চাউলের দাম কি বাড়িতেই থাকিবে?

মাত্র আট-দশ দিনের ব্যবধানে চাউলের দর কেজিতে ৪ টাকা অবধি বৃদ্ধি বিশেষত নিম্নআয়ভুক্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারসমূহের জন্য ভালো সংবাদ নহে। সরেজমিন বাজার পরিদর্শনের ভিত্তিতে বুধবার সমকাল জানাইয়াছে, ঢাকার বিভিন্ন বাজারে সর্বাধিক জনপ্রিয় ও মাঝারি চাউল বলিয়া পরিচিত বিআর-২৮ ও পাইজাম চাউল প্রতি কেজি ৫৬-৫৮ টাকা দরে এবং গুটি স্বর্ণা বা মোটা চাউল ৫২-৫৪ টাকায় বিক্রয় হইতেছে, যাহা আট-দশ দিন পূর্বেও ছিল যথাক্রমে ৫২-৫৪ ও ৪৮-৫২ টাকা।

একই সময়ে চিকন বা মিনিকেট চাউলের কেজি ছিল ৬৮-৭২ টাকা, যাহা ভোক্তাদিগকে এখন ক্রয় করিতে হইতেছে ৭০-৭৬ টাকায়। মূলত পাঁচ বৎসর ধরিয়াই প্রধান খাদ্যপণ্যের মূল্য ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পাইতেছে। যে মোটা ও সরু চাল ২০১৯ সালের মে মাসে যথাক্রমে ৪০ ও ৫৮-৬০ টাকা কেজিতে ক্রয় করা যাইত, সেই চাউলের দর গত জানুয়ারিতে দাঁড়ায় ৫৪-৫৫ ও ৬৮-৭০ টাকায়। গত জানুয়ারিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বাত্মক অভিযানের মধ্যে তিন প্রকার চাউলের দর ১-২ টাকা হ্রাস পাইলেও অভিযান শিথিল হইবার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় বৃদ্ধি পায়। অথচ উক্ত পাঁচ বৎসরে দেশের অধিকাংশ মানুষের প্রকৃত আয় বৃদ্ধি দূরস্থ, ক্ষেত্রবিশেষে হ্রাস পাইয়াছে। দুই বৎসরের অধিক সময় যাবৎ গড় মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপর আছে, যাহা মানুষের আয়ের নীরব ঘাতক বলিয়া সর্বমহলেই স্বীকৃত।

বিস্ময়কর হইল, ইতোপূর্বে কোনো রমজানে ক্রেতা কম থাকায় অন্তত চাউলের মূল্য বৃদ্ধি পায় নাই। তদুপরি চাউল আমদানির অনুমতিদানের পাশাপাশি কর-শুল্কও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করিয়াছে সরকার। সম্ভবত উক্ত ক্ষেত্রে প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করিতে না পারিয়া খাদ্য সচিব চাউলের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি বেমালুম অস্বীকার করিয়াছেন। যদিও খোদ সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলিতেছে, গত বৎসরের একই সময় অপেক্ষা বর্তমানে সকল প্রকার চাউলের দর অন্তত ২-৪ টাকা বেশি। এই দিকে যথারীতি খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীগণ এই মূল্য বৃদ্ধির জন্য মিলারদিগকে দায়ী করিতেছেন। অন্যদিকে মিলারগণ দায় চাপাইতেছেন ‘অনিবন্ধিত’ ফড়িয়াদিগের উপর; যাহারা মিলারদিগের ভাষায়, ধানের অবৈধ মজুত গড়ায় মূল্য বৃদ্ধি পাইয়াছে।

আমরা মনে করি, চাউলের দর নিয়ন্ত্রণে সরকারের হাল ছাড়িয়া দিবার কোনো সুযোগ নাই। বিগত বোরো ও আমন মৌসুমে সন্তোষজনক চাউল উৎপাদন সত্ত্বেও সরবরাহ ব্যবস্থার যে কোনো বিন্দুতে গোলমাল আছে বিধায় পণ্যটির মূল্য অস্বাভাবিক রূপ লইতেছে। সুতরাং সেই গোলমালের বিন্দুটি চিহ্নিত করিয়া যদ্রূপ উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে হইবে, তদ্রূপ খুচরা বাজারে চাউলের চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্য রক্ষার্থে সরকারি সরবরাহ ব্যবস্থাকেও কাজে লাগানো যাইতে পারে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews