একবার আবেদ ঢাকা থেকে নিয়ে গিয়েছিল খেলনা-বেহালার বাদক ও বিক্রেতা এক অনতিতরুণকে। সে তার বেহালায় নানা সুর তুলেছিল-বিশেষ করে হিন্দি ছায়াছবির জনপ্রিয় গানের। পেটের ওপর মাটির সরা বসিয়ে তালবাদ্যের দ্যোতনা তুলেছিল। কেউ কেউ তা উপভোগ করেছিলেন, কেউ কেউ ভেবেছিলেন, করুণা করে আমরা এই স্থূল প্রদর্শনীতে সায় দিচ্ছি। আবেদ আসলে ছেলেটির প্রতিভার কদর করতে চেয়েছিল এবং তাকে খানিকটা আর্থিক সাহায্যও করতে চেয়েছিল।
অচিরেই মুক্তিযুদ্ধের শুরু হওয়ায় আমরা ছিটকে পড়লাম। আমি চলে গেলাম আগরতলা হয়ে কলকাতায়। সেখানেই, অনেক দিন পরে জানতে পারি, আবেদ বিলেতে চলে গেছে এবং সেখানে সে পুরো সময়টা ব্যয় করছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ব্রিটিশ জনমতগঠনে এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতি প্রবাসী বাঙালির ঐক্যবদ্ধ সমর্থনদানের জন্য সক্রিয় ভূমিকাপালনে।
মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরে আবেদ লন্ডনের ঘরবাড়ি বেচে সেই টাকা দিয়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয় এবং ব্র্যাকের প্রথম কমিটিতে সে সুফিয়া কামাল ও অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের মতো মানুষকে থাকতে সম্মত করে। আমি চট্টগ্রাম থেকে এসব বিষয়ে আবছা খবরাখবর পাই।