আমাদের শরীরের সঠিক বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে এক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান হলো জিংক। চিকিৎসকদের মতে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জিংকসমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত না করলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
জিংকের উপকারিতা কী?
জিংক মানবদেহে প্রায় ৩০০ ধরনের এনজাইম সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। এটি ক্ষত দ্রুত সারাতে, ঠান্ডা-কাশি থেকে রক্ষা করতে, রুচি ও ঘ্রাণ অনুভব বজায় রাখতে, এমনকি শিশুদের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জিংকের অভাবে ত্বকে র্যাশ, চুল পড়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া ও মানসিক দুর্বলতাও দেখা দিতে পারে।
জিংকের প্রাকৃতিক উৎস
জিংক প্রধানত প্রাণিজ উৎসে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। তবে কিছু উদ্ভিজ্জ খাদ্যেও এর উপস্থিতি রয়েছে।
প্রাণিজ উৎস:
*গরু ও খাসির মাংস
*ডিম
*সামুদ্রিক মাছ, বিশেষ করে স্যামন ও সার্ডিন
*দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য
*শামুক ও কাঁকড়া
উদ্ভিজ্জ উৎস:
*বাদাম (বিশেষ করে কাজু ও আমন্ড)
*বীজ (তিল, সূর্যমুখী বীজ, কুমড়ার বীজ)
*ডাল ও মুগডাল
*ওটস ও গোটা শস্য
*মাশরুম ও পালং শাক
দৈনিক চাহিদা কতটুকু?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য দৈনিক ১১ মি.গ্রা. এবং নারীদের জন্য ৮ মি.গ্রা. জিংক গ্রহণ যথেষ্ট। তবে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।
খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভিটামিন সি ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে জিংক গ্রহণ করলে তা শরীরে ভালোভাবে শোষিত হয়। তবে অতিরিক্ত জিংক গ্রহণ করাও ক্ষতিকর হতে পারে—এতে বমি ভাব, পেটের সমস্যা এবং ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
জিংক আমাদের শরীরের একান্ত প্রয়োজনীয় একটি খনিজ উপাদান। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে সহজেই এই উপাদানটি আমরা পেতে পারি। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিনের খাবারে জিংকসমৃদ্ধ উপাদান নিশ্চিত করা জরুরি।