যুক্তরাষ্ট্রে কুকুরের শরীরে নতুন ধরনের টিক-বাহিত (টিকের কামড়ে ছড়ানো) একটি ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। এতে কয়েকটি কুকুর গুরুতর অসুস্থ হয় এবং কিছু কুকুর মারা যায়। নতুন এই ব্যাকটেরিয়ার নাম রিকেটসিয়া ফিনি (Rickettsia finnyi)। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ব্যাকটেরিয়াটি আগে কখনো দেখা যায়নি।
নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা প্রথমে একটি অসুস্থ কুকুরের রক্ত পরীক্ষা করে ব্যাকটেরিয়াটি খুঁজে পান। কুকুরটিতে ‘রকি মাউন্টেন স্পটেড ফিভার’ (RMSF)—এক ধরনের মারাত্মক সংক্রমণ—এর মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। পরে জিনগত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায়, এটি সম্পূর্ণ নতুন ব্যাকটেরিয়া।
২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ-পূর্ব ও মধ্য-পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১৬টি কুকুরে এই ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন। আক্রান্ত কুকুরগুলোর জ্বর, দুর্বলতা এবং রক্তের প্লেটলেট কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা গেছে। বেশিরভাগ কুকুর অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়, তবে দেরিতে শনাক্ত হওয়ায় তিনটি কুকুর মারা যায়।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, রিকেটসিয়া পরিবারের অনেক ব্যাকটেরিয়াই মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তাই এই নতুন ব্যাকটেরিয়াকেও সম্ভাব্য ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গবেষকেরা মনে করছেন, কুকুর মূল বাহক নয়; বরং তারা অনিচ্ছাকৃতভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। ব্যাকটেরিয়াটি স্তন্যপায়ী প্রাণীর কোষের ভেতরে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে।
গবেষণা বলছে, লোন স্টার টিক নামের এক ধরনের টিক সম্ভবত এই রোগ ছড়ায়। কারণ, ওই টিকে রিকেটসিয়া ফিনির ডিএনএ পাওয়া গেছে। এই টিকের বিস্তৃত এলাকার সঙ্গেও কুকুরগুলোর অবস্থান মিলে যায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষে সংক্রমণ ঠেকাতে এখনই নজরদারি বাড়ানো জরুরি। কোন প্রাণী বা টিক মূল বাহক—তা দ্রুত শনাক্ত করা গেলে ভবিষ্যতের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল