দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ও সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে বিএনপি ব্যর্থ হওয়ায় আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থ দফায় সরকার গঠন করেছে। তবে এত মামলা, গ্রেপ্তার, চাপ ও প্রলোভনের পরও দল ভাঙেনি এবং মানুষ ভোটে সেভাবে সাড়া দেয়নি; এটাকে সফলতা হিসেবে দেখছেন দলটির অনেকে। টানা ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে রয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে এক যুগেরও বেশি সময় কেটেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে। গত দেড় বছর দলটি ছিল সরকার হটানোর ‘এক দফার’ নানা কর্মসূচিতে। নির্বাচনে আগে আন্দোলনে কিছুটা ছন্দপতন ঘটলেও এবার আর সেই ভুল করতে চাইছে না দলগুলো। তাই তারা আন্দোলনের নতুন রোডম্যাপ তৈরি করে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে চায়। আবারো রাজপথের কর্মসূচিতে ফিরতে চাইছেন নেতারা। আন্দোলনকে একটি কাঠামোগত রূপ দেয়ার চিন্তা মাথায় রেখে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। তবে এখন আপাতত যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলো দলগতভাবে কর্মসূচি পালন করবে। পরে যুগপৎভাবে কর্মসূচি দেয়া হবে।

জানা যায়, দীর্ঘ পাঁচ মাস পর ঢাকায় দুই সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এরমধ্যে একটি আগামী মে দিবসে বড় শোডাউনের শ্রমিক সমাবেশ করার পরিকল্পনা করছে দলটির হাইকমান্ড। এজন্য প্রস্তুতিও গ্রহণ করছেন তারা। ঘরোয়া বৈঠক এবং মতবিনিময় সভাসহ প্রস্তুতি সভাও করছেন নেতারা। আর আগামী মাসের যেকোনো সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র উদ্যোগে রাজধানীতে সমাবেশ করবে দলটি।

এ ছাড়া আগামী ৩০শে মে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেডিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মাস জুড়ে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানা গেছে।

এছাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে নতুন কর্মসূচির কথাও ভাবছে বিএনপি। কর্মসূচির মধ্যে জনসাধারণকে ভোট বর্জনের আহ্বানে লিফলেট বিতরণ এবং পথসভাসহ বিভিন্ন কর্মিসভা কর্মসূচি দেয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন দলটির নেতারা। পাশাপাশি নির্বাচনে দলের যেসব নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাদের কাউন্সেলিং করানো হবে। খুব শিগগিরই এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠক করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তারেক রহমান নেতাদের মতামত জানতে চান। পাশাপাশি তিনি আরও জানতে চান যে, বিএনপি কী শুধু ভোট বর্জন করবে, না কী নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথেও থাকবে। এই প্রসঙ্গে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা কর্মসূচি দেয়ার পক্ষে তাদের মতামত দেন।

সূত্রটি আরও জানায়, বৈঠকে উপস্থিত সব নেতাই কর্মসূচিতে যাওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তবে এখন কঠোর কোনো কর্মসূচি নয়। নেতারা জনসাধারণকে ভোট বর্জনের আহ্বানে লিফলেট বিতরণ এবং পথসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির দেয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অনেকে ভাবতে পারে বিএনপি ও বিরোধী দলের আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা সংগ্রাম আরও বেগবান করবো। আর আন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারের পরাজয় হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, বিএনপিকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। বিএনপি পিছু হটেনি, আন্দোলনে শক্তি সঞ্চার হয়েছে। আন্দোলনের মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। জয় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের হবেই। প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। যত মামলা, অত্যাচার নির্যাতন করেন লাভ হবে না।

এদিকে এ সময়ে যুগপৎ আন্দোলনের বিভিন্ন দল ও জোটগুলোও পৃথক পৃথকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে। এরমধ্যে আগামী ২৯শে এপ্রিল থেকে ৮ই জুন পর্যন্ত বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। এই কর্মসূচি শেষে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে সমাবেশ ও সভা করার চিন্তা করছে তারা। এরপরে বিভিন্ন জনসম্পৃক্তমূলক ইস্যুতে ঢাকায় কর্মসূচি করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। আর যৌথভাবে কর্মসূচি নির্ধারণে বিএনপি’র সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের দল ও জোটগুলোর অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হচ্ছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আন্দোলন নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। নতুন পর্যায়ের আন্দোলনের সূচনা করা হবে। এখন দলগতভাবে কর্মসূচি চলছে। সামনে এই কর্মসূচিকে আরও জোরদার করা হবে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews