মনে হয় আমি ভালো পারফরম্যান্স কর ছি.. আমাকে সেরা একাদশে নামানো উচিত, তাহলে আমি ভালো কিছু করতে পারবো। আর যদি না মনে হয় এটা তো আর কিছু করার নাই। অবশ্যই আমার আত্মবিশ্বাস আছে সিনিয়র দলে খেলার। আপুদের মতো খেলতে পারি না। তবে তার চেয়ে বেটার পারফরম্যান্স করলে অবশ্যই একদিন শুরুর একাদশে থাকতে পারবো। 

বাবার সঙ্গে...

সাগরিকা: আমার খেলা দেখতে বাবা ঢাকায় আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঢাকায় থাকার কোনও জায়গা নেই বলে তিনি আসেননি। আর মাও একটু অসুস্থ ছিলেন। তারপরও সেরা ফুটবলার হওয়ায় আমার বাবা অনেক খুশি। 

ক্যারিয়ারে তিনটা হ্যাটট্রিকের মধ্যে কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন। আর কোন গোলটা?

সাগরিকা: এর আগে ভারতের সঙ্গে শেষ মুহূর্তে যে গোলটি করেছিলাম সেটা সেরা বলবো। আর কালকের হ্যাটট্রিকটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

দেশের বাইরে কাকে অনুসরণ করেন?

সাগরিকা: আমি নেইমারকে অনুসরণ করি। 

নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চান?

সাগরিকা: আমার আগে ড্রিবলিং স্কিল একটু কম ছিল। এখন আগের চেয়ে একটু বেটার করেছি। সামনে আরও ভালো খেলতে চাই।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews