ময়মনসিংহে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৩ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে এলাকা ছেড়ে মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মগোপনে চলে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে গত ১৯ মে নান্দাইলে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় ইমন হোসেন (৩০) নামে এক তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। এর পরদিন ২০মে ময়মনসিংহ মহানগরীর গনষার মোড় এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী চরপাড়া কপিক্ষেত এলাকার রাজিউল হাসান বিপ্লব(৪৫)। এরপরই ২৪ মে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মাদকের পাড়া হিসেবে পরিচিত পুরোহিত পাড়ায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় রাজন মিয়া(৩০) নামে আরেক মাদক ব্যবসায়ী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ মহানগরীর অলিগলিসহ উপজেলাগুলোতে রয়েছে অসংখ্য মাদক বেচাকেনার স্পট। মাদকবিরোধী অভিযানের  কারণে নতুন করে মাদকের স্পট তৈরি হচ্ছে। বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার আতঙ্কে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়ে নতুন করে মাদকের স্পট গড়ে তুলছে। ময়মনসিংহ মহানগরীর মাদক এলাকা হিসেবে খ্যাত পুরোহিতপাড়া, কৃস্টপুর,আলিয়া মাদ্রাসা রোড, বলাশপুর, সানকিপাড়া, চামড়াগুদাম, চরপাড়াসহ বিভিন্ন মাদক স্পটে গিয়ে দেখা গেছে এলাকা নিস্তব্ধ এবং মানুষের আনাগোনা একেবারে নেই বললেই চলে। মাদক ব্যবসায়ীরা বাড়ি ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে, আছে শুধু শিশু ও নারীরা।

পুরোহিত পাড়ার বাসিন্দা গৃহবধূ আসমা বেগম বলেন, ‘এখন আর রাতে ঘুমাতে পারিনা। কখন পুলিশ এসে বাড়ি-ঘর তল্লাশি করে এই ভয়ে। পুলিশের ভয়ে এলাকায় যারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল তারা আর বাড়িতে থাকে না। এলাকা ছেড়ে তারা অন্য কোথাও চলে গেছে।’

জেলা গোয়েন্দা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান জানান, জেলায় মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকা অনুযায়ী আইনশৃংখলা বাহিনী প্রতিদিন মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। গোয়েন্দা পুলিশ চলতি মাসে মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৭৮ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে এবং মামলা হয়েছে ৩৮টি।

ময়মনসিংহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা  ১৩৭ জন। চলতি মে মাসে (২৫মে পর্যন্ত) অভিযান চালিয়ে ১৫ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার ও ১৫টি মামলা দায়ের করা হয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অফিস সহকারী আমজাদ আলী জানান, জনবল সংকটের কারণে  মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করাসহ মাদক উদ্ধার করতে কিছু সমস্যা হচ্ছে।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস.এ. নেওয়াজি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। পুলিশের ওপর গুলি করাসহ হামলা করায় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়ছে এবং বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীরা নিহত হচ্ছে এবং গ্রেফতার হচ্ছে। মাদকবিরোধী অভিযানের কারণে বেশিরভাগ মাদক ব্যবসায়ী এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছে। তবে তারা যেন নতুন করে মাদকের আস্তানা গড়ে তুলতে না পারে সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক আছে। মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।’



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews