নড়াইল শহর সংলগ্ন বাঁশভিটা এলাকায় শুভ্রা মুখার্জি হাসপাতাল নির্মাণ কাজে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার বিকেল ৩টার দিকে নির্মাণাধীন হাসপাতাল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় লিয়াকত আলী টিটো (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে রিভলবার ও দুই রাউন্ড গুলিসহ আটক করেছে পুলিশ। টিটো নড়াইল সদর উপজেলার ফেদী গ্রামের সৈয়দ আক্কাস আলীর ছেলে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের বাঁশভিটা এলাকায় ‘শুভ্রা মুখার্জি হাসপাতাল’ নির্মাণের লক্ষ্যে প্রায় দুই মাস আগে জমি কেনাসহ বালি ভরাটের কাজ শুরু হয়। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির স্ত্রী নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামের মেয়ে শুভ্রা মুখার্জির নামে এই হাসপাতালের নামকরণ করা হয়েছে। হাসপাতালের নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন নড়াইল পৌর এলাকার মহিষখোলা ও ভওয়াখালীর কয়েকজন ব্যক্তি।
হাসপাতাল নির্মাণ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলেন, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের অডিট কর্মকর্তা কাজের অগ্রগতি ও বিল মেটাতে বুধবার সকালে নড়াইলে আসেন। বিষয়টি জানতে পেরে কয়েকজন ব্যক্তি ওই কর্মকতার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা অস্ত্র বের করে ভয়ভীতি দেখায় এবং মারধর করে।
এছাড়া হাসপাতালের সাইনবোর্ড ও গ্লাসঘর ভাঙচুর এবং বালি ভরাটের ১০টি পাইপ কেটে ফেলে। এসময় অস্ত্রসহ এক যুবককে ধরে পুলিশে দেয়া হয়। অভিযোগ করা হচ্ছে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ১০ লাখ টাকা দাবি করেন।
তবে এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান মুকুল বলেন, শুভ্রা মুখার্জি হাসপাতালের নামে ক্রয়কৃত জমি ও জমির মূল্য নিয়ে জমির মালিকদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সমস্যা চলছিল। সৃষ্ট এই জটিলতা অবসানের লক্ষ্যে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান রোজ ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুজ্জামান পলাশ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে বেতভিটায় যান। এ সময় হাসপাতাল নির্মাণ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধর করে। চাঁদা দাবির অভিযোগ ঠিক নয়।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতাদের আহত করার ঘটনায় সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেয়। ক্যামেরায় এ দৃশ্য ধারণ করার সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভির নড়াইল দক্ষিণ প্রতিনিধি মোস্তফা কামালের ক্যামেরা ভাঙচুর এবং তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কামালকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এসব বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় অস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
হাফিজুল নিলু/এফএ/পিআর