বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে রাঙ্গামাটিতে গত তিন দিন ধরে অব্যাহত প্রবল বর্ষণে পাহাড়ি জনপদে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও শঙ্কা। টানা বৃষ্টির ফলে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় জেলা প্রশাসন জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে। বৃষ্টি চলাকালে যেন কেউ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান না করে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে অবস্থান নেয়। এতে জেলায় খোলা হয়েছে ২৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত প্রায় ২০ হাজার মানুষ সরাসরি পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রতিটি উপজেলায় মাঠে সর্তক রয়েছে উপজেলা প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবক দল ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
রাঙ্গামাটি জেলা সদরে ২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়া জেলার ১০টি উপজেলায় অস্থায়ীভাবে আরো ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং কমিউনিটি সেন্টারগুলো আশ্রয়ের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ (মারুফ) বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করেছি এবং ইতোমধ্যে সেখানে মাইকিং করে সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে। আমাদের অগ্রাধিকার হলো, কোনোভাবে যেন মানুষের প্রাণহানি না ঘটে।
এদিকে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারীবর্ষণ অব্যাহত থাকলেও রাঙ্গামাটি আবহাওয়া অফিস থেকে নির্দিষ্ট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জানা যায়নি। ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সূত্রে জানা গেছে, শুধু রাঙ্গামাটি শহরে ৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে অতীতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।
রাঙ্গামাটিতে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের ভয়াবহ পাহাড় ধসের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এবার আগেভাগেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। ২০১৭ সালে পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছিলেন এক শতাধিক মানুষ, যার মধ্যে সেনা সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন।
দুর্যোগ মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট ও স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রয়েছে। জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি মেডিক্যাল টিম ও ত্রাণসামগ্রীও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।