চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১১৩ জনের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বেশিরভাগ রোগী মৃত্যুর আগে শকড্রোম, অঙ্গ বিকল বা জটিল উপসর্গে ভুগছিলেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী মারা গেছেন ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের কারণে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর ৫৬ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে (ডিএসএস)। এছাড়া ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জটিল উপসর্গে (ইডিএস)।

প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, ডেঙ্গু হেমোরেজিক সিনড্রোমে (ডিএইচএস) একজনের মৃত্যু হয়েছে। ডিএসএস ও বিইডিএসের কারণে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের, অঙ্গ বিকলজনিত জটিলতা ও বহু অঙ্গ বিকলের কারণে ৫ জনের, হৃদযন্ত্রের শকে আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগে মারা গেছেন ৬ জন।

এ তথ্য থেকে বোঝা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যারা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা না পেয়ে জটিল অবস্থায় পৌঁছেছেন, তাদের মধ্যেই মৃত্যুহার বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী ভর্তি হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে; যা চিকিৎসা দেরির ইঙ্গিত দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ডেঙ্গুতে যারা মারা গেছেন, তাদের অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘রোগীরা অনেক সময় দেরিতে হাসপাতালে আসছেন। খারাপ অবস্থায় ভর্তি হচ্ছেন। ফলে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ কমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সবার সচেতন হওয়া জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে বাড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যুর ঝুঁকি। 

মহাপরিচালক বলেন, রোগ চিহ্নিত হওয়ার শুরুতেই চিকিৎসা শুরু না হলে, অনেক সময় রোগ দ্রুত জটিল আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শক, রক্তক্ষরণ ও অঙ্গ বিকলের মতো জটিলতা দেখা দিলে রোগীকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, গত কয়েক দিনে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এমনটা দেখা যায়। গত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুনে মারা যান ৮ জন, জুলাইয়ে ১৪ জন, আগস্টে ৩০ জন এবং সেপ্টেম্বরে মারা যান ৮৭ জন। সে বছরের জুনে রোগী ভর্তি হয়েছিলেন ৭৯৮ জন, জুলাইয়ে ২ হাজার ৬৬৯, আগস্টে ৬ হাজার ৫২১ এবং সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৮৯৭ জন। এ পরিসংখ্যান দেখে বলা যায়, সেপ্টেম্বরেই সবচেয়ে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যুও ঘটেছে বেশি।

তিনি বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে এবং আমরা যে ব্যবস্থাপনা নিচ্ছি, সেটি আপনাদের সামনে তুলে ধরার মূল উদ্দেশ্য হলো, জনগণকে সচেতন এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করা। কারণ যত ব্যবস্থাপনাই নেওয়া হোক না কেন, জনগণ যদি সচেতন না হয়, তাহলে ডেঙ্গুর মতো সংক্রামক রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুব কঠিন।

সাংবাদিকেদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই রোগ যদি শুরুতেই চিহ্নিত করা না যায়, সময়মতো চিকিৎসা শুরু না হয়, তাহলে মৃত্যুর ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। আপনারা যেভাবে অতীতে আমাদের সহযোগিতা করেছেন, আশা করি, মানুষের সচেতনতা বাড়াতে ভবিষ্যতেও আমাদের পাশে থাকবেন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews