সময়ের অভাবে ব্যায়াম হয়ে উঠেছে অনেকের জন্য বিলাসিতা। জিমে যাওয়ার সুযোগ তো দূরের কথা, ঘরে বসেই কিছু করার ইচ্ছেও হারিয়ে ফেলেছেন অনেকে। তবে চমকপ্রদ তথ্য দিচ্ছে নাসা—শুধুমাত্র ১০ মিনিটের একটি ব্যায়াম, যা জগিংয়ের চেয়ে প্রায় ৭০% বেশি কার্যকর। এই ব্যায়ামের নাম ‘রিবাউন্ডিং’।
রিবাউন্ডিং মানে হলো ছোট একটি ট্রামপোলিনে লাফানো। দেখতে যেমন মজার, উপকারিতাও তেমনি বিস্ময়কর। নাসার গবেষণায় বলা হয়েছে, ১০ মিনিট রিবাউন্ডিং করলে ৩০ মিনিট দৌড়ানোর সমান বা তার চেয়েও বেশি ক্যালরি বার্ন হয়।
কীভাবে কাজ করে এই ব্যায়াম?
রিবাউন্ডিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—শরীরের উপর চাপ কম পড়ে, কিন্তু ফলাফল বেশি পাওয়া যায়। ছোট একটি ট্রামপোলিনে লাফ দিলে সারা শরীরে প্রভাব পড়ে, কিন্তু হাঁটু বা গোড়ালিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে না। ফলে এটি জয়েন্ট-ফ্রেন্ডলি ব্যায়াম হিসেবেও পরিচিত।
এই ব্যায়ামে শরীরের ভারসাম্য, সমন্বয় এবং মূল পেশিগুলোর (core muscles) ওপর ভালোভাবে কাজ হয়। আর সবচেয়ে বড় কথা—এটি ঘরে বসেই করা যায়, কোনো জিমের প্রয়োজন নেই।
রিবাউন্ডিং কীভাবে করবেন?
এই ব্যায়াম শুরু করতে শুধু একটি মিনি ট্রামপোলিন লাগবে। এটিকে আপনি সহজেই ফ্ল্যাটে, ছাদে বা ঘরের এক কোনায় রেখে ব্যবহার করতে পারেন।
শুরুতে করতে পারেন:
হেলথ বাউন্স (হালকা লাফ)
জাম্পিং জ্যাকস
টুইস্ট
এমনকি নাচের মতো কিছু মুভমেন্টও।
আপনার ফিটনেস অনুযায়ী ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে পারেন—১০ থেকে ১৫ মিনিট যথেষ্ট।
কী উপকার পাবেন?
৭০% বেশি কার্যকর ক্যালরি বার্ন
৮৫% কম প্রভাব জয়েন্টে, মানে কম ব্যথা, দ্রুত রিকভারি
ইমিউন সিস্টেম (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) উন্নত করে, কারণ এটি লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমকে সচল রাখে
স্ট্যামিনা, ব্যালান্স ও কোর স্ট্রেংথ বাড়ায়
ঘরে বসেই করা যায়, বৃষ্টিতে বা যানজটে আটকে না গিয়ে ব্যায়াম করা সম্ভব
বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা হাঁটতে বা দৌড়াতে চান না, কিংবা হাঁটুতে ব্যথা আছে, তাদের জন্য এটি দারুণ বিকল্প হতে পারে।
কাদের জন্য রিবাউন্ডিং?
যারা সময় বাঁচাতে চান
যারা দৌড়ানো অপছন্দ করেন
যারা জয়েন্টে চাপ না দিয়ে শরীরচর্চা করতে চান
যারা ইনজুরি থেকে ফিরেছেন এবং ধীরে ফিরতে চান ফিটনেসে
যারা বাড়িতে সহজে কিছু করতে চান
যদিও রিবাউন্ডিং বেশ নিরাপদ, তবে শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো, বিশেষ করে যদি আপনার কোনো পুরনো ইনজুরি থাকে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।