বাংলাদেশ দলের টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে সন্ধ্যা হতেই খবর তিনি আর থাকছেন না ওয়ানডের নেতৃত্বে। দায়িত্ব পেয়েছেন মেহেদী মিরাজ।
এই পর্যন্ত ঠিক থাকলেও ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন উঠেছে, নাজমুল হোসেন শান্তর সাথে আলোচনা না করেই কেড়ে নেয়া হয়েছে তার অধিনায়কত্ব। এমনকি বিসিবি বিবৃতি দেয়ার আগে বিষয়টা জানতেনও না তিনি।
স্বাভাবিকভাবেই চলছে সমালোচনা। অবশ্য এমনটা হবারও ছিল। কয়েক মাস আগে যখন শান্ত স্বেচ্ছায় নেতৃত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন, তখন বিসিবি’র অনুরোধে থেকে যান। পরে অবশ্য টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন।
তবে বাকি দুই ফরম্যাট— ওয়ানডে ও টেস্টের নেতৃত্ব রেখে দেন। সাজাতে থাকেন বড় পরিকল্পনা। তবে এর মাঝে হুট করে কোনো আলোচনা ছাড়াই শান্তকে সরিয়ে দেয়া হলো ওয়ানডে নেতৃত্ব থেকে।
তবে অধিনায়ক হয়ে আজ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসে বিষয়টা এড়িয়ে গেলেন মিরাজ। বলেন, ‘আমি জানি না, তারা কিভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি যতটুকু জানি বোর্ড সভার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত হয়। কেউ একা নিতে পারে না।’
তবে মিরাজ স্বীকার করেছেন, গতকাল হুট করেই বিসিবি থেকে এই দায়িত্ব পেয়েছেন। বলেন, ‘আমাকে গতকাল ফাহিম স্যার ডেকে নিয়ে বলেন, তোমাকে আমরা এ রকম দায়িত্ব দেয়ার কথা চিন্তা করছি।’
‘আমাদের খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেহেতু সামনে খেলা আছে, ওয়ানডে দলটা ঠিক করতে হবে। আমরা সেভাবে পরিকল্পনা করছি। তখন তিনি আমাকে জানিয়েছেন।’
বিষয়টা যা-ই হোক, এমন কোনো কিছুর জন্য শান্তর সাথে সম্পর্ক খারাপ হওয়া বা ড্রেসিংরুমে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন না মিরাজ। বলেন, ‘ড্রেসিংরুমে এ রকম কোনো প্রভাব পড়বে না।’
‘দিন শেষে আমরা সবাই দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলি। শান্ত আর আমার মধ্যে এগুলো কখনোই কাজ করবে না। ও যখন অধিনায়কত্ব করেছে, আমি অনেক সাহায্য করেছি। আশা করি, সেও আমাকে করবে।’
শান্তর কাছ থেকে নাকি ইতোমধ্যে সেই আশ্বাসও পেয়েছেন মিরাজ। বলেন, ‘তার সাথে আমার এই কথাই হয়েছে। আমরা একসাথে কাজ করব বাংলাদেশের হয়ে। একটা ভালো জায়গায় বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে চাই।’
‘সে আমাকে একটা কথাই বলেছে, অধিনায়কত্বে আমি কখনো আলাদা কিছু অনুভব করিনি। আশা করি, আমার ভেতরেও এই জিনিসটা আসবে না,’ যোগ করেন মিরাজ।
এদিকে শুধু শান্ত নয়, মিরাজকে সামলাতে হবে আরো অনেক কিছুই। পড়তে হবে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। বিশেষ করে শেষ আট ওয়ানডেতে যখন মাত্র এক জয়, তখন চিন্তার কারণ অবশ্যই আছে। তাছাড়া র্যাঙ্কিংতেও হয়েছে অবনমন।
তবে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, শেষ আট ওয়ানডের চারটিতে শান্ত নয়, অধিনায়কত্ব করেন মেহেদী মিরাজ। শান্ত চোট পাওয়ায় আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে নেতৃত্ব দেন তিনি। দুটো সিরিজই হারে বাংলাদেশ।
তবে মিরাজের ভাষ্য ‘সেই পরিস্থিতিতে অধিনায়কত্ব করা একটু কঠিন। হঠাৎ অধিনায়কত্ব করেছি। সেটআপ ও পরিকল্পনা অন্যের ছিল। আমার শুধু মাঠ চালাতে হয়েছে। অবশ্যই ওই চার ম্যাচে আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে।’
‘তবে লম্বা সময়ের জন্য পেলে একটু ভালো হয়। দলকে বুস্টআপ করা যায়, কিভাবে করলে ভালো হবে। যেহেতু এক বছরের জন্য পেয়েছি, চেষ্টা করব দলকে সুন্দর একটা জায়গায় দাঁড় করাতে।’