রাজধানীতে আবারও যাত্রীবাহী বাসে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। এবার বাসাবোর বৌদ্ধমন্দির এলাকায় লাব্বাইক বাসে দুই ছাত্রী এর শিকার হয়েছেন। বাস খালি করে তাদের মুখ চেপে ধরে পা বেঁধে ফেলার চেষ্টা করেছিল বাসটিতে থাকা পরিবহনকর্মীরা।

বুধবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে বলে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে লেখা স্ট্যাটাসে জানান জাতীয় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রী।

ওই ছাত্রীর স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হল- ‘আজ বিকাল ৫ -৫.১৫, শ্যামলী থেকে আমি আর আমার এক বান্ধবী লাব্বাইক বাসে উঠলাম কমলাপুর যাওয়ার উদ্দেশে। প্রায় দু-চার দিন পরপরই এই রুটে যাতায়াত হয় আমার।’

‘বাসে কমপক্ষে ২০-২৫ জন লোক ছিল। উঠার পরপরই কন্ডাক্টর আসে ভাড়া নেয়ার জন্য- বললাম ভাইয়া একটু পরে দিই সায়েদাবাদ যাব আমরা। সিট না থাকায় পেছনে গিয়ে বসতে হয় আমাদের। আমরা দুজন কিছুক্ষণ গল্প করে পরে জ্যামে বোরিং লাগায় হেডফোনে গান শুনতে থাকি। তখন সবে আমরা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ।’

‘ফার্মগেট পার হওয়ার পর কন্ডাক্টর আবার আমাদের কাছে ভাড়া নেয়ার জন্য আসে, ভাড়া নিতে নিতে কন্ডাক্টর হাসিমুখে জিজ্ঞেস করল আপারা সায়েদাবাদ কই যাইবেন প্রথমে বলতে গিয়েও পরে বললাম- আপনার জানা লাগবে না মামা, আপনি সায়েদাবাদের ভাড়া রাখেন দুজনের। আমরা আবার হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে থাকি।’

‘বাংলামোটর পার হয়ে মালিবাগ ক্রস করে খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ি পার হতে হতে দেখলাম আস্তে আস্তে পুরো বাস খালি হয়ে যাচ্ছে মানুষজন নেমে যাচ্ছে। আমরাও ব্যাপারটা নরমালি নিই।’

‘খিলগাঁও ফ্লাইওভারে যখন বাস উঠে মাত্র আমরাসহ চারজন লোক ছিল বাসে, বাসাবোতেও বাসটা আর থামল না। মানুষ থাকা সত্ত্বেও বাসে লোক উঠায়নি কন্ডাক্টর। বৌদ্ধমন্দির পার হওয়ার পর আমরা যখন ফোন ব্যাগে ঢুকাচ্ছি নামার জন্য রেডি হব; হঠাৎ পেছন থেকে আমাদের দুজনকে ২টা লোক হাত দিয়ে মুখ-চোখ চেপে ধরে।’

‘বাসটা হঠাৎ জোরে টানা শুরু করল, আমি চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। পরে আরেকটা লোক আমার পা বাঁধা শুরু করল, বুঝতে পেরে শরীরের শক্তি দিয়ে তাকে লাথি মারি আমার মুখে রুমাল চেপে ধরায় চিৎকারও দিতে পারছিলাম না। ভয়ে আতঙ্কে শরীরের প্রতিটা নার্ভ আমার জমে গিয়েছিল, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বুঝতে পারলাম আমি একদম গেটের সামনে এসে পড়ছি এবং ধাক্কা খেয়ে দেখলাম আমার বান্ধবী আমার ঠিক পাশে।’

‘হাত দিয়ে যত জোরে পারি নিজের শক্তি দিয়ে লোকটার বুকে আঘাত করি, সাথে সাথে উনি আমাকে ছেড়ে দিলে আমি আরেকটা লাথি মারি পেট বরাবর। কিছু না ভেবেই আমার পায়ের জুতা খুলে আমার বান্ধবীকে যে লোকটা ধরে রেখেছে তার মাথায় মারি, ওই লোকটা ড্রাইভারের পাশে পড়ে যায়। তৎক্ষণাৎ আমরা গেট খুলে বাস থেকে লাফ দিয়ে ছিটকে পড়ি। কোনোমতে রাস্তা পার হয়ে দেখি বাসটা সোজা চলে গেছে।’

‘একজন ট্রাফিক পুলিশকে বললাম। উনি দেখি বলে বাইক নিয়ে সোজা চলে গেল আর দেখতে পেলাম না উনাকে। বুক ফেঁটে, রাগে, দুঃখে ভয়ে শুধু চোখ দিয়ে পানি ঝরছে আমাদের। রিকশা নিয়ে বাসায় এসে পড়ি।’

‘এখনও রাগে-ভয়ে কাঁপছি। কাকে কি বলব? বলে কি লাভ? কে পাবে তাদের? কার কাছেই বা বিচার চাইব।’

বাংলাদেশ সময়ঃ ১০৫০ ঘণ্টা, ২০ এপ্রিল, ২০১৮



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews