বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণ উপকূলে গত তিন দিনের বৃষ্টিতে আমন ও রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

কৃষকেরা বলছেন, বৃষ্টি আরও দু-এক দিন বিলম্বিত হলে তাঁরা মাঠে মার খাবেন। কারণ, এক সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান ফসল আমন কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু অসময়ে এমন টানা বৃষ্টি হওয়ায় বেশির ভাগ আমনখেতের ধানগাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। কাদাপানিতে একাকার হয়ে গড়াগড়ি খাওয়ায় এই ধান ভেপে পচন ধরার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। রবি ফসল বিশেষ করে খেসারি ও আলু-মিষ্টি আলুখেতের অবস্থা আরও ভয়াবহ বলে জানান তাঁরা।

তবে কৃষি বিভাগের বরিশাল বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক ওমর আলী শেখ গতকাল রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তাতে আমন ফসলের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হবে না বললেই চলে। খেসারি, সরিষা, তরমুজ ও আলুর ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা আছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছি।’

বরিশাল আবহাওয়া বিভাগ বলছে, শনিবার দুপুর ১২টা থেকে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ৩০ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বিভাগের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে বরগুনা জেলায়। এই জেলায় তাদের তথ্য অনুযায়ী বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪০ মিলিমিটার। এ ছাড়া ঝালকাঠিতে ২৫ মিলিমিটার, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলায় ৩৫ মিলিমিটার এবং সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে পিরোজপুর জেলায় ১৩ মিলিমিটার।

আবহাওয়া বিভাগের বরিশাল কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান গতকাল দুপুরে বলেন, নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে গেলেও গতকাল বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনা জেলায় মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল।

মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন দিনের আমন ফসলের অনেক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার কয়েকজন কৃষক জানান, সপ্তাহখানেক পর তাঁরা আমন ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এই অবস্থায় বৃষ্টি হওয়ায় খেতে পানি জমে অধিকাংশ ধানগাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। এখন এই ধান চিটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

ঝালকাঠির চর রাজাপুর গ্রামের কৃষক আবদুল হক বলেন, বৃষ্টিতে সব ধানগাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। কাদাপানিতে ডুবে গেছে। বৃষ্টি আরও দু-এক দিন স্থায়ী হলে এসব ধানে ভাপিয়ে পচন ধরবে।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৪ হাজার হেক্টর জমিতে খেসারি ডাল বপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ জমির খেসারি ডালের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। বাকি জমির ৫ শতাংশ ধানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর ৫০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ জমির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

বিভাগের সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায়। উপজেলার রূপদোন এলাকায় প্রায় ৫০০ কৃষক অন্তত ৩০০ একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। এসব জমি আবাদ শেষে অনেকে আলু রোপণ করেছেন। রোপণ করা জমির বীজ পানিতে ভিজে যাওয়ায় এসব বীজ সম্পূর্ণ পচে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews