বর্তমানে দেশে ৫৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১০৯টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা শোচনীয়। অর্থাৎ ব্যাঙের ছাতার মতো গজাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়, কিন্তু মানসম্মত শিক্ষার নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না। গবেষণা ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাব, স্থায়ী ক্যাম্পাসের অনুপস্থিতি, উপাচার্য না থাকা, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ, অকার্যকর শিক্ষা-নীতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতা এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। এছাড়াও রাজনৈতিক উত্থান-পতনের জন্য সেশনজটের দীর্ঘ সারিতে আটকে গিয়ে জীবনের মূল্যবান সময় হারিয়ে ফেলছে শিক্ষার্থীরা। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি, যা শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে। এগুলোর মধ্যে আধুনিক ও আপডেটেড পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা চালু করা, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ, নিয়মিত শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম, গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ, অত্যাধুনিক ল্যাব ও রিসার্চ সেন্টার স্থাপন, উন্নত লাইব্রেরি, ইন্টারনেট ও মাল্টিমিডিয়া সুবিধা সংযুক্ত ক্লাসরুম, স্কলারশিপ, ইন্টার্নশিপ ও ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেবা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একাডেমিক পরিবেশ নিশ্চিত করা উল্লেখযোগ্য। সুতরাং, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান উন্নয়ন কেবল অবকাঠামো বা পরীক্ষার ফলাফলের উন্নয়নে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর জন্য প্রয়োজন একটি সমন্বিত, দীর্ঘমেয়াদি ও পরিকল্পিত উদ্যোগ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, প্রশাসন ও নীতিনির্ধারক সবার যৌথ প্রচেষ্টাতেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্পন্ন ও আন্তর্জাতিক মানদ-ে উত্তীর্ণ হতে পারবে।
মোছা. শেফাতুন নেছা
শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।