নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে সিরিজের শেষটা ভালো করতে মুখিয়ে মাশরাফি মুর্তজারা। তবে কাজটা মোটেও সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। এমনিতেই স্বাগতিকদের বিপক্ষে আগের দুই ম্যাচে বাজে খেলার চাপ সঙ্গী, এর উপর দলে ইনজুরির প্রভাব তো আছেই। এত কিছুর পরও শেষ ওয়ানডে জিতে মান বাঁচাতে মরিয়া লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

বুধবার ডানেডিনে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল নাইন।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর আগে ২০০৭, ২০১০ ও ২০১৬ সালের তিন সিরিজেই হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। এবার হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাংলাদেশ রক্ষা পেতে পারে কি-না, সেটার জন্য অপেক্ষা টাইগার ভক্তদের।

শেষ ম্যাচে জিতলে অভূতপূর্ব দুটি ঘটনা তৈরি হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে- এক, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবার ওয়ানডে জয়। অন্যটি, প্রথমবারের মতো ব্ল্যাক ক্যাপদের কাছে হোয়াইটওয়াশ এড়ানো।

চলতি সিরিজের দুই ম্যাচে ব্যাটসম্যান-বোলার-ফিল্ডারদের অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সে নিউজিল্যান্ডের কাছে ইতোমধ্যে সিরিজ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ। নেপিয়ার ও ক্রাইস্টচার্চের ম্যাচে শুরু থেকে ছন্নছাড়া ব্যাটিং ছিল। দ্রুত উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে তারা। তাই শেষ ম্যাচে ব্যাটিংয়ে উন্নতির জন্য মরিয়া মাশরাফিরা।

নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার আগেই ইনজুরির থাবা বেশ ভালোভাবে পড়ে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে। বিমানে ওঠার আগেই ছিটকে যান সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদ।

দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে গিয়ে পাঁজরে ব্যথা পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তার চোট গুরুতর না হলেও ম্যাচ খেলতে পারবেন কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শেষ ম্যাচের আগ মুহূর্তে মুশফিকের সবশেষ অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তবে বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা মোহাম্মদ মিঠুনের ইনজুরি। গত দুই ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মধ্যে কেবল তিনিই বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন। এখন পর্যন্ত এই সফরে বাংলাদেশের যে দুটি হাফসেঞ্চুরি, তা এসেছে মিঠুনের ব্যাটে (৫৭ ও ৬২)। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে দারুণভাবে মানিয়ে নেওয়া এই মিঠুনকেই বাংলাদেশ পাচ্ছে না শেষ ম্যাচে।

মিঠুনের অভাব পূরণ করতে ক্রাইস্টচার্চ থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে মুমিনুল হককে। সেখানে টেস্ট দলের সঙ্গে অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন মুমিনুল। তবে শেষ পর্যন্ত মিঠুন-মুশফিক দুজনই যদি খেলতে না পারেন, তবে বাংলাদেশের একাদশ সাজাতেই হিমশিম খেতে হবে!

অবশ্য মুমিনুল একাদশে থাকবেনই এমন নিশ্চয়তা দেননি মাশরাফি, ‘আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিবো। এখনও একাদশ নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমাদের হাতে বাড়তি খেলোয়াড় কমই আছে। কাউকে না কাউকে দিয়েই তো জায়গা পূরণ করতে হবে। ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে দ্বাদশ বা ১৩তম ফিল্ডার হিসেবেও লাগতে পারে। এই চিন্তা করেই মুমিনুলকে আনা হয়েছে।’

আগের দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের কাছে রীতিমতো উড়ে গেছে বাংলাদেশ। তবে ডানেডিনের উইকেট আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে তাদের। এখানে ব্যাটিং উইকেট দেখে ব্যাটসম্যানদের মনে কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস জন্মাচ্ছে। যদিও ডানেডিনে এর আগে একটি মাত্র ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। ২০১০ সালে ওই ম্যাচে মুশফিকের ৮৬ রানের ওপর ভর করে বাংলাদেশ করেছিল ১৮৩ রান। স্বাগতিকরা শফিউল-রুবেলের বোলিং তোপে পড়লেও কিউইদের ম্যাচ জিততে তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তারপরও আত্মবিশ্বাসী মাশরাফি, ‘ডানেডিনের উইকেট ব্যাটিং বান্ধব। আশা করি শেষ ম্যাচে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।’

একদিকে শেষ ম্যাচটি জিততে মরিয়া বাংলাদেশ, আর কিউইরা এই ম্যাচকে বেছে নিচ্ছে সবশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে হারের বদলা নিতে। ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে রস টেলর বলেছেন, ‘আমরা জানি কীভাবে দাপট দেখাতে হয়। গত দুই ম্যাচে সেটা হয়েছে। তবে খেলোয়াড়রা আরও কিছু দেখাতে মুখিয়ে আছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তারা আমাদের হারিয়েছিল। অবশ্যই এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।’

এই ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য রস টেলর ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। ডানেডিনে কিউই এই ব্যাটসম্যানের পরিসংখ্যান তা-ই বলছে। ২০১৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই মাঠেই তার প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরি (২১৭)।

গত বছর ইংল্যান্ডের করা ৩৩৫ রানের জবাবে টেলরের ১৪৭ বলে ১৮১ রানের কল্যাণে জিতেছিল কিউইরা। বুধবার বাংলাদেশের বিপক্ষে মাশরাফি-রুবেলরা নিশ্চয় টেলরকে বিধ্বংসী হতে দিতে চাইবেন না!



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews